বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
মন + শান্তি = প্রশান্ত মন = নির্বাণ ????? (salvation,redemption,purification)
ইস্কুলের শেষ দিনের জেনারেল ম্যাথ ক্লাস। স্যার সব সময়ের মতই নীরব নির্বিকার নিশ্চিন্ত জড় পদার্থের মতই বসে ছিলেন আমাদের সামনে। কখনো মনেই হতনা অংক ছাড়া আমাদের সাথে তাঁর অন্য কোন সম্পর্ক আছে?? হঠাৎ স্যার বলে উঠলেন, বাবারা শুনো সবাই, “জীবনে যদি সুখি হতে চাও শান্তি পেতে চাও, সব সময় নিচের দিকে তাকাবে।” এরপর উনি ব্যাপারটা একটু ব্যাখ্যা করলেন, হ্যা হয়ে গেলাম, অবাক হয়ে গেলাম, অভিভূত হয়ে তাকিয়ে রইলাম। উনি যে দ্বৈব বাণী শিক্ষাদিলেন আমাদের!!! ছুটির আগে এরপরে আরো ২টা ক্লাস ছিল ওগুলো আর স্মৃতিতেই বসতে পারে নাই, ঐ অমিয় বাণীর প্রাচুর্যের ঠেলায়! আমাদের ইস্কুলের সকল শিক্ষকের মত তাঁরও একটা শ্রুতি কটু টাইটেল ছিল। এখনও লজ্জা লাগে যখন মনে হয় এত মহান একজন শিক্ষকের এই রকম কটু একটা উপাধি ব্যাবহার করতাম আমরা!!!???
এই ঘটনার পর আস্তে আস্তে বুঝতে শিখলাম যে মনের তাবেদার আমরা। মনই আমাদের যত কষ্টের নষ্টের মূলে। আমাদের চাহিদার আসলে শেষ নাই। চিন্তা করে বুঝতে পারলাম এই পৃথিবীর যত কিছু আকর্ষনিয় সব কিছুর খারাপের একটা শেষ সীমা আছে কিন্তু ভালোর কোন শেষ সীমা নাই। যেমন ধরেন আপনার পকেটে এখন শূন্য টাকা থাকতে পারে কিন্তু আপনি লক্ষ্মী মিত্তালের সমান উপার্জনের পরে আপনার হয়ত ও্যারেন বাফেট বা কার্লস স্লিম বা বিল গেটস হতে ইচ্ছা করবে।
যে নয়মিত ভাত খেতে পায় না সে স্বপ্ন দেখে নিয়মিত ভাত খাবে, স্বপ্ন পুরনের পর সে আবার স্বপ্ন দেখে নিয়মিত মাছ ভাত খাবে, এরপর এটা পুরন হলে স্বপ্ন দেখে নিয়মিত পোলাও কোর্মা খাবে............চলতেই থাকে।। এই বাংলাদেশেই অনেক মানুষ আছে যারা সকাল বেলা ফ্রান্স থেকে আনানো নাস্তা খান, তারাও আরো উপরে উঠার স্বপ্নে বিভোর!!!!!!!
আবার আমার ইস্কুল জিবনে মনে হত গায়েত্রি জোশির চেয়ে সুন্দরী মহিলা এই পৃথিবীতে নাই। এরপর মনে হল, না ক্যাথ্যেরিন জিটাজোন্সই দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দরী, এক দেড় বছর আগেও চার্লিজ থেরনকে মনে হত যে উনি একনম্বর আর এখন স্কারলেট জোহানসন। এই লিস্ট থামবেনা যিদি নিজে না থামাতে পারি, আমি হিউ-হ্যাফনার আর কার্লস স্লিমের কম্বিনেশন হলেও না। মানে এর কিছুই আমাকে তৃপ্ত করতে পারবে না, যদিনা আমি আমার মনকে তৃপ্ত করতে পারি।
আজ রাতের খাবার পছন্দ হলনা আপনার, কিন্তু ভেবেছেন কি? আজ রাতে আপনার শহরেরই আনেক মানুষ হয়ত না খেয়েই ঘুমিয়েছেন, অনেক শিশু হয়ত এখনও মায়ের আঁচলের নিচে ক্ষুদার্ত বলেই কাঁদছে? বিছানা পছন্দ হচ্ছেনা আপনার? ভেবেছেন কি, এব্রো থেব্রো ফুটপাতে নামে মাত্র পলিথিন বিছিয়ে ঘুমাচ্ছেন অনেক মানুষ? আপনি কত সৌভাগ্যবান, ভাবেন কি?
আল্লাহের মানবিক গুণাবলী পোষ্টটা লিখতে গিয়ে আল্লাহের গুনবাচক নামগুলো নিয়ে কমবেশি ভাবতে হয়েছে। তখন একদিন চিন্তা করছিলাম সুবহানা রাব্বিয়াল আযিম রুকুর তসবি আর সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা সেজদার, এখন আযিম আল্লাহের গুন বাচক নামের মধ্যে আছে কিন্তু আ’লা নাই কেন? লজিকাললি থাকা উচিৎ ছিল, আ’লা আযিমের চেয়ে অর্থে মহান হবার কথা, কারন আমরা সেজদায় ব্যাবহার করি, আর সেজদা রুকুরচেয়ে উপরের লেভেলের ব্যাপার!!!! যাই হোক সূরা আ’লায় গেলাম, আমার প্রাইমারী কোয়ারির(??) কিছু করতে পারলাম না কিন্তু সূরা আ’লার ১৯টা আয়াতের সাথে ভালোবাসাবাসি হয়ে গেল।
সূরা আ’লা ছাড়া আমার দিন কাটে না। আর সবচেয়ে ভালোবেসে ফেললাম ১৪নং আয়াতটা কে। (قَدْ أَفْلَحَ مَن تَزَكَّى) “ক্বাদ আফলাহা মান তাযাককা” তে আসলেই একাধিকবার পরতেই হয়, না পরলে জানি কেমন কেমন!!!!!
“ক্বাদ আফলাহা মান তাযাককা” এর কাছাকাছি বাংলা অর্থ হয় “নিশ্চয় সাফল্য লাভ করবে সে, যে শুদ্ধ হয়”( He has certainly succeeded who purifies himself)। কি আছে এর মাঝে আমার জ্ঞানেতো আর কুলায় না!! কেমনে শুদ্ধ হব কিছুই বুঝিনা। খালি চিন্তা করি বুদ্ধিজমের শুদ্ধতা অর্জন বা নির্বাণ লাভ আর আমার ট্র্যাক কি একি হয়ে যাবে তাহলে??? বিষ্ণু অবতার ছিলেন গৌতম বুদ্ধ, তা প্রচলিত আছে বলে জানি। নবীও ছিলেন নাকি তিনি?? এরকম কিছুইতো জানি না!!! আর নাই যদি হন এত মিল কেন থাকবে??? আর শুদ্ধ হওয়া বা নির্বাণ লাভের কথা এছাড়াতো আর কোথাও এর কথা শুনি নাই !! তাহলে কি ১০টা কোড কঠিন ভাবে মানা শুরু করবো??
১) হত্যা করা থেকে বিরত থাকা
২) চুরি করা থেকে বিরত থাকা
৩) অবৈধ যৌনতা থেকে বিরত থাকা
৪) মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকা
৫) নেশা জাতিয় দ্রব্য ব্যাবহার থেকে বিরত থাকা
৬) নির্দিষ্ট সময়(সকাল-দুপুর) ছাড়া খাবার গ্রহন করা থেকে বিরত থাকা
৭) নাচ গান বাজনা অনুষ্ঠান ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা
৮) সুগন্ধি ও প্রসাধনী ব্যাবহার থেকে বিরত থাকা
৯) উঁচু কেদারা বা বিছানা ব্যাবহার থেকে বিরত থাকা
১০) স্বর্ণ বা রৌপ্য গ্রহন করা থেকে বিরত থাকা
চিন্তা করে দেখলাম মানা যাবে, কিন্তু ৬,৮,৯ মানা আমার জন্য খুবি কঠিন। ইসলামের সাথে তেমন কোন কনট্রাডিক্সন নাই, কিন্তু আল্লাহতো সূরা আ’লাতেই বলেছেন(وَنُيَسِّرُكَ لِلْيُسْرَى) “ওয়ানু ইসসিরুকা লিল ইউসরা” মানে “আমি আপনার জন্য সহজ শরীয়ত সহজতর করে দিব” মানে আল্লাহের দাওয়া পূর্বের অপেক্ষাকৃত কঠিন ব্যাপার গুলোও আমাদের মানতে হবে না। আমি কেন আমার জন্য হালাল করা জিনিস হারাম করে নিব?? ব্যাপারটা ঠিক হবে না। কিন্তু ভাবতেই থাকলাম “ক্বাদ আফলাহা মান তাযাককা”। কিভাবে শুদ্ধতা অর্জন করে সফল হতে পারি, কিভাবে???
এমন সময় একদিন কেন জানি ইচ্ছা করলো সূরা ইউসুফটা তর্জমা তফসির সহ আবার একবার মনোযোগ দিয়ে পড়ি। অনেক আগে পড়েছিলাম অনেক কিছুই মনে নাই। শুরু করলাম, পড়ছি, পড়ছি, মনেহচ্ছিল অনেক কিছুই প্রথমবার দেখছি যা আগের বার দেখি নাই!! যাইহোক ৫৩ নং আয়াতে ইউসুফ আঃ বলছেন
(وَمَا أُبَرِّىءُ نَفْسِي إِنَّ النَّفْسَ لأَمَّارَةٌ بِالسُّوءِ إِلاَّ مَا رَحِمَ رَبِّيَ إِنَّ رَبِّي غَفُورٌ رَّحِيمٌ)
“ওয়ামা উবাররিউ নাফসিই ইন্নান নাফসা লা আম্মারা তুম বিসসুওই ইল্লা মা রাহিমা রাব্বিইয়া ইন্নি রাব্বিই গাফুরুররাহিম”
কাছাকাছি বাংলা অর্থ হয় “আমি নিজেকে নির্দোষ বলি না। নিশ্চয় মানুষের মন মন্দ কর্মপ্রবণ কিন্তু সে নয়-আমার পালনকর্তা যার প্রতি অনুগ্রহ করেন। নিশ্চয় আমার পালনকর্তা ক্ষমাশীল, দয়ালু।”
এখান আমার জন্য ইন্টারেস্টিং ব্যাপার ছিল এই যে এখানে হচ্ছে বলা হয়েছে “মানুষের মন মন্দ কর্ম প্রবণ” আর আমার কাছে সব সময় মনে হয় মানুষের মন ভালো কর্ম প্রবণ। মানুষ খারাপ কাজ করার পরেও ভালোর প্রতিই আকৃষ্ট হয়। আল্টিমেটলি ভালো কাজই করতে চায়। একজন চোরও জানে চুরি করা ভালো না, সে হয়ত জিবিকার জন্য চুরির বিকল্প কিছুই ভাবে, সে চুরি করে এনিয়ে হয়ত সে মনের জাতনাতেও ভুগে।
যাই হোক আমার ভুল ভাঙল। বুঝলাম মানুষের মন আসলেই মন্দ কর্ম প্রবণ, আর তা যদি নাই হোত ইন দ্যা ফার্স্ট প্লেস, চোর হয়ত কখনই চুরিই করত না!!!! কিন্তু খেয়াল করার ব্যাপার হল ঐ আয়াতেই বলা হচ্ছে যে, যারা আল্লাহের অনুগ্রহ প্রাপ্ত তাদের মন কিন্তু মন্দ কর্ম প্রবণ নয়!! তার মানে মানুষের ভালো মনও আছে। একটু পরেই আরও দুই রকম মনের কথা জানলাম।
জানলাম যে মোট তিন রকম মনের কথা বলা হয়েছে কুরয়ানে
১) নাফসুল আম্মারা (মন্দ কর্ম প্রবণ মন) (১২:৫৩ তে)
২) নাফসুল লাওয়ামা (ঐ মন যে নিজেকে ধিক্কার দেয়) (৭৫:২ তে)
৩) নাফসুল মুতমায়িনা (প্রশান্ত মন) (৮৯:২৭ তে)
সূরা আল ক্বিয়ামাহতে আল্লাহ নাফসুল লাওয়ামার শপথ করেছেন। সাধারনত কুরয়ানে আল্লাহ যে বিষয় গুলোর উপর শপথ করেছেন সে বিষয় গুলো সব উচ্চ মর্যাদাশীল। অর্থাৎ যেনতেন বিষয় না ঐ মন যে নিজেকে ধিক্কার দেয়। আর নাফসুল মুতমায়িনা কে আল্লাহ সূরা আল ফজরের একেবারে শেষদিকে জান্নাতের টিকেট দিয়ে দিয়েছেন।
সূরা আল ফজরঃ আয়াত ২৭,২৮,২৯,৩০
(يَا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ)
(ارْجِعِي إِلَى رَبِّكِ رَاضِيَةً مَّرْضِيَّةً)
(فَادْخُلِي فِي عِبَادِي)
(وَادْخُلِي جَنَّتِي)
“ইয়া আইয়ুহান নাফসুল মুতমায়িনাতুর জিয়িই ইলা রাব্বিকি রাদিয়াতাম মারদিইয়াতান, ফাদখুলিই ফি ইবাদিই,ওয়াদ খুলিই জান্নাতিই”
“হে প্রশান্ত মন,তুমি তোমার পালনকর্তার নিকট ফিরে যাও সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে।অতঃপর আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও।এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর।”
এই বার বুঝলাম শুদ্ধতা লাভ করা মানেই বৌদ্ধদের নির্বাণ লাভ করা, খৃষ্টানদের salvation(বা পরিত্রান, নিস্তার), ইহুদিদের redemption(বা দায়মোচন, মুক্তি)লাভ, আর মুসলমানদের নাফসুল মুতমায়িনা বা প্রশান্ত মন লাভ করে নিজেকে শুদ্ধ করা বা পিউরিফাই করা বা purification।
নির্বাণ লাভ করার জন্য কি করতে হয় তা আগেই দেখেছি, কিন্তু নির্বাণ কি? নির্বাণ হল “নির্বাণ অব্যক্ত, অনির্বচনীয়, তৃষ্ণার বিনাশই নির্বাণ। নির্বাণ সেই অবস্থা যেখানে জন্ম নেই, জরা নেই, ব্যাধি নেই, মৃত্যু নেই, শোক নেই, মনস্তাপ নেই, হতাশা নেই, এমনকি যেখানে পৃথিবী, জল, তেজ, বায়ু নেই। চন্দ্র-সূর্য গ্রহ নক্ষত্র-এর সংস্থান নেই, অথচ অন্ধকারও নেই। যেখানে সংসার স্রোতের গতি রুদ্ধ হয়েছে, সেই পরম অবস্থা কে নির্বাণ বলে।” কেমন জানি বেহেশত বেহেশত ভাব আছে না?????
আবার খৃষ্টানদের salvation হল ; “ salvation is stated as the saving of the soul from sin and its consequences” অর্থাৎ আত্নাকে পাপ ও পাপের ফল থেকে বাঁচানোই স্যালভেশন, অর্থাৎ বেহেশেতে যাওয়া কনফার্ম করাই হচ্ছে স্যালভেশন । কিন্তু খৃষ্টানদের স্যালভেশনের জন্য কিছুই করতে হয় না। কারন তাদের স্যালভেশন হয়ে গেছে যিশুর যন্ত্রনাভোগ ও মৃত্যুর সাথে সাথে। আসলে কিছুই করতে হয় না ব্যাপারটা ঠিক না। যা করতে হয় তাহল আন্তরিক বিশ্বাস, বিশ্বাস করতে হয় ট্রিনিটিতে আর সৎ কর্মে।
ইহুদিদের redemption হচ্ছে পুরাতন পাপ থেকে দায়মোচন। তাদের নির্বাসিত জীবনের অবসানই হচ্ছে তাঁদের রিডাম্পশন। আল্লাহ তাদেরকে তাদের নির্বাসিত জীবন থেকে প্রমিসড ল্যান্ডে ফিরিয়ে আনাই তাদের রিডাম্পসন। তারা তাদের ধর্ম মানে বলেই, বিশ্বাস করে বলেই তাদের পবিত্র ভূমির জন্য প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে যাচ্ছে। বর্তমান ইহুদিদের কোন পাপ নাই, তারা বেহেশতে যাবার জন্যই, এটাই তাদের বিশ্বাস, বরং তাদের পূর্ব পুরুষের পাপের কারনে তারা এখনও ভুগছে। আর তাদের ফাইনাল রিডাম্পশন হল কেয়ামত। এর জন্য তাদের 10 commenments মানলেই চলবে। বরং 10 commenments কে নাকি এক লাইনেও বলা যায়, যাকে তারা বলে গোল্ডেন রুল , আর এটি হল "Do unto others as you would have others do unto you" বা “অন্যের কাছথেকে যেমনটা আশা কর অন্যের জন্য সেই রকমই কর”
একটা হাদীসের কথা মনে পরে যায় এই গোল্ডেন রুলটার কথা শুনেঃ আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেনঃ তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তা-ই পছন্দ করবে, যা নিজের জন্য পছন্দ করে।
এখন নাফসুল আম্মারা হল মানুষের মজ্জাগত বা স্বভাব গত মন, এই মন মানুষকে মন্দ কাজে লিপ্ত হতে আদেশ করে। কিন্তু ঈমান, সৎ কর্ম আর সাধনার বলে মন নাফসে লাওয়ামা হয়ে যায়, নিজের মন্দকাজ ও ভুল গুলোর কারনে অনুতপ্ত হতে থাকে। কিন্তু এ পর্যায়ও মানুষ পুরাপুরি মন্দ কাজ থেকে বিরত বা বিচ্ছিন্ন হয় না। অতঃপর যখন আত্ন উন্নতির দ্বারা মানুষ সৎ কর্মে উন্নতি ঘটায়, আল্লাহের নৈকট্যলাভের জন্য যখন মানুষ শরিয়তের আদেশ-নিষেধ নিজের মজ্জাগত করে ফেলে, আর শরিয়ত বিরোধি সকল জিনিশ যখন মানুষ অপছন্দ করতে থাকে তখনই তাঁর মন নাফসুল মুতমায়িনা বা প্রশান্ত মন প্রাপ্ত হয়।
খেয়াল করলে দেখবেন গৌতম বৌদ্ধ যে দুঃক্ষকে সকল দোষের কারন বলেছেন তা আসে মানুষের মন থেকে। এই দুঃক্ষের কারন হল মানুষের অসীম চাহিদা। যতক্ষণ নিজের মধ্যে তুষ্টি আনতে পারবেন না, ততক্ষন ইসলামের আদেশ নিষেধ নিজের মজ্জাগত করতে পারবেন না, কত মানুষ ইস্কুলের ভালো থেকে ভালো ফলের জন্য সন্তানদের নামাজ বাদ দিতে শেখান, পুরা শিক্ষা জিবনেই ধর্মকে বানিয়েদেন বাহুল্যতা, আর নিজের কাজের উন্নতি, বসকে খুশি রাখা, ব্যাবসায় সময় দেয়াকে প্রাধান্য দিতে গিয়েও আমরা অনেকেই নামজকে, ধর্মকে দূরে ঠেলে দেই। নিজের চাহিদার আধিক্যের জন্য অনেকেই হয়ত যাকাত দেই না, সিনেমা দেখব বা ডেইলি সোপ দেখব বলে হয়ত কুরয়ান নিয়েই বসা হয় না। নাফসুল আম্মারা থেকে উন্নতি লাভ করে নাফসুল লাওয়ামাতেই হয়তো পৌছাতে পারবেন না, আর নাফসুল মুতমায়িনাতো অনেক দূরের ব্যাপার। যতক্ষণ নিজেকে শুদ্ধ করতে পারবেন না, সফল হতে পারবেন না, ততক্ষন আসলে নির্বাণ লাভ করতে পারবেন না।
নির্বাণ লাভ করার জন্য শুদ্ধতা লাভ করের জন্য প্রশান্ত মন তথা নিজের মনের শান্তি অর্জন করতেই হবে। নিজের মনের শান্তি অর্জন করতে হলে মনের দুঃক্ষ দূর করতে হবে, আর মনের দুঃক্ষ দূর করতে হলে আত্নতুষ্টি অর্জন করতেই হবে।
আসসালামুয়ালাইকুম!!
দ্রষ্টব্যঃ নির্বাণ আর স্যালভেশনের সংজ্ঞা আর গোল্ডেন রুল উইকিপিডিয়া থেকে কপি পেষ্ট করা