When I saw the zeal in people’s hearts,
I made the effort to help them.
If I wrote out all the letters systematically,
with God’s help they could learn in one day.
I included the Bengali alphabet,
for the sake of those who know Bengali.
They can teach themselves using the Bengali letters,
though having a teacher would be helpful.
— Abdul Lotif. 1930. 'Pohela Kitab o Doikhura Rag', p14.
সিলেটি নাগরী বাংলা লিপির বিকল্প এক প্রকার লিপি। এক সময় প্রধানত সিলেট অঞ্চলে এটি প্রচলিত ছিল। তবে সিলেটের বাইরে কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা এবং আসামের কাছার ও করিমগঞ্জেও এর ব্যবহার ছিল। আরবি, কাইথি, বাংলা ও দেবনাগরী লিপির সংমিশ্রণে চতুর্দশ শতকের প্রথম দশকে এ লিপির উদ্ভব ঘটে। আরবি ও ফারসি ভাষার সঙ্গে সিলেটের স্থানীয় ভাষার সংমিশ্রণে যে মুসলমানি বাংলা ভাষার প্রচলন হয়, তার বাহন হিসেবে সিলেটি নাগরী ব্যবহূত হতো। সিলেটের তৎকালীন মুসলমান লেখকগণ বাংলার পরিবর্তে এই লিপিতেই ধর্মীয় বিষয়সমূহ চর্চায় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। হযরত শাহ জালালের (রা.) সমসাময়িক মুসলমান ধর্মপ্রচারকগণ এই লিপিতে ধর্মমত লিপিবদ্ধ করতেন বলেও জানা যায়। আহমদ হাসান দানীর মতে সিলেটে মুসলমান শাসনের শুরু থেকেই সিলেটি নাগরীর ব্যবহার চলে আসছে এবং আফগান মুদ্রায় এ লিপিমালার কয়েকটি লিপির ব্যবহার আছে। সিলেটি নাগরী ‘জালালাবাদী নাগরী’, ‘মুসলমানি নাগরী’ বা ‘ফুল নাগরী’ নামেও পরিচিত।
স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ মিলিয়ে সিলেটি নাগরীর বর্ণ মোট ৩২টি। স্বরবর্ণ ৫টি, যথা: A (আ), B (ই), C (উ), D (এ), E (ও)। ব্যঞ্জনবর্ণ ২৭টি, যথা: F (ক), G (খ), H (গ), I (ঘ), K (চ), L (ছ), M (জ), N (ঝ), O (ট), P (ঠ), Q (ড), R (ঢ), S (ত), T (থ), U (দ), V (ধ), W (ন), X (প), Y (ফ), Z (ব), a (ভ), b (ম), c (র), d (ল), e (ড়), f (শ), g (হ)। স্বরচিহ্ন ৬টি যথা: h (া-কার), i (--কার), k (ু-কার), ` (--কার), ``(--কার) এবং `h (vা-কার)। è (ল্ল), î (স্ত) ও WU (ন্দ) এই তিনটি যুক্তবর্ণের বহুল ব্যবহার হলেও আরও ১৭টি যুক্তবর্ণ রয়েছে।
সিলেটি নাগরী বর্ণমালার ৩২টি বর্ণের মধ্যে ই, ঘ, জ, ঠ, ড, ঢ, দ, ড় এই আটটি বাংলা বর্ণমালা থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। আ, ঝ, ধ, র, ল, হ এ ছয়টি সিলেটি নাগরীর নিজস্ব বর্ণ। উ, ব, ম, শ এই চারটি বর্ণ আফগান মুদ্রায় ব্যবহূত হয়। ক, খ, ফ, ও অক্ষরের ওপর আরবির প্রভাব আছে। উ, এ, গ, ঘ, চ, ট, ত, থ, ন, প, ফ, ব, ভ, ম এই চৌদ্দটি বর্ণের সঙ্গে দেবনাগরী ও কাইথি বর্ণের সাদৃশ্য আছে। আরবি-ফারসির অনুকরণে সিলেটি নাগরীতে অ-বর্ণ নেই। আরবি (ওয়াও) বর্ণের অনুকরণে ব-এর নিচে বিন্দু দিয়ে ও-কে গ্রহণ করা হয়েছে। সিলেটি নাগরীর ক, খ ও ফ-এর উচ্চারণ আরবি (কাফ), (খে) ও (ফে)-এর মতো। এগুলি সিলেটের আঞ্চলিক উচ্চারণের সমতা রক্ষা করছে।
সিলেটি নাগরীতে দেবনাগরী ও আরবি প্রভাবজাত একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো স্বরবর্ণের চিহ্নগুলি ব্যঞ্জনবর্ণের পরে বসে। --কার ও ী-কারের জন্য একটি মাত্র চিহ্ন সংশ্লিষ্ট বর্ণের ডানদিকে লেখা হয়, যা দেখতে অনেকটা উল্টা --কারের মতো। --কারের জন্য আরবি যবর ও দেবনাগরী --কারের ন্যায় অক্ষরের মাত্রার ওপর ডান থেকে বামে হেলানো একটি চিহ্ন (`) এবং --কারের জন্য দুটি চিহ্ন (``) ব্যবহূত হয়। সিলেটি নাগরীরত্যে-ফলা, ্র-ফলা ও রেফ (র্)-এর ব্যবহার না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে বর্ণের দ্বিত্ব প্রয়োগ লক্ষ করা যায়।
সিলেটে শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) কর্তৃক হিন্দু নবজাগরণের সময় ব্যাপকভাবে দেবনাগরী লিপিতে সংস্কৃত চর্চা শুরু হলে মুসলমানরাও তাদের নবোদ্ভাবিত সিলেটি নাগরীতে পুস্তক রচনা শুরু করে। ১৮৬০-৭০ খ্রিস্টাব্দের দিকে সিলেটি নাগরী ছাপাখানা স্থাপনের পর থেকে এর প্রসার শুরু হয়। ‘সিলেট ইসলামিয়া ছাপাখানা’ এরূপ প্রথম প্রেস এবং মৌলবি আবদুল করিম টাইপ নির্মাণ ও প্রেস স্থাপনের প্রথম উদ্যোক্তা। পরে প্রতিষ্ঠিত ‘সিলেট শারদা প্রিন্টিং প্রেস’, কলকাতার ‘শিয়ালদহ হামিদী প্রেস’ ও গার্ডেনার লেনস্থ ‘জেনারেল প্রিন্টিং ওয়ার্কস’ থেকেও এ লিপিতে পুথিপত্র প্রকাশিত হতে থাকে। সিলেটী নাগরীর পহেলা কেতাব এবং সিলেটী নাগরী লিখা নামক দুটি গ্রন্থ প্রকাশের মাধ্যমে এ লিপির ব্যবহার বৃদ্ধি পায়।
সিলেটি নাগরীতে রচিত পুথির ভাষা এবং দোভাষী পুথির ভাষা অভিন্ন। এতে তৎসম শব্দের ব্যবহার নেই বললেই চলে; যুক্তবর্ণের ব্যবহারও কম। আরবি-ফারসি ও হিন্দি-উর্দুর প্রচুর শব্দ সিলেটি নাগরীতে লিখিত পুথিতে প্রবেশ করেছে। দোভাষী পুথির অনুকরণে সিলেটি নাগরীর পুথির পত্রবিন্যাসও ডান থেকে বামে খরোষ্ঠি পদ্ধতিতে করা হতো।
সিলেটি নাগরীতে লিখিত এযাবৎ প্রাপ্ত সর্বপ্রাচীন গ্রন্থ হচ্ছে সাধক কবি গোলাম হুছনের তালিব হুছন (১৫৪৯)। পরে ফাজিল নাসির মোহাম্মদ রাগনামা (১৭২৭), সৈয়দ শাহ নূর (১৭৩০-১৮৫৪) নূর নছিহত (১৮১৯), রাগনূর, সাতকন্যার বাখান, শাহ হুছন আলম (১৭৫০-১৮৫০) ভেদসার, শীতালাং শাহ (মৃত্যু. ১৮০০) মুশকিল তরান, হাসর তরান, রাগবাউল, কেয়ামতনামা, শীতালাঙ্গী রাগ, নছিম আলী (১৮১৩-১৯২০) হরুফুল খাছলাত (১৮৭৫), মুন্সী মোহাম্মদ সাদেক আলী হালতুন্নবী (১৮৫৫), মহববতনামা, হাসর মিছিল, রদ্দেকুফুর ইত্যাতি গ্রন্থ রচনা করেন। আবদুল করিম রচিত কড়িনামা, ছদছী মছলা, সোনাভানের পুঁথি খুবই জনপ্রিয় ছিল। এযাবৎ প্রাপ্ত তথ্যে ষাটজন লেখকের মুদ্রিত ও পান্ডুলিপি মিলিয়ে ১৫০খানা গ্রন্থের সন্ধান পাওয়া গেছে। লেখকের নামবিহীন জনপ্রিয় পুথিগুলির মধ্যে হরিণনামা, হুশিয়ারনামা, সফাতুন্নবী, আবু সামা, নূর নাজাত, পেঁচার গল্প ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ষোড়শ শতকের শেষ এবং সপ্তদশ শতকের প্রথম দশকের আফগান মুদ্রায় সিলেটি নাগরীর ব্যবহার দেখা যায়। সিলেট ডিস্ট্রিক্ট মহাফেজখানা এবং মৌলভীবাজার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সিলেটি নাগরীতে লিখিত কয়েকটি দলিল সংরক্ষিত আছে। (মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম)
নামকরণ:
নাগরী লিপি, সিলেটি নাগরী ছাড়াও জালালাবাদী নাগরী, ফুল নাগরী, মুসলমানী নাগরী, মোহাম্মদী নাগরী নামে পরিচিত ছিল। তবে যে নামে পরিচিতি থাকুক না কেন নামের সাথে 'নাগরী' শব্দটি যুক্ত ছিলই।
উদ্ভব:
এই লিপির উৎস সম্পর্কে পরস্পর-বিরোধী বিভিন্ন ধারণামূলক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। সাধারণ ধারণা হলো সিলেটের মুসলমানরাই এই লিপির উদ্ভাবক, তবে তুলনামূলক নিচু জাতের লোকেরা এই লিপির চর্চা করতেন। আবার ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় প্রমুখের মতে, বিখ্যাত ধর্মীয়-পরিব্রাজক জনাব শাহ জালাল [রহ.] ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতাব্দিতে যখন সিলেট আগমন করেন, তিনিই এই লিপি সাথে করে নিয়ে এসেছিলেন। নাগরী লিপিতে রচিত বিপুল সংখ্যক এবং সিংহভাগ সাহিত্যকর্মই সুফিবাদ অনুসরণ করে বলে এই ধারণা অমূলক মনে হয় না। অন্যদিকে ড. আহমদ হাসান দানীর মতে, আফগান শাসনের সময়, অর্থাৎ আফগানরা যখন সিলেটে অবস্থান করতেন, ঐ সময়ই তাঁদের দ্বারা এই লিপির উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে। এই মতকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয় আফগান মুদ্রায় উল্লেখিত লিপি, যার সাথে সিলেটি নাগরীর কয়েকটি বর্ণের মিল রয়েছে। তাছাড়া সিলেটে আফগান অভিবাসীও সংখ্যায় অনেক ছিলেন। এই দুই ব্যাখ্যা সিলেটি নাগরীর উদ্ভবের ইতিহাস হিসেবে প্রাধান্য পেলেও আরো যেসব মতামত প্রচলিত আছে সেগুলো হলো:
দেবনাগরীর সঙ্গে যেহেতু সিলেটবাসী পরিচিত ছিলেন, তাই দেবনাগরীর আদলেই এই লিপি সিলেটিরা তৈরি করে নিয়েছিলেন;
প্রতিবেশী নেপাল ইত্যাদি দেশ থেকে আগত বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মাধ্যমে এই লিপি সিলেটে উদ্ভাবিত হয়;
সম্ভবত সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতাব্দিতে বিহার যুক্তপ্রদেশ থেকে আগত মুসলমান সিপাহী ও বিদেশাগত মুসলমানদের সুবিধার জন্য সিলেটি নাগরী লিপির সৃষ্টি হয়।
যৌক্তিকতা কিংবা উৎস নির্দেশ না করেই বলা হয় কোনো এক সুচতুর মুসলমান মুসলিম জনগণের মধ্যে সাধারণ লেখাপড়া চালু করার নিমিত্তে বাংলা লিপি থেকেই এই নাগরী লিপি তৈরি করে নেন। এটা মূলত লৌকিক বিশ্বাস।
তবে সব মতামত যাচাই করে বিশেষজ্ঞগণ সাকুল্যে তিনটি মতকেই প্রাধান্য দিয়েছেন: শাহ জালালের [রহ.] সময়ে তাঁর অনুসারীদের দ্বারা, আফগান শাসনামলে আফগানদের দ্বারা কিংবা দোভাষী পুঁথির সমান্তরালে সিলেটেই এর সূত্রপাত।
Listen, faithful brethren, to my plea,
countless people want to know Nagri.
Their heart’s desire is to learn,
they search for a primer and do not find one.
Though Sylheti Nagri is so easy,
clever people find it a struggle to learn.
Seeing this I thought to myself,
they would find it easy if they had a primer.
When I saw the zeal in people’s hearts,
I made the effort to help them.
If I wrote out all the letters systematically,
with God’s help they could learn in one day.
— Abdul Lotif. 1930. 'Pohela Kitab o Doikhura Rag', p13-14.
এখানে সিলেটি কিছু পুতির নিদর্শন দেওয়া হল:
আল্লাহু গণি
মহামদ নবী
পুথি
সাহাদতে বুজুরগান
বিছমিল্লা বলিয়া হাতে কলম লইয়া
প্রথম অইকর লেকি আল্লার নাম লিয়া
প্রথমে আল্লার নাম করি সুওরন
দুওমে হজরত নবীর বন্দিলাম ছরন
(পাশে) ছিওমে ছিদেক আর উমর উছমান
(পাশে) এসবার চরণ বন্দি হইতে তরান
চারমে হযরত আলী পাতিমা জিনত
হাছন হুছন বন্দি তরিবার ফত
ফাক পান্জতন বন্দি যত শহীদান
দীনের লাগিয়া তারা তেজিলা রান
এসব করিলেন পয়দা আফে ফাক জাত
কে বুঝিতে পারে তান হেকমতের বাত।
-লেখক, পীর মজির উদ্দিস আহমেদ(১৮৬৩-১৯৩৩)
সে বলে সকল কাম আমা হতি বেজাজা
মরিলে কবুল আমার যে কিছু সাজা
এক খদা বিনে আর খদা কেও নাই
দুনিয়ার বাদুরী বেকার আমি তারে চাই
যেই দুকে কান্দি আমি এই বাত মনে
নীল দরিয়ায় যদি আমা কথা শুনে
ফিরিছ্থায় কহিলা যদি পারে সে আকিবত
আপনার হাতে কর নাম দছ্থখত
হেকমতে হেকিম আল্লা হেকমত বাজায় কলে
হাতি বন্দি করি রাখে মাকড়ের জালে
বিনা মুকে কহে কথা বিনা হাতে মারে
যার হাতে তার সাজা কে বুজিত পারে
পানি দিয়া কায়া গড়ে বিছি দি গাছ
ছুট দিয়া বড় করে বড় দিয়া নাশ
ঘাট বাড়িয়া যার খেওয়ানীরে দেয় ঘালি
কত ঘাট আছে তার বুজিব পালফালি।
-পুঁথি নসিয়ত/ পীর আজমত আলী (জন্ম১৭৯৩)
*কেতাব হালতুননবি*
গফুর রহিম আল্লা কাদির ছুবহান।।
ছিতারায় খুবি দিলা সাত আছমান*
জমিনের খুবি দিলা কত চিজে আর।।
সকল মহতাজ খালি গনি পরওয়ার*
জমিন আছমান যেছা গুনা কেও করে।।
আল্লা যদি চায় তার খেমা দিতে পারে*
আল্লা বিনে ছাদকের লক্ক ভিক নাই।।
আমারে শুপিছি আমি মাবুদের ঠাই*
ইজ্জতে হুরমতে নবি মহাম্মদ রছুল।।
যে করে মাবুদ আল্লা আমার কবুল*
আজব এক হাদি নবি কত গুন তান।।
যার লাগি পয়দা হইছে জমি আছমান*
-লেখক সাদেক আলী (জন্ম১৮০০)
*সংসুধকের আরজ*
শুনহে মুমিন ভাই আরজ আমার।।
নাগরি ইলিম তরে লুক বেশমার*
খাহেস রাখেন দিল শিখিতে তাহায়।।
পহেলা কেতাব তারা খুজি নাহি পায়*
ছহল ইলিম এছা ছিলেট নাগরি।।
শিখে সরব লুকে বড় মেহনত করি*
দেখিয়া এমত আমি ভাবিলু দিলেতে।।
পহেলা কিতাব হলে আছান হবে তাতে*
-পুঁথী পহেলা কিতাব ও দইখোরার রাগ (১৩৩৬ বিএস ৯৩০ সিই) লেখক, মোঃ আব্দুল লতিফ (পহেলা কিতাব) ও মুন্সি মব্বিন উদদিন (দইখোরার রাগ)
*১৪*
মুমিনের দিলে যবে দেখিনু খাহিশ।।
তাদের আছানি তরে করিয়া কুশিশ*
লেখিনু হরফ সব করি জুদা জুদা।।
এক দিনে শিখি লিবে যদি করে খুদা*
বাংলা হরফ দিনু চিনিতে তাহার।।
বাংগালা জানেন যারা খাতেরে তারার*
বাংগালা হরফ দেখে আপে লিবে শিখে।।
উস্তাদ ধরিতে কিবা কাজ আছে তাকে*
হরফে পয়ার আর লেখি দিনু গীত।।
দইখুরার রাগ পড়ি খুশি হইব চিত*
তার পরে আরজ করি করিনু তামাম।।
ছিলেটি নাগরি পুথি পহেলা কিতাব নাম*
পড়িয়া মুমিন সবে কদর করিলে।।
মেহনত সফল হবে খুশি হব দিলে*
আশা রাখি মুমিনানে মেহের করিয়া।।
নেক দুয়া দিবা মেরা আখের লাগিয়া*
মহামদ আবদুল লতিফ অধমের নাম।।
ছিলেট শহর বিচে রাখিনু মুকাম*
হাত জুড় করি এবে জানিবে সবার।।
মুমিনের খেদমতে ছালাম হাজার*
*তামাম শুদ*
-পুথি পহেলা কিতাব ও দখোরার রাগ (১৩৩৬ বিএস ৯৩০ সিই)
স্বাধীনতার পর থেকে সিলেটের ঐতিহ্যবাহি আধ্বাত্কি এই নিজেস্য ভাষারিতী প্রায় বিলুপ্তির পথে। কি এক অজানা রহস্যের মতন সরকারের নির্লীপ্ততা আর আমাদের সিলেটিদের উদাসিনতা এই ভাষাকে হাড়িয়ে ফেলার অন্যতম কারণ। আমাদের ভালোবাসার ব্যাপকতা আজ শহর, গ্রাম ছাড়িয়ে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ছে কিন্তু আমাদের নিজেস্য আচার, নীতি বা শেখর কেই আমরা ভুলে যাচ্ছি। উপরি উল্লেখিত আলোচনা থেকে দেখা যায় যে বিশেষ করে বাউল ফকির টাইপের আধ্বাত্বিক মনা মানুষদের বিষর প্রিয় ও সাধনের ভাষা ছিল এই নাগরি, আর পুথি পড়ার কথা ত এখন আর শোনাই যায় না।
আমাদের সবার উচিত এই ভাষার প্রতি আর বেশি শ্রদ্বাশীল হওয়া ও তার ব্যাপ্তি ছড়িয়ে দেওয়া নিজ সন্তানদের মধ্যে তাদের আত্নিক ও জাগত্বিক বিষয়টা মাথায় রেখেই। অবশ্যই জোড় করে নয় বরং গর্ব করে নিজের আন্ঞলিক ভাষারিতির সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে।
সবাইকে কষ্ঠ করে পড়ার জন্য হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে অসংখ্য ভালোবাসা। ভালো থাকবেন আর লেখনীতে ভুল ক্রটি দড়া পড়লে অবশ্যই দড়িয়ে দিবেন সাথে সাথে এই অধমের ভুল মার্জনার সাথে বিবেচনা করবেন।
তথ্যসূত্র১
উইকিসূত্র
পুথিসূত্র
ছবিসূত্র- গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৩