বেড়িয়ে আসুন বন্য বিরিশিরিঃ
আজ নভেম্বরের ১৪ তারিখ। শীত পরতে শুরু করেছে। এবার শীতে আপনার বেড়ানোর প্রগ্রাম কি হয়েছে? যদি না হয়ে থাকে তাহলে একটা প্রগ্রাম করে ফেলুন। সেই প্রগ্রামে খুব অল্প খরচে বেড়িয়ে আসুন বিরিশিরি থেকে। ঢাকা থেকে দূরত্ব কম হওয়ায় অল্প কদিনেই আপনার চমৎকার একটি বেড়ানোর অভিজ্ঞতা হবে। দূরের পাহাড় আর সোমেশ্বরী নদীর মোহময়ী রূপ সব মিলিয়ে ছিমছাম এ বিরিশিরিকে অনেকে বাংলাদেশের দার্জিলিং বলে আখ্যা দেয়। আর দেবেই বা না কেন? একটু মেঘ থাকলে ঠিক দার্জিলিং এর মতন আপনি বঞ্চিত হবেন দূরের নীল পাহাড়ের দৃশ্য থেকে। অবশ্য তখন পাহাড়ী নদী সোমেশ্বরীর রূপেই মুগ্ধ থাকবেন আপনি। আর দূরে আবছা নীল অবয়ব বুঝাবে আপনাকে পাহাড়ের উপস্থিতি। আর যদি মেঘলা দিন না হয় তবেই দেখবেন দূরের নীল পাহাড়ের শোভা। সময় হাতে নিয়ে গেলে আপনি বেরিয়ে আসতে পারেন চীনামাটির পাহাড়েও। দেখবেন পাহাড় কেটে নেয়া হচ্ছে এ খনিজ মাটি। আর কাটা সেসব পাহাড়ের গোলাপী, নীল- অপূর্ব রঙের সমাহার। এক টুকরো মাটি হাতে তুলে নিলে দেখা যাবে কত রঙের মিশ্রণ সেখানে! নিজের অজান্তেই মনে হবে, ঈশ্বর অনেক বড় শিল্পী।
এছাড়া পুটিমারী, রানিখং ইত্যাদি স্থান ও ঘুরে দেখার সময় পথে যেতে যেতে চোখে পড়বে, গারো ও হাজং আদীবাসিদের বর্ণিল জীবন ও ঝকঝকে ঘরবাড়ি। অত্যন্ত অতিথি প্রিয় সহজ-সরল এসব পাহাড়ী মানুষদের সাথে কথা বলেও আপনার ভালো লাগবে। তবে খেয়াল রাখবেন, সন্ধ্যার আগেই যেন ফিরে আসতে পারেন। কেননা এসব স্থানে থাকার ব্যবস্থা নেই আর রাতে পথে রিকশা চালানোও কষ্টকর। বিরিশিরি ভ্রমণে খেয়াল রাখবেন এ ভ্রমণ মূলত এ্যডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদেরই ভালো লাগবে। তার মূল কারণ যাতায়াতের অব্যবস্থা।
চীনামাটির পাহাড়ে, রানিখং বা পুটিমারীতে যেতে হলে আপনাকে প্রথমে সোমেশ্বরী পার হতে হবে। বর্ষার প্রমত্তা সোমেশ্বরী শীতে শীর্ণ হলেও বালুর পথ হেঁটে তারপর নৌকায় খেয়া পার। ওপারে নিয়ে ২-৩ ঘন্টার পথে পুটিমারী-বিজরাপুর রানিখং।
এবার তাহলে জেনে নিন যাওয়া আসার ব্যবস্থাঃ- ঢাকা থেকে বিরিশিরির সরাসরি বাস পাবেন আপনি মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে সরাসরি বিরিশিরি। বিরিশিরি যেহেতু এখনও টুরিস্ট স্পট হিসেবে পড়ে উঠেনি, তাই এখানে থাকার জন্যে তেমন কোন আবাসিক হোটেল নেই। থাকার জন্য রয়েছে উপজাতীয় কালচারাল একাডেমী। এখানে চমৎকার ও নিরাপদ থাকার পরিবেশ রয়েছে তবে এখানে থাকতে হলে আপনাকে ঢাকা থেকেই প্রয়োজনীয় বুকিং দিয়ে আসতে হবে। আর খাবারের জন্য আপনি পাশেই মানসম্মত হোটেল পাবেন।
জেনে নিলেন তো বিরিশিরির বেড়ানোর খবরাখবর! শীত থাকতে থাকতেই তাহলে বেরিয়ে পড়ুন চমৎকার এ অ্যাডভেঞ্চারে। কেননা বর্ষার প্রমত্তা সোমেশ্বরীর ঢল শুধু এ স্থানের যাতায়াত ব্যবস্থাই নয়, ভেঙ্গে দেয় মানুষের জীবনযাত্রাও। তাই এখনই ঘুরে দেখে আসুন স্নিগ্ধ স্রোতস্বীনি সোমেশ্বরী আর গা ঘেঁষা নীল পাহাড়ের রূপ।