তালা নিয়া দেখলাম ম্যালা কথা চালাচালি হইতাছে। তেনারা একবার কয় কারো বেডরুমের পাহারা দিবার পারবো না আবার আরেকজনে কয় ঈদে বাড়ি গেলে ঘরে তালা লাগিয়ে যাইতে ।তেনাদেরকে কাউন্টার দিতে আরেকজনরে কইতে দেখলাম ঈদের আগে উপদেষ্টাদের জবানে তালা দিতে ....পুরা চারিদিকটা তালাময় হয়ে গেছে।যাইহোক,শুধু ঘরে তালা দিলে তো হবে না,চোর-ডাকাত ঘরের তালা ভেংগে ঘরে ঢুকতে পারবে। বেশী নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে নিজের ব্যক্তিগত জিনিসপাতিগুলানরেও যদি তালা দিয়ে ঈদে কিংবা বছরের বাকি সময়টা নিশ্চন্তে কাটানো যায় তাইলে মন্দ কি। চোরব্যাটায় ম্যালা কসরত কইরা ঘরে তালা ভাংগা যদি ঘরে ঢুকে দেখে কম-বেশী সব জিনিসে তালা দেওয়া তাইলে সিউর থাকেন চোরের মাথা খারাপ হইয়া যাইবো। এরপরে ধরেন আত্মীয়-স্বজনরা কিংবা বাসায় কেউ বেড়াতে আসলো নিজের পছন্দের জিনিসগুলা যদি বাপ-দাদার সম্পত্তি মনে করে ব্যবহারের পরে ও এক্কেবারে নিয়া যাইবার পায়তারা করে তখন এমন অবস্হায় হয় না পারি সইতে,না পারি কিছু কইতে। ভেবেচিন্তে দেখলাম কিছু কিছু ব্যাপারে তালা দেওয়াটা অতীব জরুরী কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে.....
**
কম্পুতে তালা দিবার এমন সিস্টেম থাকলে সবচেয়ে ভালা হয়। একজন আরেকজনের কম্পু ব্যবহার করে কোন সমস্যা নাই। মেজাজ খারাপ হয় যখন দেখি ফোল্ডারগুলা এমনি এমনি ঘাটাঘাটি করে
**
নিজের ব্যক্তিগত মগ কাউরে ব্যবহার করতে দিতে মন চায় না ।
গতবছর এক আহাম্মকরে শখ করে মগে পেইন্ট করিয়ে গিফট করলাম। সেই আহাম্মক মগ আরেকজনরে ব্যবহার করতে দিছে...শুনে এত রাগ হইছে যে মনে হয়েছে ঐ আহাম্মকের মাথায় মগ দিয়া বারি মারি। মগে তালা দেওন গেলে শান্তিতে তালা দিয়া বাইরে কাজে যাইতে পারবো। কেউ নিজের পছন্দর মগ দিয়া চা-কফি খাইবো সেই ভয়ে পোলাপাইনের মতন আর কতদিন মগ লুকাইয়া রাখবো
**
জব করার সময় সাথে কাজ করত রনির কঠিনতম ধারণা ছিলো ছেলেরা মেয়েদের ব্যাগ সুযোগ পেলেই ঘাটাঘাটি করে। এজন্য সে বাইরে যাক,খেতে যাক,ডেস্ক ছেড়ে কিছুক্ষণের জন্য উঠলেও ব্যাগটা সাথে করে নিয়ে যাবেই। এমনিকি টয়লেটে গেলে ও ব্যাগ সাথে যাবে। তার এমন স্বভাবের কথা জেনে সাথের ভাইরা তার ব্যাগ পুরা একদিন লুকাইয়া রাখছিলো। সেদিন তার অবস্হা হইছিলো দেখার মতন। ব্যাগের শোকে কাজ বাদ দিয়া খালি বড় বড় দীর্ঘশ্বাস ছাড়ছে আর রাগে ফোঁসফোঁস করছে। সাপের মতন ফণা থাকলে ছোবল মারত সিউর। আমি অবশ্য পিচকাদের ভয়ে তালা দিবার চাই। পিচকারা ভাবে ব্যাগে চকলেট থাকে,ব্যাগে সেটা না পাইলে সামনে যা পায় নিয়া যায়। একবার মামাত ভাই এটিএম কার্ড নিবার পায়তারা করছিলো
**
আমাগো সাধের গয়নাগাটি যখন দুশমনরুপী দোস্তরা নিবার চায় তখন চিল্লাইয়া গলা ছাইড়া কান্তে মন চায় আর মনে মনে নন-স্টপ গালি দিতেই থাকি।
প্রিয় দুশমনসখী কণা চালাকি করে এসব জিনিস নিয়া যায়। চাইলে যদি টালবাহানা করি..। এজন্য তার কিছু পছন্দ হলেই দেখে গলায় কানে পরে বসে থাকবে। তারপর উদাসভঙ্গিতে ডায়লগ দিবো "আমারে তো ভালোই মানাইছে।একদিন পরে ফেরত দিমুনে" ...সেই জিনিস কোনকালেই আর আসে না
**
আগে শুনতাম চোখের আড়াল হলেও নাকি মনের আড়াল হয় না। আজকালকার পোলাপাইন ডেটিং কইরা দুইজনে বাসে কিংরা রিক্সায় উঠতেই দেখি চোখ আর মন দুইটারই একসাথে আড়াল হয়ে যায়। এরপর ফোন বের করে আরেকজনের সাথে হাই জানু নয়তো হাই হানি করতে করতে পরবর্তী ডেট ফিক্সড করে।হৃদয়ে যদি তালা মারন যায় তাইলে সিরিয়াস টাইপের বিএফ,জিএফরা শান্তিতে থাকতে পারবো
**
আই হেইট টম বদ। তারে সাইজ করতে এমন ছোটখাট জিনিসপাতি সবসময় কাছে রাখতে হয় আর চেতাইলে এটা নিয়া দৌড়ানি মারি।
যারা জেরীর মতন টমরে সাইজ করতে এমন পিস্তল নিয়া ঘুরেন তাদের অগোচরে কেউ যাতে পিস্তলটা মারিং কাটিং না করে সেজন্য তালা দিয়া নাকে তেল দিয়া এইবার ঘুমান
**
দেশে তো ইভটিজারের অভাব নাই।সব দোষ তাদের চোখের। চোখের সংযম করতে পারে না বলেই ইভটিজিংরে ডেইলি ভাত খাওয়েনের মতন আরেকটা কাজ মনে করে।
এখন কয়েকটারে ধরে যদি শাস্তিস্বরুপ চোখে তালা দেওয়া যায় তখন তাদের দেখে যদি কচিকাঁচা ইভটিজারগুলা সাইজে আসবে।
**
মুখ হলো মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু। একবার মুখ ফসকাইয়া বেফাঁস কথা বলা আর পিস্তলের মুখ থেকে গুলি বের হয়ে যাওয়া নাকি সমান। যাদের কোনটারেই ফিরাইয়া আনা অসম্ভব। একদম পোস্টের প্রথমে যাদের কচকচানির লিংক দিলাম তাদের জন্য এবং দেশের ভালোর জন্য সময়ে সময়ে তাদেরকে এমন করে মুখে তালা দেওনের সিস্টেমে রাখলে ভালো।
আমাদের আমজনতার মুখেও সময় বুঝে নিজেই নিজের তালা দেওয়ার ব্যবস্হা করা দরকার,বিশেষ করে সমালোচনা করার সময়। অনেক সময় কোন একটা ইস্যু পাইলেই হলো বুঝে না বুঝে লাফাইতে থাকি আর বকবক চলতেই থাকে।এখন যদি কোন মানুষ মরেও যায় তবুও আমাদের মুখ আর থামে না।যেটার প্রমাণ কয়েকদিন আগে ব্লগে ভালোই দেখলাম।
....................................................................................
আসছিলাম খালার তালা দেওনের কথা শুনে নিজের কিছু গীবত গাইতে। কিন্তু রান্ধনের টাইম হইয়া গেছে। খালার তালা নিয়া গেজাইলে তো আর পেটে খাওন পড়বো না। নিজের হাত আর কি-বোর্ডের গলায় তালা দিয়া রান্ধনের কাজে গেলাম। যাবার আগে মিনি কোবতে লিখতে মন চাইলো ....................
মারো ঘরে তালা
ছুটি কাটাও ভালা
কইছেন আমাগো খালা