বিডি সাইক্লিস্ট গ্রুপে থাকলেও আমি নামমাত্র মেম্বার। ফজরের আযানের সময় ঘুম থেকে উঠে রাইড দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব না, সাইকেল যতোই ভালোবাসি না কে্নো... নিদ্রাদেবী ইজ মোর প্রেফারেবল টু মি!
চাকরীর সুবাদে ঢাকা ছেড়ে রংপুর এসেছি প্রায় ৯ মাস হলো। ইদানিং আমার নামাজী রুমমেটের কল্যাণে মাঝে মাঝেই ফজরের নামাজ পড়া হয়। গতমাসে সাইকেল টাও কুরিয়ারে করে আনিয়ে নিয়েছি। তাই গত শুক্রবার সাইকেল নিয়ে বের হয়েছিলাম ফজরের নামাজের পর। রুট- রংপুর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যেখানে মন চায়। তো ব্যাঙ্কের উল্টোদিকে বুড়িরহাট রোড দিয়ে শুরু করলাম চালানো। ভোরের মৃদুমন্দ হাওয়ায় সেই রকম লাগছিল...যেতে যেতে গ্রাম বাংলার সৌন্দর্য অবলোকন করে নিজেকে তারিফ করছিলাম ভোরে ওঠার সিদ্ধান্তটা নেয়ায়!
অনেক দূর (আমার জন্য সাড়ে তেরো কিলোমিটার অনেকই বটে!) সাইক্লিং করে টায়ার্ড লাগায় রাস্তার পাশে এক দোকানে বসলাম চা খেতে। কিন্তু চা পেলাম না। দেখা হলো অফিসের এক কর্মচারীর সাথে। আমাকে দেখে উনি চা খেতে আমন্ত্রন জানালেন। কিন্তু ওখানে চা না পাওয়ায় উনি চকোলেট অফার করলেন! কিন্তু চকোলেট এর মাঝে বাচ্চা বাচ্চা ভাব থাকায় ধন্যবাদের সাথে ফিরিয়ে দিয়ে ওনার কুশলাদি জিজ্ঞেস করলাম। জানালেন ওনার বাসা অফিস থেকে ১৯ কিমি দূরে আর প্রতিদিন উনি ১৯*২=৩৮ কিমি সাইকেলে যাতায়াত করেন! আমি তো পুরাই গর্তে লুকাই অবস্থা! :-
#সেখান থেকে আরো একটু আগিয়ে এক বাজারে পেলাম চায়ের দোকান। গাভীর দুধের চা! এক কাপ নিয়ে যোগ দিলাম অন্যান্য চা-পায়ীদের মজলিশে। আমার সাইকেল দেখে ওনাদের আলোচনা বদলে গেলো। শুরু হলো সাইকেলের ডিজাইন আর দাম নিয়ে আলোচনা। ফিনিক্স সাইকেল এর চেয়ে দাম বেশি এখনকার খেলনা সাইকেল গুলোর (মাউন্টেইন বাইক) সেটা নিয়ে ওনারা বরং অবাক। আমাকে জিজ্ঞেস করলো আমার সাইকেলের দাম। বলার পর অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন এতো কেনো? অনেক কিছুই ব্যাখ্যা করলাম, যদিও সব ওনাদের মনোপুত হয়নি (আমার নিজেরই মনোপুত হয়নি, ওনাদের কেমনে হবে! ) । চা খেয়ে রওনা দিলাম ডরমিটরীর উদ্দেশ্যে। বাতাশ খেতে খেতে প্রায় সোয়া ঘন্টা পর পৌছলাম ধাপে, আমার ডরমিটরীতে। সেরাম একটা সাইক্লিং হলো সাড়ে ছাব্বিশ কিমি... ভাবছি এখন থেকে প্রত্যেক সপ্তাহেই এরকম ট্রুর দিতে হবে। আছেন নাকি রংপুরের কেও... হয়ে যাক একদিন?