আজ থাই এর ফ্লাইটে ঢাকা এয়ারপোর্টে নেমে দেখি প্লেনের মতই এয়ারপোর্টের অবস্থা শুনসান। ১৫ তারিখ এর ভয়ে আমরাও ডেট চেঞ্জ করতে চেয়েছিলাম। কিন্ত ওই দিকে হোটেল ভাড়া এডভান্স দেয়া ১৪ তারিখ পর্যন্ত, তার উপর টিকিট বদলাতে ৪৮ হাজার টাকা দেয়া লাগবে শুনে ভাবলাম যা থাকে কপালে। থাই এর বিশাল ট্রিপল সেভেন মাত্র ৪০ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হলো। আশংকা ভরা মন নিয়ে ফিরছি। কেবিন ক্রুরা তাদের দায়িত্বগুলো যন্ত্রের মত অতিদ্রুত সারলো মানে খানাপিনা আবার সব গুটিয়ে ফেলা।
একদম সময় মত ঢাকার শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করলো প্লেনটি। তবে টেক অফ আর ল্যান্ডিংএর আগে দুবারই অনেকটা সময় পর্যন্ত কেমন যেন একটা বিজাতীয় শব্দ হচ্ছিল প্লেনটি থেকে। অনেকক্ষন খেয়াল করার পর বুঝলাম নৌকা বাওয়ার সময় বৈঠায় যেমন একটা শব্দ হয় ঠিক তেমনটি। আমি যারপরনাই বিস্মিত। প্লেনের ভেতরেও নৌকার আওয়াজ !!
এয়ারপোর্টের যাবতীয় কর্মকাণ্ডও অতি দ্রুত সম্পন্ন হলো, যেমন ইমিগ্রেশন আর ৪০ জন মানুষের লাগেজই বা আর কত? বেশি সময় লাগলো না।
কিন্ত গ্রীন চ্যানেল দিয়ে বের হতেই দেখি দরজার কাছে কিছু যুবক ঠেলাঠেলি করছে মানে ইতস্তত। তাদের হাতে ফুলের স্টিক। দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভরা মন নিয়ে তারা আমাদের দুজনকে দুটো স্টিক দিল। আরও দু একজনকেও দিচ্ছিলো। ভাবলাম দেশ আমাদের দ্বিতীয় বারের মত স্বাধীন হয়েছে তার জন্য বোধ হয় ফুলেল শুভেচছা ।
পার্কিং থেকে বের হওয়ার মুখে দেখি বেশ একটা জটলা। কি ব্যাপার? জানালা দিয়ে তাকাতেই চোখে পরলো এক ভদ্রলোককে অনেক যুবক ঘিরে ধরে তার কর কমলে ফুলের তোড়া তুলে দিতে চেষ্টা করছে, তার গাড়ি অলরেডি ফুলে ফুলে ফুলময়। সে হাসি মুখে দু হাতে না না করছে।
আমাদের গাড়ি চালক বা দিকে গাড়ি ঘুরাতে ঘুরাতে বল্লো "আফা চিনেন্নাই! আমি না বলতেই সে বিস্মিত "কি কন! হ্যায় তো বিএনপির অমুক নেতা,আপনাগো লগে একই ফ্লাইটে আইছে "।
আমি ভাবতে লাগলাম এত বড় নেতা আমাদের সাথে আসলো একটুও টের পেলাম না আর সবচেয়ে বড় কথা তাকে আমি চিনতেও পারলাম্না। কি অবাক কান্ড! এরা প্রচুর টাকার মালিক, আমাদের মত ইকোনমি ক্লাসে আসে নি, বিজনেস ক্লাসে এসেছে তাই নজরে পরে নি।আর নজরে যখন পরেছে তখন ও তো চিনতে পারি নি। চেনা চেনা লাগছে কিন্ত ---মাথাটা নামাতেই হাতে ধরা ফুলের স্টিকের দিকে চোখ পরলো আর হাসি পেলো, সাথে দু:খও। এত এত ছেলে মেয়ে জীবন দিল তারপর ও কি এদের হাত থেকে আমাদের কি নিস্তার নেই!! এখন কি আবার আরেক দল!
ছবি আমার মোবাইলে তোলা সেই ছেলেদের দেয়া ফুল।