অনেক আগে পারস্পরিক আলোচনায় একটা বিষয় উঠে এসেছিলো- সামহোয়্যার ইনের কর্তাব্যক্তিদের আচরণ তথাকথিত ইসলামপ্রেমী জঙ্গীবাদের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে- তারা ইসলামপ্রেমী আচরণ করে বেশীরভাগ সময় যেসব বিতর্কের জন্ম দেয় সেসব বিতর্কের পেছনে মডারেশন নামের একটা ভুত থাকলেও সেটা সব সময়ই প্রতিক্রিয়াশীল একটা আচরণ হিসেবেই প্রতীয়মান হয়- এবং সাইটের ডেভলপার এবং মডারেটরেরা কোনো এক অজ্ঞাত কারণে ডানপন্থী এবং যদি মাত্রার কথা বলা হয় তবে সেটা উগ্র ডানপন্থী নির্বোধের আড্ডাখানা বলা যাবে-
যদিও ব্লগের কনসেপ্ট এই কল্পিত কম্যুনিটি ব্লগিংয়ের জায়গাটাতে শোভনতা কিংবা মতাদর্শিক দ্বন্দ্বের জায়গাতে এসে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে অধিকাংশ সময়ই আহত করে- যদিও ধারণাগত বিচারে ব্লগ মানুষের স্বাধীন কণ্ঠস্বরকে ধারণ করার কথা তবে যখন তথাকথিত টিকিধারী পুরোহিত আর কাঠমোল্লারা সবকিছুর তত্ত্বাবধানে থাকে তখন যেকোনো মতের গলায় ছুড়ি চালাতে এরা দ্বিধা করে না-
অমনিবাসে মুহাম্মদের যে কার্টুন ছাপা হয়েছে কিংবা প্রকাশিত হয়েছে এই কার্টুন উদ্ভব হওয়ার দায়টা সবসময়ই এইসব উল্লুক ডানপন্থী জঙ্গীবাদের সমর্থকদের ঘাড়েই পড়ে- তাদের আচরণে অন্যান্য সাধারণ মুসলিম কিংবা যারা মুসলিম পরিবারে জন্মে বাবা মায়ের কারণে নামের শেষে ইসলামী পদবী নিয়ে ঘুরে তাদের জন্য ভয়ংকর একটা বাস্তবতা নিয়ে এসেছে- এবং এইসব মোহাম্মদ আহমেদ সহ তাবত মুসলিম নামসম্বলিত মানুষদের সাম্ভাব্য জঙ্গী হিসেবে দেখবার একটা সুযোগ করে দিয়েছে তারা-
এইসব উল্লুকেরা বোমা মারে- এইসব উল্লুকেরা বিভিন্ন ওয়েব সাইটে গিয়ে ন্যাংটা মেয়ের ছবি দেখে আর দাড়িতে হাত বুলায়- যেমনটা করছে আমরা পাশের বুথের মানুষটা- তার প্রায় এক বিঘত লম্বা দাড়ি আর এডাল্ট ফ্রেন্ড ফাইন্ডারের ওয়েব সাইটের এক মুষ্ঠিরও কম কাপড় পড়া মেয়েদের উন্মুক্ত বক্ষ এবং সেই সাথে নাওজুবিল্লাহ রাস্তায় হাঁটা যায় না লোকজন এরকম অশোভন ভাবে রাস্তায় পেশাপ করে সম্বলিত বক্তব্য আমাকে কোনোভাবেই সম্মানজনক কোনো ভাবমুর্তি প্রকাশে সহায়তা করে না-
এরাই যখন আমাকে আলাপচারিতায় জানায় দেশটায় মেয়েমানুষদের চলাফেরা শালীনতার বাইরে চলে যাচ্ছে- মেয়েরা বড় বেশী প্রলোভন জানাচ্ছে - এসব মোকাবেলা করবার জন্য আসলেই ইসলামীকরণের প্রয়োজন আছে- এসব সহানুভুতিশীল বক্তব্য আমাকে যেসব শব্দ উচ্চারণে বাধ্য করে সেসব শব্দ অনায়াসেই ব্যবহার করাটা যৌক্তিক এটা আমার মতামত-
যাই হোক ইসলাম প্রেমী এইসব উল্লুক যারা মুহাম্মদের নাম শুনে হাতে তসবি জপা শুরু করে এবং একই সাথে কীবোর্ডের নীচে হাত নিয়ে হস্ত মৈথুন করে এবং এরপর বাইরে বের হয়ে হারকাতুল জিহাদের সদস্য হিসাবে একটা ডায়েরী ধরিয়ে দেয় বন্ধুর হাতে এদের নিয়ে আমাদের আসলে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন করা উচিত এটা নির্ণয় করা কঠিন-
আমি যদিও ধর্ম পালনকারীদের যথোপযুক্ত সম্মান করতে চাই- একজন প্রণত মানুষ সে দুর্গার মুর্তির সামনে কিংবা মেরীর মুর্তির সামনে নতজানু নাকি মসজিদের উন্মুক্ত প্রান্তরে নতজানু এটা বিচার না করেই তাকে সম্মান করতে ইচ্ছা হয়- এই ভাবালুতার জায়গা থেকে আমি যখন তাদের বাইরের সমাজে দেখি- তখন একটা সত্য জেনে বড়ই ভালো লাগে- প্রকৃত ধার্মিকদের ধর্মীয় লেবাস ধরতে হয় না- বরং আমার দেখা অধিকাংশ ধর্মভীরু ভালো মানুষেরা মাথায় টুপি দিয়ে চলে না- তারা দাড়িও রাখে না- তাদের অন্তরে ধর্ম নিয়ে ঘুরে তারা- এইসব মুমিন মুত্তাকীদের দেখি আর চিন্তা করি এরা ধর্মের কারণেই হয়তো এতটা শোভন যে অন্য ধর্মের মানুষদের আহত করে না- এরা তথাকথিত মুসলিম ভাইদের দুঃখে দুখী না বরং তারা ঘরের পাশের হিন্দু বন্ধু ভারতের কোনো দাঙ্গায় আক্রান্ত হলে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়- এরাই মুসলিম জঙ্গীরা যখন ৬৩ জেলায় বোমা ফাটায় আর আদালতের বিচারককে হত্যা করে কোনো ধর্মান্ধ উল্লুক তার প্রতিবাদ করে-
তবে এই সাইটের কর্তাব্যক্তিদের অভিমত তারা হিজবুত তাহিরীর সঙ্গ দিবে- তারা গাণিতিক যুক্তির চর্চা করে- গাণিতিক যুক্তির চর্চা করা মানুষদের সামান্য যৌক্তিকতা বোধ থাকে না এমন অদ্ভুতুড়ে অবস্থা আমি দেখি নি-
যাই হোক যখন আলোচনায় কর্তাব্যক্তিদের এই ধর্মপ্রীতির কথা আলোচিত হলো- যখন মোটামুটি টাদের মডারেশনের ছুড়ির গতিবিধি দেখে ধারণা হলো এটা ক্রমশ জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী জঙ্গীদলগুলোর অন লাইন ফোরামে পরিণত হতে যাচ্ছে- যখন এটা মোটামুটি নিশ্চিত হলো আসলে স্বাধীনতার সপক্ষ বিপক্ষ বিতর্কতে এদের অবস্থান প্রায়শই স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীদের পক্ষে তখন একটা সাধারণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিলো-
অনেক বিতর্কের পরও সামহোয়্যার ইন ছাড়া হয় নি- এর কারণ এখানের লেখালেখির পরিবেশ না- বরং অন্য একটা দায়িত্ব বোধের জায়গা ছিলো- যদি কেউ স্বাধীনতার পক্ষের কথা না লিখে তবে বিতর্কিত এবং ভ্রান্ত ইতিহাসের চর্চায় এখানের অনেক তথ্য গ্রহন করবে এই সাইটের লেখা যারা পড়বে- তাদের বিভ্রান্ত করবার সুযোগ দেওয়া রাজনৈতিক কারণে এবং সামাজিক কারণে উচিত হবে কি না এটা নিয়ে বিতর্কের পর মোটামুটি একটা নির্বাচন ধাঁচের ঘটনাও ঘটলো-
সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মূলত পিয়ালের যুক্তিকেই গ্রহন করা হয়েছিলো- তার বক্তব্য ছিলো যদি আমরা হঠাৎ করেই মাঠ ছেড়ে চলে যাই তবে এটা ধর্মান্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে আপোষকামী মানুষদের দখলে চলে যাবে- এবং এখানে তখন এইসব উগ্র ধর্মীয় রাজনীতি চর্চাকারীরা সহজেই নিজেদের উন্মাদনা ছড়াতে পারবে-
অবশ্য এখন মনে হচ্ছে আদতে আমাদের এই যৌথ সিদ্ধান্ত এই সামহোয়্যার ইন ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তটাই সঠিক সিদ্ধান্ত হতো-
এখানে নারী নির্যাতনের নামে যখন নারীত্বের অবমাননার জন্য একজনের শাস্তি হয় তখন অন্য এক ইসলামপ্রেমীর কণ্ঠ অনেক উঁচুতে উঠে যায়- অথচ একই অপরাধে অপরাধী ছিলো সেও-
যাই হোক ক্ষমতার চর্চা এবং ক্ষমতা ব্যবহারের সহনশীলতা যেখানে নেই সেই সব উল্লুকদের সাথে পাশাপাশি লেখালেখি করতে আমার স্পষ্ট আপত্তি জানাচ্ছি-
পিয়ালের ব্যন উঠিয়ে নেওয়ার কোনো দাবী আমি জানাই না- বরং আমার রুচিত বাঁধে এমন দাবী জানাতে- উল্লুকের সাথে কোনো আলোচনা বা আপোষ সম্ভব না-