পড়ালেখার জন্য অনেক পরিচিত বন্ধুবান্ধবকে দেশের বাইরে যেতে দেখে মাঝে মাঝে আফসোসই হতো. আহা রে ..যদি আমি যেতে পারতাম! ঘুরাঘুরি নিয়ে নিজের প্রবল আগ্রহের কারণে বিদেশের বিভিন্ন স্থানের চোখ জোড়ানো, মন ভোলানো রুপ দেখে যারপরনাই ইর্ষান্বিত প্রতি মুহূর্ত. লক্ষ্য যার ঘুরে বেড়ানো তার জন্য দূর থেকে দেখা এসব কিছু বড়ই কষ্টের বটে!
সিদ্ধান্ত নিলাম দেশের বাইরেই যাই. অন্তত একটা মাস্টার্স ডিগ্রী হলেও খারাপ না. বিদেশের ডিগ্রী থাকলে হয়তো কোনো উন্নয়ন সংস্থাতে কাজ পাওয়া যেতে পারে. আর সংবাদকর্মী হয়ে কাজের সুযোগ, সেও হয়তো থাকবে. কিন্তু ভাবলেই তো হয় না. বিভিন্ন স্থানে আবেদন করলাম, একটা হয় তো আরেক টা হয় না, কিছু হয় তো কিছু হয় না. যেমন- স্কলারশিপ হলো না, কিন্তু ভর্তি হওয়া গেলো. আবার স্কলারশিপ হলো , কিন্তু অর্ধেক.
এমন হাজারো সমস্যার পরে ঠিক করলাম এমন স্থানে যাই যেখানে অন্তত টিউশন ফি লাগবে না, স্কলারশিপ না পেলেও যাতে তেমন সমস্যা না হয. তো কোথায় পাই, কোথায় পাই, ঠিক করা হলো- অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন ও নরওয়ে।
অস্ট্রেলিয়ার ভর্তি, স্কলারশিপ সব হইলেও সমস্যা দেখা দিলো যখন বললো, স্কলারশিপ দেড় বছরের কোর্সের খরচের অর্ধেক কভার করবে. তো চিন্তা ভাবনা করে সেটা বাদ. সুইডেনে স্কলারশিপ হলো না, ভর্তি হওয়া গেলো. নরওয়েতে অসলোতে ভর্তি হওয়া গেলো কিন্তু স্কলারশিপ নাই.
এর মাঝে একদিন ভাবলাম, নরওয়ে, সুইডেন যেহেতু একইসাথে আছে , তাহলে ফিনল্যান্ড এ একটা সুযোগ নিয়ে দেখা যাক. আবেদনের পর আরো খবর নিয়ে দেখলাম, এখানে অন্য গুলার তুলনায় একই অবস্তার বিবেচনায় ভালো থাকা সম্ভব. হাজার হ্রদ, ক্রিসমাস, সান্তা ক্লস এমন আরো অনেক কিছু তখন একইসাথে কিছুটা রসদ যোগান দিলো. করলাম.
কাহিনী সেই একই. ভর্তি হওয়া গেলো , স্কলারশিপ জাতীয় কিছু নাই. অনেক চিন্তার পর ভাবলাম একবারে উত্তর মেরুতে যেহেতু যাচ্ছি, সুতরাং একেবারে সর্ব উত্তরে যে বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সেখানেই যাই. টিকে গেলাম. এরপর থেকে এখানো এখানে....
(চলবে) দু বছর আগে, শীতের প্রথম দিন, তুষার পরার সময়.
প্রথম ছবি: ফিনল্যান্ড আসার দ্বিতীয় সপ্তাহ, আমার ঘরের প্রবেশ পথ
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৭