somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঝিনুক খোলের ভেতর জীবন

০৮ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এবছর কেন জানি বাড়ি যেতে ইচ্ছে করছেনা। এই অনিচ্ছার পেছনের কারনটা আসলেই হালকা কিছু নয়। দাদার অনুপস্থিতিটাই এবারের না যেতে চাওয়ার আসল কারন। দাদী সেই ছোট্টবেলায় গত হয়েছেন। তেমন কিছু মনে নেই দাদীকে নিয়ে। তাই দাদীর জন্য তেমন মন খারপও হয়না। সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এবারে হঠাৎ করেই আমাদের সবচেয়ে প্রিয় মানুষটির চলে যাওয়া সবকিছুই উলটপালট করে দিলো। দাদা হীন ঈদে কিইবা আনন্দ? যে ঘরে বসে দাদার সাথে বসে বই পড়েছি, খেয়েছি, খেলেছি, এই বড় হওয়ার পরও রাতভর রুপকথার গল্প শুনে শুনে দাদার বুকে ঘুমিয়েছি সেই দাদাহীন ঘরে কিভাবে আমরা আনন্দ মানাই? কিভাবে আমরা ঈদের খুশি পাই? সেসব মনে হতেই মনটা যেন কেমন করে উঠে। ভাবছি যাবোইনা এবার। এসব ভাবনায় হঠাৎ বাবার ডাকে ছেদ পরলো।

শোন মা, কাল সকালে তাড়াতারিই বেরুব। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠিস কিন্তু। তোর যা ঘুমের বাতিক।

”হু” বলেই আবার আমি তলিয়ে গেলাম সেই ভাবনার সাগরে। ইস আগের ঈদগুলোতে কতো প্লানইনা করতাম কাজিনদের সাথে। কোথায় কোথায় বেড়াতে যাবে, কে কোন ড্রেস পড়বো, কার কার কাছ থেকে কতো টাকা ঈদী নেবো। আরো কতো কি? গতবার দাদা সবাইকে ঈদী দিলো ১০০ টাকা করে। আমাকে বেশি দিলোনা কেন সেটা নিয়ে সেকি কান্না। এত্ত বড় মেয়ে ঈদের দিনে ঈদীর জন্য কাঁদতে দেখে মা এসে দিলো রাম বকা। বকা খেয়ে লুকাই দাদার বুকে। দাদাকে বলি দাদা এরকম একটা দস্যি মেয়েকে তোমার ছেলে বউ বানালে কেন? দাদা হাসে। বলে, সব মেয়েদেরই মায়েদের দস্যি মনে হয়। যখন মা হবি তখন বুঝবি তোর মা দিস্য না পরী।

না এবার ঈদে আর সেসব গল্পও হবেনা, ঈদীও পাওয়া হবেনা, কান্নাও হবেনা, মায়ের বকাও হবেনা, হবেনা দাদার বুকে লুকানোও। এসব ভাবতে কখনযে চোখের কোণ হতে জল গড়িয়ে পড়ছিলো খেয়ালও করিনি। মায়ের ডাকে চমকে উটি

কিরে কাল থেকে দেখছি বসে বসে ফেঁত ফেঁত করে কাদঁছিস হয়েছে কি তোর? কদিন পর পর তোর হয় কি? কিছু বলিসনা কেন? না, তোকে নিয়ে আর পারা গেলনা। ক’দিন পর শশুরবাড়ি যাবি। এখনো বড় হতে পারলিনা।

উফ অসহ্য , কিছুই হতে পারেনা খালি শশুড়বাড়ি শশুড়বাড়ি। এ একটা জায়গা ছাড়া দুনিয়াতে আর কোন জায়গা নেই? কিছুই হতে পারেনা অমনি শশুড়বাড়ি। টিভি দেখলেও বলে শশড়বাড়ি গিয়ে কি শুধু টিভি দেখবি? গোসল করতে একটু সময় লাগলেও বলবে শশুড়বাড়িতেও অমন করবি? এলোমেলো বিছনা দেখেও বলবে শশুড়বাড়িতে এসব চলবেনা। দুনিয়ার মায়েরাকি শশুড়বাড়ি ছাড়া আর কিছুই বুঝেনা? ইচ্ছে করে ওই শশুড়বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিই। এটা পারা যাবেনা, ওটা পারা যাবেনা, সেটা অমন হবেনা ওটা তেমন হবেনা, এসব না না’য়ে ভর্তি শশুড়বােিড়তেই যাবোনা। এসব ভাবতে ভাবতে শশুড়বাড়িতে আগুন ধরাতে ধরাতে কখনযে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলাম খেয়াল নেই। ভোরে, ভোর বল্লে ভুল হবে, তখন ৯টা বাজে প্রায়, মায়ের হুঙ্কারে ঘুম ভাঙলো।
তোর বাবা সেই কখন থেকে রেডি হয়ে বসে আছে তোর জন্যে। এভাবে শশুড়বাড়িতে ঘুমানো চলবেনা।

উফ এই সাতসকালে উঠেই সেই বিরক্তিকর শশুড়বাড়ির নাম? ইচ্ছে হলো খোদার কাছে দু’হাত তোলে মোনাজাত করে বলি ” খোদারে এই দুর্বিসহ জাহান্নামে আমাকে নিওনা” মায়ের হুমহামে সেই সময়টুকুও পেলামনা। বাথরুমে চলে গেলাম। অমনি দরজায় ধাক্কা। খুলতেই মা টুথপেষ্ট লাগানো ব্রাশ হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলতে লাগলো শশুড়বাড়িতে এসব কে নিয়ে দেবে রাজ কন্যাকে শুনি?
মায়ের হাত থেকে ব্রাশ নিয়ে ধপাস করে দরজা বন্ধ করে বলি ” গেলেতো ওই নরকে”



চলবে...................
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:১৯
১২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×