রাহাত্তারপোল থেকে রিক্সায় করে ফিরছিলাম,সাথে ফেসবুক।
গণি বেকারীর মোড়ে এসে দেখি আমাদের নাস্তা খাওয়ার অন্যতম স্থল "মিসকিন শাহ ঝাল বিতান" এ আগুন লাগছে। গ্যাস সিলিন্ডার লিক করে। সিলিন্ডারটাকে দোকানের বাইরে আনলেও ভিতরে আগুন দেখে আশেপাশের সবাই মাশাআল্লাহ নিরাপদ দূরত্বে। সবার ভয় যেকোন মূহুর্তে সিলিন্ডার ফাটবে। তাই অধীর আগ্রহে দেখছে।
আগুন দেখলে আমার কি হয় জানি না। দৌড়ে চলে যাই। যথারীতি কখন যে সিলিন্ডারের কাছে চলে গেছি বলতে পারবো না। সবাই সতর্ক করতে শুরু করতেই আমিও পালটা গরম। শেষে কে একজন পাশের পেট্রোল পাম্প থেকে extinguisher আনতেই TICI এর ট্রেনিং ঝেড়ে ফেললাম। অতঃপর আগুন নিয়ন্ত্রণে।
এই সুযোগে তাই সবাইকে একটু জ্ঞান দেই। যারা বাসাবাড়ি বা দোকানে গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করেন,তারা সবসময় হাতের কাছে চটের বস্তা রাখবেন। আর একটা বালতি বা ড্রামে পানি। যখনই সিলিন্ডার লিক করে আগুন লাগবে,পানি না ছুড়ে চটের বস্তাটাকে ভিজিয়ে (যেন টপটপ করে পানি ঝরে) সিলিন্ডারের মুখ ঢেকে দিবেন। মূহুর্তেই আগুন নিভে যাবে। এরপর না হয় সারা ঘরের আগুন নিভাতে পানি দিন।
মনে রাখবেন,সিলিন্ডারের আগুন পানি বা বালু ব্যবহারে নিভবে না। আর চটের বস্তার এই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র আগুন নিভবে কিন্তু গ্যাস লিক হওয়া বন্ধ হবে না। তাই আগুন নেভানোর সাথে সাথেই সিলিন্ডারটাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিবেন। আগুন দেখলেই ভয় পাবেন না। হ্যাঁ,শরীরের ৪০% পুড়ে গেলে মানুষ বাঁচে না। তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আগুন নেভাতে পারবেন ততই ভাল। আর গ্যাসের সিলিন্ডারের ক্ষেত্রে এটি বেশি প্রযোজ্য।
জীবনে অনেক বাড়িতে আগুন নিভাতে ছুটে গেছি। বাড়ির সামনের হিন্দু পাড়া,গ্রামের পশ্চিম পাড়া,দাইয়্যা পাড়া,এমনকি পাশের গ্রাম মোহাম্মদনগরেও।
জীবনের অনেকগুলো কষ্টের স্মৃতির একটি হলো নিজের ঘরের আগুন নেভানোর জন্য কিছুই করতে পারি নাই। মাঝরাতে ঢাকায় বসে ফোনে শুনতে হয়েছিল ঘর পুড়ে যাওয়ার কথা।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:২৬