আজ দশ দিন আমার ছেলেটার সাথে কোন মাধ্যমেই কথা বলতে পারছি না। নরমাল ফোনে একবার শুধু ওর গলার আওয়াজ শুনলাম "আম্মু আম্মু কেমন আছো"? ভালো আছি, ভালো আছি। কিন্ত আমার এই উত্তর সে শুনতে পারছিল না। আজ খুব আশা করেছিলাম বিকেল তিনটায় অন্তত হোয়াটসঅ্যাপটা ওপেন হবে। কিন্তু না হলো না।
অনেক মানুষের কাছে মহার্ঘ্য যে আমেরিকার গ্রীন কার্ড তাও আমি নিয়ে আসি নি, কারণ তার জন্য ছয় সপ্তাহ থাকার পর শুনলাম আমাকে আরও এক সপ্তাহ আমেরিকায় থাকতে হবে। আমার আত্নীয় বন্ধুদের রাজকীয় সমাদর, আপ্যায়ন আর তাদের অনুরোধ সাথে মান অভিমান সব ঝেড়ে ফেলে দিয়ে আমি চলে এসেছি আমার নিজ মাতৃভূমিতে, আমার সোনার বাংলায়।
কিন্ত গত কয়েকদিন আমি দেখলাম আমার বাংলাদেশ যেন এক নরককুন্ড। আমার সন্তানের বয়সীরাই রাজপথে বন্দুকের মুখোমুখি। অন্ধকার কালো ধোয়ায় আচ্ছন্ন আমার বাসার চারিদিক, সেই সাথে সাজোয়া গাড়ি থেকে নানা রকম আগ্নেয়াস্ত্র প্রচন্ড শব্দে ছেলেপুলেদের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে এক নাগাড়ে। আমি শীততাপনিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে সেই ছেলে মেয়েগুলোর কথা ভাবি, ভাবি সেই সব ছেলেপুলেদের কথা যারা মাথার উপর গনগনে সুর্যকে নিয়ে ধুলো বালি আর কংকরময় পথে খালি পায়ে দাড়িয়ে নিজেদের অধিকারের জন্য লড়ছে, বুক পেতে দিচ্ছে বন্দুকের মুখে। কি সাহসী বাচ্চাগুলো।
আচ্ছা আমি কি ভাবে আমার ছেলের সাথে একটু কথা বলতে পারি কেউ কি জানাবেন?