আজ থেকে প্রায় ২০০ বছোর আগের ঘটনা। ফরাসী বিপ্লবের সময়। ৩ ব্যক্তিকে কোন এক কারণে দোষি সাবস্ত্য করা হয়েছে। তাদের টেনে আনা হয়েছে ফ্রান্সের এক মশানে। আজ তাদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
৩ ব্যক্তির প্রথমজন একজন ঘোর ঈস্বরে বিস্বাসী পুরোহিত। দ্বিতীয় ব্যক্তি একজন আইনজীবী। শেষের জন একজন গবেষক, থিয়োরিটিকাল ফিজিসিস্ট। তাদের মাথাগুলো হেঁট করে, ঝুকিয়ে রাখা হয়েছে বলিকাঠের উপর। মাথার উপর ঝুলছে যমদেবতা। হ্যা, মৃত্যুর খাড়া। দড়ি দিয়ে আটকানো। শুধু একটা আদেশের অপেক্ষা। আদেশ দেবার সাথে সাথে সেই খাড়ার উপরের দড়ি খুলে দেওয়া হবে। সেই ধারালো লৌহ ফলকটি নেমে আসবে অপরাধীদের মাথার উপর। শরীর থেকে ছিন্ন হয়ে যাবে তাদের মস্তক।
বধ্যভূমিতে পরে গেছে মানুষের হৈহট্যগোল। আজকে সবাই মিলে এক জায়গায় জড়ো হয়েছে, আজ জনোগণ সচক্ষে দেখতে এসেছে ভয়াবহ এই মৃত্যুদৃশ্য।
যথারীতি, দোষীদেরকে তাদের জীবনের অন্তিম মুহূর্তে শেষ বারের মতোন কিছু বলার থাকলে,বলার জন্য সুযোগ দেওয়া হলো।
প্রথমে আমাদের আস্তিক পুরোহিতকে সুযোগ দেওয়া হলো-
সে বলল- " হ্যা, আমি একজন ভক্ত। আমি জানি, আমি শুধু জানিই না, আমার নিশ্চিত বিশ্বাস, স্বয়ং ঈস্বর আমাকে আজকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করবে্নই"
উপর থেকে খাড়া নেমে এল নীচের দিকে। কিন্তু আশ্চর্য!! এক অলৌকিক ঘটনা ঘটে গেল। খাড়াটি সত্য সত্যি নীচে নেমে এলো তো বটে, কিন্তু পুরোহিতের গলার কাছে এসে, কেমন করে জানি থেমে গেল। জনোগন বিস্মিত, এবং ভীতও। পুরোহিতেকে আর সে যাত্রায় বলি চড়ানো হোলো না।
এবার সেই আইনজীবীর পালা। তাকেও একই সুযোগ দেওয়াতে সে বলল- "নাহ, আমি জানি আমি মরব না। যিনি সকোল বিচারকের ঊর্দ্ধে , ইহোজগতের সমস্ত ন্যায়-অন্যায়ের হিসাব-নিকাশ বিচার হয় যার আদালতে, সেই মহান সত্বা সাক্ষি আছেন, মৃত্যু আমার গর্দন আজকে কিছুতেই স্পর্শ করতে পারবে না!!।"
আলৌকিকতা আবার পুনরাবৃত্তি করল, পুরুতমশাইয়ের মতোনই একইভাবে, উকিলবাবুটিরও এ যাত্রায় আর মরণ হলো না। তাকেও মুক্ত করে দেওয়া হলো।
এবার শুধু বাকী সেই পদার্থবিদ। তাকে সুযোগ দেওয়া হলে, সেই মুখচোরা বিজ্ঞানী যাহা বলেছিলেন, তা এইরকোম-
" হ্যা, আমারও কিছু বলার ছিল বটে!! আমি ঈস্বরের ব্যপারে জানি খুব অল্পই, হাহ্, তার চেয়েও কম জানি আইনের ব্যপারে। কিন্তু আপনারা যদি একটু কষ্ট করে নিজেদের মাথাটি তুলে, একটু খেয়াল করেন, তাহলে দেখতে পাবেন, খাড়াটি দড়ি দিয়ে ঝুলছে বটে, কিন্তু দড়ির অপর অংশটা আটকানো একটা কপিকল( pulley) এর সাথে। যেখান থেকে দড়িটা পেঁচিয়ে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে- অন্য কোথাও, হয়তো বাইরে"।
এর পরের অংশে আর যাব না। গল্পটার বাস্তবতা নিয়েও সিওর না। আজকের দিনে এই গল্পটা ডঃ মিশিও কাকু , যিনি নিজেও একজন বিশ্ব বরেণ্য থিয়োরিটিকাল ফিজিসিস্ট, একটা উদাহরণ টানতে গিয়ে, এক বৈজ্ঞানীক সন্মেলনে গল্পটা পাড়েন। তার গল্পটা শোনানোর পিছনে উদ্দ্যেশ্য ছিল, এইটা বলা-
কখোনো কখোনো বিজ্ঞানীদেরও কোন জটিল পরিস্থতিতে পরলে, কিছু কিছু সত্য ধৈর্যের সাথে চেপে যাওয়াই ভালো!!
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত