অনেক বছর আগে যখন আমি কিশোরী, স্কুলে পড়ি তখন আমার খালার বাসা চিটাগাং এর মেহেদীবাগে বেড়াতে গিয়েছিলাম কদিনের জন্য। খালার বাড়ির ছাদের উপর বসে একটা তারা খচিত আকাশ দেখেছিলাম। আমার মনে হচ্ছিল আকাশের হাম হয়েছে। এত ঘন যে আকাশ দেখা যায় না। সেই পুঞ্জীভূত তারাদের মাঝে খুজে বের করেছিলাম কালপুরুষ, সপ্তর্ষি মন্ডল, গ্রেট বিয়ারদের। আমি গুনগুন করে সেই তারাদের দিকে তাকিয়ে গেয়েছিলাম "তুমি কি কেবলই ছবি! শুধু পটে লেখা , ঐযে সুদুর নীহারিকা যারা করে আছে ভীড় "---- কেন জানি জর্জদার (দেবব্রত বিশ্বাস) গাওয়া এই গানটাই আমার মনে পরছিল তখন।
এখন ছাদে উঠি, বৃষ্টি হলে আকাশতো পরিস্কারই থাকে তারপর ও কেন সেই আকাশভরা তারকারাশি আর দেখি না। অনেক দূরে দূরে এক একটা তারা নি:স্বংগ অবস্থায় স্থির। কি হলো ওদের সেই জমাট বাধা তারাগুলোর? ওরা কি অন্য কোথাও চলে গেছে!
গতকাল বিকাল থেকে আমার স্বামীর জ্বর। ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগে হলে গুরুত্ব দিতাম না। কিন্ত এখন এই ৩৮ ই আমার মাথা উনপঞ্চাশ। দুইটা নাপা খাওয়ালাম। তারপর বললাম গোসল করো। জ্বর নামলো ৩৭ এ। ড্রাইভার বাসায় চলে গিয়েছিল তাকে ডেকে আনলাম, কখন হাসপাতালে যেতে হয় কে জানে। আত্নীয় স্বজনের মধ্যে প্রচুর ডাক্তার। তাদের সাথে এই বিষয়ে ফোনে গুরুত্বপূর্ণ আলাপ আলোচনা হলো। কি হলে কি করতে হবে ইত্যাদি।
আমার স্বামী মিন মিন করে জানালো সে অসুস্থ হলে ইউনাইটেড হসপিটালে ভর্তি হতে হবে কারণ এটা তাদের জন্য অফিসিয়ালি এনলিস্টেড। শুনে রাগে আমার গা জ্বলে গেল।কেন জানি এই হসপিটালের উপর আমার ভক্তি নেই। আমার পরিচিত যতজন ভর্তি হয়েছে তারা কেউ বেচে ফিরে নি।
অতএব আমি সাফ জানিয়ে দিলাম "অত ফুটানির দরকার নাই, সোজা কুর্মিটোলা ভর্তি হবে কারন ওইখানে লোকজন আছে"। আমার জাটাকে আসগর আলীতে ভর্তি না করে প্রথম থেকে কোভিডের চিকিৎসা দেয়া কুর্মিটোলায় ভর্তি করলে মনে হয় বাচতো। কারন আমার পরিচিত একজন ষাটোর্ধ ব্যাক্তি যার হেন কোন রোগ ছিল না তাকে আইসিউতে পর্যন্ত যেতে হয়েছিল কোভিডে। সেও বেচে ফিরেছে।
যাক সারারাত জেগে জীবন তেজপাতা করলাম। এখন আলহামদুলিল্লাহ তার জ্বর নেই, যা আশংকা করছিলাম তা বোধ হয় না। ড্রাইভারকে ছুটি দিলাম। সে রেস্ট নিক। আর উনি তো সকাল থেকে নাক ডাকিয়ে ঘুমাচ্ছে আর বেচারা আমি! আমি বুয়া চৌকিদারি করছি
সিয়াম প্যারাগন
গতকাল ব্যাংককের হৃদয়ে ঠাই নেয়া নামকরা শপিং মল সিয়াম প্যারাগনে এক চৌদ্দ বছরের কিশোর বেপরোয়া গুলি করে দুজন মতান্তরে তিন জনকে হত্যা করেছে। পুলিশ তাকে অস্ত্র সহ গ্রেফতার করেছে। সে নাকি তার ভেতর থেকে আদেশ পেয়েছিল গুলি করার। এতে একজন চীনা মহিলা পর্যটক যিনি দুজন যমজ মেয়েকে নিয়ে এসেছিল শপিং করতে সে মৃত্যবরণ করেন, আরেকজন হচ্ছে মিয়ানমারের, তবে মিয়ানমারের মেয়েটি অবশ্যই বিক্রয় কর্মী হবে। কারণ মিয়ানমারের গরীব ঘরের ছেলে মেয়েরাই দেশ থেকে পালিয়ে থাইল্যান্ডে এসে আশ্রয় নেয় আর এই ছোট খাটো কাজগুলো তারাই করে থাকে।
আজ সিয়াম প্যারাগনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা এসে দু হাত জোড় করে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে শোক প্রকাশ করেছেন। নতুন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী আহত নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। মানুষ দুনিয়া জুড়ে এখন ভীত সন্ত্রস্ত। কোথাও শান্তি নেই।
এই মলে আমি কতবার গিয়েছি। সামনে যখন যাবো তখন গা ছম ছম করবে বৈকি।
ছবি নেট।