ছোটবেলার দুরন্ত ঈদ!
আমার পুত্রদের দুষ্টুমির কারণে তাদের বকা দিতে গেলে আমার বাবা হুংকার দিয়ে ওঠেন। "খবরদার, ওদের কিছু বলবি না। তোরাও কম জ্বালাস নাই।" জোঁকের মুখে চুনের মতো আমাকে চুপ করে যেতে হয়। কারণ "ঘটনা সত্য"। সত্যি বলতে কি, ইতিহাস বলে, ছোটবেলায় আমার পুত্রদের চাইতেও অধিক দূষ্টু ছিলাম। পিঠাপিঠি ছোট ভাইটিকে নিয়ে বিরামহীন ভাবে নানা-বিধ কর্ম-কান্ড করে যেতাম।
তবে আমাদের দুষ্টুমি প্রতিভার সত্যিকার বিকাশ হতো ঈদের সময় নানা বাড়ীতে গিয়ে। নানা বাড়ী যাওয়া মানের আবারিত স্বাধীনতা, যেখানে ইচ্ছা যাও, যখন খুশী বাসায় ফেরো কেউ কিছু বলার নেই, কারণ ঘর ভর্তি লোকজন, বড়রা সবাই ম্যারাথন গাল গল্পে ব্যস্ত। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জন পঞ্চাশেক মানুষের জন্যে নানাপদের নানা স্বাদের রান্না নিয়ে বাড়ীর মহিলারা ব্যস্ত। আমার নানীজান ঘুরে ঘুরে সব তদারকি করছেন। আশ-পাশের পাড়া-প্রতিবেশীরাও সুস্বাদু খাবার ও আয়েশী আড্ডার লোভে ভীড় করছেন। সারা বাড়ী ঈদের আমেজে গম গম করছে। এই হৈ চৈ এর ভেতর আমাদের দূষ্টূমি নিয়ে বেশী ক্ষণ মাথা ঘামানোর কেউ ছিল না। দুষ্টুমির মাত্রা বেশী হয়ে গেলে দু'একটা মৃদু বকুনি, বড়জোর এইটুকুই।
পরের প্রজন্মের সবার চাইতে বড় ছিলাম বলে আমি ও আমার ছোট ভাই নানা-নানী, মামা-মামী, খালা-খালুদের আদর পেয়েছি সবচেয়ে বেশী। তবে সেই আদরের মাশুল গুনতে হতো তাদের প্রতিবেশীদের। কারও পুকুরের পোনা মাছ ধরে, নয়ত গাছের কচি ডাব পেড়ে, কিংবা মুরগীর খাঁচার সব মুরগী ছেড়ে তাদের ব্যতিব্যস্ত করে তুলতাম।
এক প্রতিবেশীর "টাইগার" নামে ভয়াল দর্শন কুকুর ছিল, যেটার ভয়ে সবাই কাঁপত। আমি আর আমার ভাই মিলে সেই কুকুরের লেজে বারুদ লাগানো পটকা বেঁধে ফুটিয়ে দিয়েছিলাম। সেই কুকুরের চেঁচামেচিতে পুরো এলাকা গরম হয়ে গিয়েছিল। ঐ ঘটনার পর থেকে টাইগার আমাদের দেখলে ভয়ে "কুঁই কুঁই" করতো।
কেউ একটু বকা দিলেই সাড়ে সর্বনাশ! তার ঘরের টিনের চালা ভুতুড়ে ঢিলের শব্দে কেঁপে উঠত দিনভর। বড়দের কাছে আমাদের নিয়ে অভিযোগ করেও খুব লাভ হতো না, সবারই খুব আদরের আমরা, কি বলবে আমাদের, ঐ বড়জোর একটু কপট বকুনি।
এ কারণে ঢাকা থেকে আসলেই নানা বাড়ির পাড়া-প্রতিবেশীরা আতংকিত হয়ে উঠতেন, "উকিল সা'বের নাতিরা আইছে, সাবধান, সাবধান!"
তবে অনেক ক্ষেত্রে নানা বাড়ীর প্রতিবেশীদের উপকারও করেছিলাম। আমরা যে ক'দিন নানা বাড়ী থাকতাম, সেক'দিন ঐ এলাকায় কোন ভিক্ষুক ঢুকতে পারতো না। এলাকার ভবঘুরে দুই কুকুরকে বস করে ফেলেছিলাম, ভিক্ষুক ঢুকলেই সেগুলো যেন চেঁচামেচি শুরু করে দেয় সেই ট্রেনিং দিয়ে ছিলাম সেগুলোকে। বড়দের কেউ একজন হয়ত বলেছিল "ভিক্ষা করা খারাপ।" - সেই জন্যে এই ব্যবস্থা!
নানাবাড়ীতে যাওয়া হয়না অনেক বছর। তবে মামারা দেশের বাড়ী গেলে এখনো তাঁদের বন্ধুরা আমাদের কথা জিজ্ঞেস করে, "তোদের অতি দুষ্টু ভাগ্নে দু'টার খবর কি?"। জবাবে মামারা যখন বলেন তাদের দু'জনেই এখন ইঞ্জিনিয়ার, তখন মামার বন্ধুরা মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন।
আমার পুত্ররা ইউনিভার্সাল স্টুডিও কিংবা রিভার সাফারিতে গিয়ে ঈদ উদযাপন করলেও দেশের বাড়ী গিয়ে মাঠে-ঘাঠে প্রকৃতির সাথে মিশে হৈ হল্লা করে ঈদ করার আনন্দ কী সেটা জানেনা। অবশ্য আমি নিজেও সেটা জানাতে খুব বেশী আগ্রহ পাই না। কারণ ঐরকম ঈদ যাপনে ছোটরা খুব আনন্দ করলেও বড়দের উপর কী ঝক্কিটা যায়, সে খবর তো জানি আমি। কি দরকার এতো কথা বলার
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মপোলব্ধি......
আত্মপোলব্ধি......
একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !
হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।
আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।
আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন