মিনিস্কার্টের ৫০ বছর
মিনিস্কার্ট এমনই এক বস্তু, যা ৫০ বছর আগেও মানুষের নজর কেড়েছে এবং আজও কাড়ে৷ নন্দনতত্ত্বে নারীদেহের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা আর যৌন আবেদনের মধ্যে যতোটুকু ফারাক, মিনির ক্ষেত্রেও ঠিক ততটা৷ দেহ একই থাকছে, বাড়ছে কমছে শুধু হেমলাইন৷
উদ্ধৃতি চিহ্ন’
মিনির মজাই হলো, তা যা অবারিত রাখে, অর্থাৎ সুন্দর, সুডৌল পদযুগল৷ আবার তা অবলীলাক্রমে এমন একটা নান্দনিক পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে, সমালোচনা করার মতো আর কিছু থাকে না – নাকি থাকে?
টুইগি’
খড়কুটোর মতো পাতলা হাত-পা-ওয়ালা এই মডেলটিকে আজও লন্ডনের সুইঙ্গিং সিক্সটিজ-এর প্রতীক বলে মনে করা হয়৷ আসল নাম লেসলি হর্নবি৷ পরবর্তী জীবনে অভিনয়ও করেছেন৷ আজও তাঁর ছবি দেখলে মনে হয়, টুইগি রক্তমাংসের মানুষ নন, তিনি একটি ফ্যাশন স্টেটমেন্টের থেকেও বড় – তিনি জীবন সম্পর্কে একটি মন্তব্য৷
মেরি কোয়ান্ট
লন্ডনের চেলসিতে ‘বাজার’ নামধারী একটি ফ্যাশন বিপণী চালাতেন মেরি কোয়ান্ট৷ পঞ্চাশের দশকের শেষেই আরো ছোট স্কার্ট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন, যা পর্যবসিত হয় ১৯৬৪ সালে তাঁর যুগান্তকারী সৃষ্টিতে: মিনিস্কার্ট৷ এই কাহিনির প্রামাণ্যতা নিয়ে হালে দ্বিধা দেখা দিয়েছে৷ কিংবদন্তী বলে, মেরি নাকি তাঁর প্রিয় মোটরগাড়ি, অস্টিন মিনির নামে খাটো স্কার্টটির নামকরণ করেন৷ এখানে মডেলদের সঙ্গে মেরি কোয়ান্ট (ডানদিকে)৷
হাই আর্ট
মিনিস্কার্ট ছিল স্ট্রিট ফ্যাশন, ষাটের দশকে লন্ডনের মেয়েরা খাটো স্কার্ট পরতে শুরু করে: মেরি কোয়ান্ট নিজেই এ কথা বলেছেন৷ কয়েক বছরের মধ্যেই সেই রাস্তার ফ্যাশন ‘ওৎ কুতুর’, অর্থাৎ হাই ফ্যাশনে পৌঁছে যায়৷ শুধু তাই নয়, স্বয়ং ফ্যাশন গুরু ইভ স্যাঁ লরাঁ তাঁর সুবিখ্যাত মন্ড্রিয়ান ড্রেসটিকে মিনি ড্রেস-ই করেছেন৷ পিয়েট মন্ড্রিয়ান ছিলেন বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের এক ওলন্দাজ চিত্রশিল্পী৷
গ্লোরিয়া স্টাইনেম
নারীবাদের প্রথম পর্বে যাঁরা নারীদের হয়ে কলম ধরেছিলেন এবং সোচ্চার হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে পড়েন জার্মেইন গ্রিয়ার এবং গ্লোরিয়া স্টাইনেম৷ এঁরা কিন্তু ষাটের দশকে মিনিস্কার্টকে নারীমুক্তির প্রতীক হিসেবে গণ্য করতেন এবং উভয়ে মিনিস্কার্টও পরেছেন৷
শাকিরা
কলম্বিয়ার এই গায়িকা বিশ্বজয় করেছেন গান গেয়ে৷ মঞ্চে তিনি যখন তাঁর শো দেন, তখন পঞ্চাশ বছরের পুরনো ফ্যাশান স্টেটমেন্ট মিনিস্কার্টকে বাদ দেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না৷