"রোজেলা টি"
"if you are cold, tea will warm you ,
if you are heated, it will cool you,
if you are depressed, it will cheer you
if you are excited, it will calm you"- উইলিয়াম গ্লাডস্টোন।
আয়ুর্বেদ মতে "চা পান করলে শরীরের জড়তা কাটে, সর্দি-কাশি ও জ্বর কমায়, একই সাথে যা বলবর্ধক ও কামোদ্দীপক।"
আবার চিনা ও জাপানিদের বিশ্বাস, চা হল দেবতাদের অমৃত, যা পানে মেলে অমরত্বের আস্বাদ। প্রসঙ্গত রবীন্দ্রনাথ এই চা পান অনুষ্ঠান সম্বন্ধে তার জাপান যাত্রীতে লিখেছিলেন, "জাপানিদের পক্ষে এটা ধর্মানুষ্ঠানের তুল্য, এ ওদের একটি জাতীয় সাধনা।"
ছোটো খাটো একজন চা -কফি খাদক হিসেবে অদ্যাবধি গোটা দশেক পোস্ট লিখেছি শুধু বিভিন্ন প্রকার চা নিয়েই। আজ লিখবো 'রোজেলা চা' নিয়ে। (ছিন্দ্রান্বেষীদের জন্য বলে রাখি, চা-কফি পান করাকে আমরা চলতি কথায় চা/কফি খাই বলি। যাদের সমস্যা তারা দূরে গিয়ে মরেন)!
অতি সহজলভ্য, অতি সাধারণ একটি গাছ - টক ঢ্যাড়স। শুধু নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে সবজিই না, মহা মূল্যবান ভেষজও বটে। ইংরেজি নাম- Rozelle, Roselle, Red sorrella, বৈজ্ঞানিক নাম Hibiscus sabdariffa Lin. (Malvaceae).
আমরা অনেকেই এই টক ঢ্যাড়স দিয়ে চাটনী, আঁচার বানাই এবং বানিজ্যিক ভাবে সংরক্ষিত জ্যাম জেলি আরো ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা যায়। দেশ বিদেশে বিখ্যাত "রোজেলা টি" নামে যে স্বাস্থকর পাণীয় খুবই প্রচলিত রয়েছে তা এই টক ঢ্যাড়সের পাতা-ফুল-ফল থেকেই তৈরী হয়। আদিবাসীরা প্রায় আবশ্যিকভাবে এ গাছের চাষ করেন এবং কচিপাতা থেকে শুরু করে এর ফুল, কচি ফল, বৃতি, বীজ সবই হয় এঁদের আহার্য।আদিবাসী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভাষায় টক ঢ্যাড়সকে ইপলি আরা, জেঙ্গা, কোটলে আরা, লাল কুদরুম, যুগি থেপা ইত্যাদি নামে ডাকে।
নার্সারি থেকে চারা কিনে আমার ছাদ বাগানে কয়েকটি চারা লাগিয়ে ছিলাম। সেই চারাগাছ এখন ফুলে ফলে শোভিত। গাছের মালিক আমি হলেও গাছের ফুল-ফল-পাতা বিল্ডিংয়ের সবার জন্য। সবাই স্বাদ নিচ্ছেন রোজেলা চা'য়ের।
রোজেলা টি তথা টক ঢ্যাঁড়স নিয়ে কিছু লেখার জন্য তথ্য তথ্য-উপাত্ত খুঁজে পেতে গুগলের সাহায্য নিয়ে এর আয়ুর্বেদ গুনাগুণ সম্পর্কে কিছু ধারণা পেলামঃ-ঔষধি হিসাবেও এটিকে এঁরা নানাভাবে ব্যবহার করেন।
"অনেকের জিভ-মুখের অভ্যন্তর ও দুই ঠোঁটের কোনের ঘায়ে ভোগেন- যা ভিটামিন বি-সিক্স ও ভিটামিন সি'র অভাবে হয়ে থাকে। এই ফলে ভিটামিন বি-সিক্স ও ভিটামিন সি প্রচুর। নিয়ম করে এই ফুল-ফল-পাতার রস পান করলে উপকার পাওয়া যায়।"
"আদিবাসীরা সামান্য নুনসহ এর পাতা (টাটকা অথবা শুকনো) ফোটানো পানি, কোষ্ঠকাঠিন্যে জোলাপের মত ব্যবহার করেন। বীজ সরষের তেলে ফুটিয়ে চর্মরোগে লাগান। সাঁওতাল সম্প্রদায়, হাড়ের ফ্রাকচারে এর পাতা বেটে নিয়মিত প্রলেপ লাগান। মূত্রকৃচ্ছতায় গোলমরিচ সহ পাতার রস খাওয়ানো হয়। বীজচূর্ণ কৃমির উপদ্রবে খাওয়ানো হয়।"
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:০৭