প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্য, চারদিকে সবুজ অরণ্য ও পাহারের পটভূমিতে অবস্থিত ইংরেজ কবরস্থান (যাকে ময়নামতি ওয়ার সেমিট্রি বলা হয়)। সেখানে শায়িত আছে নিহত সৈনিকরা। ১৯৪৪-৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কুমিল্লাতে যে সৈন্যরা সক্রিয়ভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে নিহত হয় তাদের স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে বৃটিশ সরকারের তত্বাবধানে গড়ে তোলা হয়েছে সমাধি স্থান। প্রকৃতির অপরূপ লীলাভূমিতে অবস্থিত এই কবরস্থানে প্রতিদিন প্রচুর পর্যটক আসে ঘুরতে। আবার অনেকে আসে যুদ্ধাহত সৈন্যদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে। শুধু দেশের নয় বিদেশ থেকেও অনেক নিহত সৈন্যদের আত্মীয়-স্বজনকরা তাদের সম্মান জানাতে আসে। কুমিল্লা জেলা শহরের পাশ ঘেঁষে অবস্থিত কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের পাশেই এই কবরস্থানটি। অপরূপ প্রকৃতির সৌন্দর্যভরা টিলার উপর এই কবরস্থানে মোট ৭৩৭টি সমাধি আছে। তার ভিতর পাহাড়ের উত্তরদিকে জাপানি সৈন্যদের আছে ২৪টি, পশ্চিম দিকে মুসলমানদের আছে ১৭২টি। বাকি ৫৪১টি আছে ইংরেজ সৈন্যদের।
এই কবরস্থানটি ঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা তদারকি করার জন্য প্রতিবছর ইংল্যান্ড থেকে টিম আসে দেখার জন্য। এই কবরস্থানটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৫ জন কর্মচারি রয়েছে। সব কর্মচারীদের বেতন বোনাস প্রদান করা হয় ঢাকাস্থ বৃটিশ দূতাবাস থেকে। ইদ্রিস মিঞা একজন কর্মচারি ৩৫ বছর ধরে এই কবরস্থানের রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। সম্পূর্ণ নিয়ম-শৃংখলার মধ্যে দিয়ে কবরস্থানটি পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিদিন এখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এবং বিদেশ থেকে অনেক পর্যটক আসে ঘুরতে। এখানে যারা আসে তারা শুধু কবরস্থানই নয় এখানকার প্রকৃতির সৌন্দর্য্যও তাদের আকর্ষণ করে। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আবার দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। সাপ্তাহিক কোন বন্ধ নেই।
অঃটঃ ঠিক একই প্রক্রিয়ায় চলে চট্টগ্রামস্থ্য ওয়ার সিমেট্রি। সেখানে ৭৩৫ জন দেশী বিদেশী সৈন্যদের কবর রয়েছে।
যেভাবে যেতে হবেঃ
ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কুমিল্লাগামী গেইটলক বাস ছাড়ে। প্রিন্স, প্রাইম, পিপলস, টিসা, উইনার ইত্যাদি। জনপ্রতি ভাড়া নিবে ১০০ টাকা করে। বাস থেকে হেঁটে যেতে ১০ মিনিট সময় লাগবে। অথবা রিকশায় ৫ টাকা ভাড়া দিয়ে যেতে পারবেন এ কবরস্থানে। মোট সময় ব্যয় হবে ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা। রাতে ফেরা যাবে। এছাড়া বিভিন্ন লোকাল বাস ছারে সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে কুমিল্লায় যেতে পারেন।
ওখান থেকে দেখতে যেতে পারেন কোটবাড়িস্থ্য বার্ড, ক্যাডেট কলেজ এবং ঐতিহাসিক বৌদ্ধ বিহার।