মইনের ব্ল্যাক উইডো
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
মইনের দিনকাল ভালো যাচ্ছেনা। এটা আমি যতটা বুঝাতে পারছি, সে ততটা পারছে না। পারার কথাও না। মনের অসুখ এর ধারক কে ইংগিত দেয় না। তার মেলানকোলি ক্রমেই নিহিলিজমের দিকে যাচ্ছে। যদিও নিহিলিস্টিক সিমটম গুলো গ্রেন্ডিওস ভেবে, মইন নিজের মনকে উল্টো আরো দমন করবার চেষ্টা করে যাচ্ছে। বেশী বুঝলে অনেক সময় যা হয় আরকি! এই দুনিয়ার তর-তারিকা, কোন কিছুই তার আর ভালো লাগছে না। সব কিছুই মনে হচ্ছে রিপালসিভ। মইনের অবস্থা দেখে, মনে হচ্ছে ভুলে যাবার কোন প্রোসেস্ মানুষের মস্তিষ্কে থাকা উচিৎ ছিল। মাঝে মাঝে রিবুট দিয়ে, ফ্যাকটরি সেটিংসে নিয়ে আসা যেত। কিন্তু যা কিছু একবার মস্তিষ্কে থেকে যায়, সরাসরি স্নায়ু নষ্ট হওয়া ছাড়া তা মানুষ আর ভুলে যায় না। বন্ধু আমার। তাই মাঝে মাঝে ওর ব্যাপারটা আমাকে ভাবায়।
নাটালি পোর্ট্ম্যানের একটা হিব্রু সিনেমা দেখিছিলাম,”এ টেল অফ লাভ্ এন্ড ডার্কনেস”, পোর্ট্ম্যানকে পছন্দ করে সে, তাই ভেবে ছিলাম ভালো লাগবে, আমার হিসেবে সিনেমাটাও ভালো, প্রচুর কথার খেলা আছে। আসলে আরবি, হিব্রু এই ভাষা গুলোই এমন, প্রতিটা শব্দে অনেক অনেক কথার খেলা। পুরো সিনেমায় মইন পিক করল “ব্ল্যাক উইডো” ফ্রেসটা। ব্ল্যাক উইডো হচ্ছে এমন মহিলা who kills her lover(s)/husband(s) while they are inside। সিনেমায় ইসরাইলকে ব্ল্যাক উইডো আর ইহূদী আর মুসলিমদের লাভারের মেটাফর দেয়ে হয়েছে। যাই হোক মইনের কথা হচ্ছে, "এই জীবন মানেই কষ্ট, আর এই কষ্টের অর্থ খোঁজাই হচ্ছে জীবন"। ওর কাছে এখন পুরো পৃথিবীটাই ব্ল্যাক উইডো আর আমরা সবাই এর লাভার। আমার কথা হচ্ছে তুই পৃথিবীকে এত ভালোবাসিস না যে, সে ব্ল্যাক উইডো হয়ে উঠে। আর গনহারে সবার ভালো-খারাপ চিন্তার দায়িত্ব আল্লাহ আমেদের দেন নাই। যে পরীক্ষায় উনি আমাদের ফেলেন নাই, সেই পরীক্ষা নিয়ে চিন্তা করে নিজের মনকে দুঃখে ভরিয়ে ফেলা বোকামি। আল্লাহ একের বোঝা অন্যের ঘাড়ে দেন না, আরে বাবা তুই নিজের বোঝা সামলা বা সামাল দেয়ার প্রস্তুতি নে। Just do your part and you’ll be fine. If you are fine world will be fine, because you don’t see the world as it is but you see the world as you are.
পরীমণি বা নাসিরের বৌকে নিয়ে যখন দেশের মিডিয়া গরম তখন মইন আমাকে একদিন বলল, দোস্ত সব কিছুর মূলে যেতে হবে, আমি বললাম মানে?
মইনঃ মানে কিছু না, সামাজিক এই ধরনের অবক্ষয়ের মূলে গেলেই ঠিক হয়ে যাবে সব কিছু!
--- কি ভাবে?
মইনঃ আল্লাহর নাম গুলোর মধ্যে একটা নাম হচ্ছে (ٱلْحَىُّ) আল-হাই এই নামের মানে হচ্ছে চিরঞ্জজীব, আবার (حياة) হায়াত্ হচ্ছে
আমাদের জীবনের দৈর্ঘ্য। (حياء) হায়া হচ্ছে শালীনতা, লজ্জা, লাজুকতা, বিনয়, ভদ্রতা, কুণ্ঠা ইত্যাদি। এই সবগুলো শব্দেরই রুট
এক (حيي ) হা-ইয়া-ইয়া, তার মানে হচ্ছে এরা অনেক অর্থেই সম্পর্ক যুক্ত।
--- দোস্ত এর সাথে পরীমণির কি সম্পর্ক?
মইনঃ আমাদের শরীরের (material self) মৃত্যু হয় যখন আমাদের হায়াত শেষ হয়, আমাদের মনের (abstract self) মৃত্যু হয় যখন
আমাদের হায়া শেষ হয়। যাকে বাংলায় আমরা বলি বেহায়া। শব্দটা অহরহ ব্যাবহার হলেও শব্দটার বড়ই ওজন।
--- মনের মৃত্যু কি সিগনিফাই করে?
মইনঃ মনের মৃত্যু মানে ভালো মন্দের পার্থ্ক্য করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলা, potential evil and spread of evil, তাই বন্ধু খেয়াল
করলেই দেখবে, এই ধরনের মানুষ গুলো এমন কোন ধরনের অপরাধ নেই যার সাথে যুক্ত থাকেনা। এবং এদের সাথে যত নারী
পুরুষ যুক্ত থাকে তারাও বেহায়া এবং নানান ধরনের অপরাধে জড়িত। তাই আমি মনে করি অপরাধি হওয়ার পূর্ব শর্ত হচ্ছে
বেহায়া হয়ে যাওয়া।
--- দোস্ত তোমারে তো নারীবাদীরা পাইলে খবর আছে!
মইনঃ না! এখানে নারীর একার কথাতো না, বরং পুরুষও বেহায়া হয়। তোমার কি মনে হয় যত ঘুষখোর এদের কারো হায়া আছে?
এছাড়াও যৌনতার অপরাধ কি পুরুষের নাই, ঘুষখোরদের স্ত্রীরাও বেহায়া যখন তারা তাদরে স্বামীর টাকায় দেশ বিদেশে মার্কেট
আর অতি expensive খাবার দোকান দাপিয়ে বেড়ায়।
--- আরো ভালো ডিফেন্স লাগবে। ডিফেন্স impressive হতে হবে।
মইনঃ ঠিক আছে। মনোযোগ দিয়ে শুনো। আমাদের সবার মা Eve বা (حواء) হওয়া আঃ। অনেক ভাষাবিদের মতে এই টার্মটাও ঐ
একি আরবি রুটের সাথে সম্পর্কিত। আর হিব্রুতে আদামা হচ্ছে মাটি, দাম হচ্ছে রক্ত ও লাল রং আর আদাম আঃ কে তুমিতো
জানোই । বলতো ইভ বা হাওয়া আঃ এর সৃষ্টি না হলে কি হতো?
--- মানব জাতি বলতে কিছুই থাকত না, আদম যেই মাটি থেকে সৃষ্টি হয়েছিলেন আবার সেই মাটিতেই পরিনত হতেন।
মইনঃ মেয়েরা সম্মানিত, কারন লাল রক্তের নির্জাস থেকে তৈরি হওয়া তুচ্ছ মাটির সমতুল্য তরল, নিজের শরীরে ধারন করে তারা নতুন
জীবন তৈরি করতে পারে, মানব জাতির অস্তিত্তের কারন ওরা। সমস্যা বেহায়াদের সাথে হাওয়াদের সাথে না, হওয়াদের হায়া আর
হায়াত থাকাটাই স্বাভাবিক আর হওয়া থেকে যারা জন্মায় তাদেরও হায়া আর হায়াত থাকাটাই স্বাভাবিক।
মইনের সমস্যা হচ্ছে overgeneralization এবং judgmental হয়ে যাওয়া, একি ছাঁচের মধ্যে ফেলে সবাইকে একেক রকমের শ্রেণীতে বিভক্ত করে ফেলা। এমন নয় যে, সে যা বলছে ভুল বলছে, তার চিন্তাটা ঠিক কিন্তু সবার ভালো মন্দের চিন্তা করা আর তাদের বিচার করা মইনের কাজ নয়। বাস্তবতা হচ্ছে প্রকৃত অর্থে কে ভালো আর কে খারাপ তার বিচার একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ করতে পারবেন না। মেয়েরা মায়ের চরিত্রেও যে খুব মহান সবার ক্ষেত্রে তা ঠিক না। বহু মা আজকাল তার পরকীয়া প্রেমিকের জন্য সন্তান হত্যা করেছে, সন্তানের চেয়ে শরীরের চাহিদা এত গুরুত্ব পূর্ণ যে ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছে। বহু চোর, বাটপার, ঘুষখোর, মিথ্যাবাদী অসৎ লোকের স্ত্রীরাও হয়ত অনেক ভালো মানুষ, কারন মনে রাখতে হবে ফের্যাউনের স্ত্রী আসিয়া আঃ বেহেস্তে যাবেন। আর মূসা আঃ এর একজন পতিতার পক্ষ নিয়ে কথা বলার ইতিহাস আছে, ঈসা আঃ এর সময় ম্যারি ম্যাগডিলন উনার একজন ডিসাইপেল ছিলেন যার সম্পর্কে এই রকমের কথা প্রচলিত আছে, হাদীসে আছে একজন পতিতা একটা বিড়ালকে মায়া করে পানি খাওয়াবার কারনে বেহেস্তে যাবেন। তাহলে আমরা ভালো মন্দ জাজ করার কে? আমি তাকে বহুবার বুঝিয়েছি যে over rationalization মানুষকে bi-polar বানিয়ে ফেলে, কে শুনে কার কথা!! আমি বিশ্বাস করি প্রতিটা মানুষের বিচার কেয়ামতের দিন ভিন্ন ভিন্ন হবে। যার যার বিচার হবে তার তার জ্ঞান আর পারিপার্শিকতা অনুযায়ী। কে জানে সো-কল্ড ভালো মানুষেরা বেহেস্তের গেট দিয়ে ঢুকবার আগেই হয়ত দেখবে, বেহেস্তে সালমান খান আর সানি লিওনি নিশ্চিন্তে তাস খেলছে!!! আর কারো সম্পর্কে না জেনে ধারনা করা মিথ্যার শামিল। সো-কল্ড ভালো মানুষেরা effortlessly অতি অল্প পরিশ্রমে কত অন্যায় যে করে যাচ্ছেন তার হিসাব করা সম্ভব না।
মানুষের মনের অসুখের জন্য নেচার (nature) আর নার্চার (nurture), অর্থাৎ মানুষের জিন গত মনের গঠন আর তার চারপাশের পরিবেশের প্রভাবে এ দুটাই matter করে। মানুষ যখন জন্মায় তখনই ঐ শিশুটার একটা স্বভাব by default inbuilt থাকে, স্বাভাবিক ভাবেই অপরাধ বা কোন খারাপ তার ধারের কাছেও থাকে না। এজন্যই হয়ত আমরা বাঙ্গলা ভাষায়, নিষ্পাপ শব্দটা শিশু শব্দের আগেই ব্যাবহার করে থাকি সবচেয়ে বেশী। কিন্তু বাবা–মা, অন্য বড়রা এবং সমাজ নিজের অজান্তেই, ভালোর সাথে সাথে যত খারাপের শিক্ষা দিয়ে থাকে। এর ফলে একটা শিশু মানবের যে ভ্যাজাল মুক্ত স্বভাবটা থাকে তা ভ্যাজাল যুক্ত হয়ে যায়। Psychology অনুযায়ী learning is a relative permanent change in behavior that results from experience, আবার প্রতিটি অভিজ্ঞতার সাথেই কম আর বেশী emotion যুক্ত থাকে, আর emotion এর সাথে response আর reaction যুক্ত হয়ে যায়, যা ক্রমেই, আমাদের প্রকৃত স্বভাবের বাইরে, অন্য এক মানুষ বানিয়ে ফেলে। এই নানান রকম ইমোসান গুলো আর আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে শিখি না, দমনতো পরের ব্যাপার। আমরা মানুষ কম reactive machine বেশী হয়ে যাই।
কুরয়ানে সূরা রুমের ৩০ নম্বর আয়াতে ফিত্বরাতের (فِطرةٌ) কথা বলা হয়েছে,যার রুট হচ্ছে (فطر) ফা-ত্ব-র। ফিত্বরাত শব্দের মানেই হচ্ছে unadulterated nature of things. অর্থাৎ কোন কিছুর ভ্যাজাল মুক্ত প্রকৃত স্বভাব। এই কথায় আবার আসবো। একটা ভিন্ন কথায় আসি, শবেবরাতের হালুয়া-রুটি শেষ। সামনে রমজান। আমরা মুসিলিমরা এই এক মাস সারাদিন খাবারের অপেক্ষা আর আয়োজন করে সন্ধ্যর পরে খাবো! বেশীর ভাগ মানুষেরই রমজানের সিয়াম পালন মানে এতটুকুই বা আপাতঃ দৃষ্টিতে আমার তাই মনে হয়। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে আমাদের যখন রমজানের সিগনিফিকেন্স বুঝানো হয়, তখন বলা হয় সিয়াম সাধনা, আমাদের গরীব দুঃখীদের না খেয়ে থাকবার যন্ত্রনা বুঝাবে। আমার কখনোই এই যুক্তিটা বোধগম্য হয় নাই। গরীবের না খেয়ে থাকার যন্ত্রনা হচ্ছে এমন যে, আমি ক্ষুধার্ত আর কবে কখন খাবার পাবো তাও জানি না এবং তা পছন্দ বা অপছন্দের ব্যাপারতো অনেক দূরে। তারচেয়ে বড় কথা হলো, রোজা রাখা ধনীর জন্য যেমন ফরজ তেমনি গরীবের জন্যও ফরজ। তাহলে ধনী, না হয় কিছু শিখলো, গরীব যে সাধারনত না খেয়ে বা কম খেয়েই দিন কাটায় তার কি শিক্ষা হয়?
সূরা বাকারার ১৮৩, ১৮৪, ১৮৫ নম্বর আয়াতে সিয়াম পালনের জন্য বলা হয়েছে। এর মধ্যে যদি খেয়েল করেন তবে দেখবেন, ১৮৩ নম্বর আয়াতে কুতিবা (كُتِبَ) শব্দটি ব্যাবহার করা হয়েছে যার মানে হচ্ছে ordain, foreordain অথবা prescribe, মানে আমাদের তা করতেই হবে বা আল্লাহ্ আগেই আমাদের জন্য লিখে রেখেছেন যে এটা আমাদের করতেই হবে বা অসুস্থতা থেকে সুস্থতায় নেয়ার জন্য আদেশ পত্র দেয়া হয়েছে। এবং খেয়াল করলে দেখবেন আগেকার শরিয়াতেও সিয়াম ছিল, যেমনঃ যাকারিয়া আঃ এর সময় কথা না বলে থাকা সিয়াম পালনের অন্যতম বৈশিট্য ছিল। চিন্তা করলে দেখবেন মনের জন্য এটা অনেক চ্যালেঞ্জিং, কারন কথা হচ্ছে চিন্তার বহিঃপ্রকাশ, আর কথা আটকিয়ে রাখা হচ্ছে এক রকমের নিজের চিন্তা-চেতনের লাগাম চেপে রাখার মত। আসলে কি সাওম (صوم) মানেই prescribed কিছু কাজ থেকে specific manner এ বিরত থাকা। নবীজী সাঃ ও সিয়াম কে prescribe করেছেন। (O young people! Whoever amongst you can afford marriage, let him marry. Whoever cannot afford it, let him fast, for it will be a shield for him).
১৮৪ নম্বর আয়াতে এক রকমের বলেই দেয়া হয়েছে, সিয়ামের সিগনিফিকেন্স বা উপকার বোঝা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে পালনে কোন ছাড় নাই। বর্তমান কোন শারীরিক limitation থাকলে পরে করে নিতে হবে, অথাবা একেবারেই অক্ষম হলে এর বিকল্প অন্যান্য prescribed ভালো কাজ গুলো করতে হবে। মানে পালন করতেই হবে সিয়াম, এর থেকে কোন ছাড় নাই। যদিও এর উপকার সব সময় আমাদের বোধগম্য হবার নয়।
১৮৫ নম্বর আয়াতে অনেক কথার সাথে রামাদ্বান (رَمَضَانَ) তথা রমজান মাসের নাম উল্লেখ করা আছে এবং বলা আছে আল্লাহ্ আমাদের জন্য সব কিছু সহজ করতে চান কঠিন করতে চান না, এবং উনি এই সব কিছু মিলিয়ে চান যেন আমরা সন্তুষ্ট থাকি বা শুকরিয়া করি বা greatful থাকি বা content থাকি। এখানে আমার লেখার প্রেক্ষাপট থেকে উল্লেখ্য যে রামাদ্বান (رمض) র-মা-দ্ব রুটের মনে হচ্ছে scorching heat of mid-day sun বা being sun baked।
আচ্ছা আপনাদের কারো কি কখনো কোন fungal infection হয়েছে? যদি হয়ে থাকে তবে জানবেন যে এটি ভালো করা ডাক্তারদের জন্য এক কঠিন কাজ, সহজে ছাড়তে চায় না। কখনো কখনো অনেক দিন বা অনেক ঔষধ লেগে যায় সাড়াতে। খুব বিরক্তিকর আর চিকিৎসা না নিলে ছড়াতে থাকে। সাধারনত আমাদের শরীরের চিপায় চাপায় এরা বাস করতে পছন্দ করে। এই ফাঙ্গাসের শত্রু কি জানেন? এই ফাঙ্গাসের শত্রু হচ্ছে সূর্যের আলো। দেখবেন বাসাবাড়ির চারপাশে যেখানে প্রখর সূর্যের আলো পরে সেখানে ফাঙ্গাস জন্মায় না, যদিও আকাশ টানা কিছু দিন মেঘলা থাকলে জন্মায়, এক সকালের সূর্যের আলোতেই সব মিলিয়ে যায়। এই ফাঙ্গাসের আরবি হচ্ছে ফুতরি (فُطرى) যা একি (فطر) ফা-ত্ব-র রুটের শব্দ।
এই ফা-ত্ব-র (فطر) রুটের আরো কিছু শব্দঃ
ফাত্বির (فاطر) মানে হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা, creator এমন creator who creates buy separating or splitting, খেয়াল করলে দেখবেন, প্রতিটা নতুন জিনিস তৈরির জন্য পুরাতন থেকে সেপারেসন দরকার। এই ক্ষেত্রে সূরা ফালাকের, ফালাক শব্দটা study করে দেখতে পারেন।
ফাত্বারা (فَطَرَ) মানে হচ্ছে to create, create by separating or splitting
ফিত্বরাত (فِطرةٌ) মানে হচ্ছে আমাদের ভ্যাজাল মুক্ত স্বভাব, বা আমাদের unadulterated nature, যা জন্মের সময় আল্লাহ্ আমাদের দিয়েছেন, যা ছিল কোন রকমের দোষ মুক্ত।
ফুতুর (فُطُورٍ) মানে হচ্ছে flaw, defect, inadequacy, ভ্যাজাল
ইনফিত্বর (الإنفطار) মানে হচ্ছে split apart
এছাড়াও ইনফাত্বারা, ঈদুল ফিত্বর, সফাকাতুল ফিত্বর এগুলোও একি রুটের শব্দ।
আমার মনে হয় রামাদ্বান আমাদের জন্য একটা সুযোগ। সূর্যের আলো আর তাপে যেমন ফুত্বরি গুলো সহজেই অস্তিত্ব হারায়, আমাদের ফিত্বরাতের ফুতুর গুলোও রমাদ্বানে খুব সহজেই ফাত্বিরের সাহায্যে ইনফিত্বার করে নিজের ভ্যাজাল মুক্ত ফিত্বরাতে পৌছানো সম্ভব। বা আমি ধারনা করি যে রমাদ্বান আমদের মনের জন্য এক রকমের চিকিৎসা। সঠিক চেষ্টায় মানুষের মনের পরিপূর্নতা অর্জন করা বা মনের দূর্বলতা গুলো দূর করা, নিজের মনে বাস করা যত দুঃখ, ঘৃণা, লোভ, ভয়, হিংসা,অহংকার, অশ্লীলতা, পরশ্রীকাতরতা দূর করার মোক্ষম সময় হচ্ছে রমাদ্বান।
আচ্ছা খেয়াল করেছেন কি? এই যে আমি বললাম আমাদের ভুলে যাবার কোন উপায় নাই, কিন্তু তাহলে আমারা অনেক সময়ই অনেক কিছু মনে করতে পারি না কেন? এর explanation হচ্ছে কিছুটা search engine optimization এর মত, আমাদের ব্রেইন যে ম্যামরি গুলো বেশী ব্যাবহার করে ঐ নার্ভ গুলোর সিনাপ্স গুলো re-enforcement পেতে থাকে, তাই যখনি তথ্য প্রয়োজন বের করে নিয়ে আসে, কিন্তু যেগুলো ব্যাবহার হয় না সে গুলোর এই প্রসেসটা হয় না, কিন্তু ম্যামরি ঠিকি থাকে, আমারা ম্যামরি খুঁজতে থাকি, কিছুক্ষন না পেলেই আমরা আর তা চিন্তা করা বাদ দেই বা অন্য কাজে ব্যাস্ত হয়ে যাই, মনে করি যে ভুলে গেছি, কখনো আবার পরে অন্য কোন কাজের সাথে, অথবা দুদিন তিন দিন পরেও কোন কিছু যা মনের মধ্যে খুঁজছিলাম তা মনে পড়ে যায়। ঐ যে মইনের ব্রেইন রিবুটের কথা বলে ছিলাম nerve damage ছাড়াও এই উপায়ে কোন কিছু নিজের মন থেকে দূর করা সম্ভব। মানে এত কিছু না বুঝলেও আপনি যদি বাংলার প্রবাদ “অনভ্যাসে বিদ্যা হ্রাস” কথাটা বুঝেন তাহলে বুঝবেন, রমজানে আল্লাহ্ সিয়ামের মাধ্যেমে খুবই programmed manner এ আমাদের খারাপ কাজের অনভ্যাস আর ভালো কাজের অভ্যাস কারার মাধ্যমে নিজের মনের দূর্বলাতা দূর করে আসন্ন মহাবিপদ থেকে বাঁচবার সুযোগ করে দিয়েছেন। সবার উচিৎ এর ফায়দা নেয়া।
# এই রমজান হোক সবার ফিত্বরাতে ফেরার। আর ঈদুল ফিত্বর হোক ফিত্বরাতে ফেরার আনন্দে।
# ইচ্ছা করে কুরয়ানের আয়ত গুলো দিলাম না, কষ্ট করে কুরয়ান খুলে দেখে নিবেন, হাতের কাছে না থাকলে ব্রাউজারে কিংবা app এ।
# আল্লাহুম্মা ইন্নি আস-আলুকা আল আফিয়া(O Allah, I ask You for Afiyah). সহজ কিন্তু সুন্দর একটা দোয়া।