somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দি ফল: মিথ নির্ভর চমৎকার মুভি

১৮ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সবারই কম বেশি বন্ধু আছে। একেক জন বন্ধু একেক রকম। বিভিন্ন কারনে বন্ধু তৈরি হতে পারে। এক সাথে পড়া-লেখা করার কারনে, খেলাধূলার কারনে হতে পারে। আবার এমনকি গল্প বলার কারনেও দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বের সৃষ্টি হতে পারে।

এখন এ বন্ধুত্বের স্থায়ীত্ব কেমন হতে পারে। অনেক সময়ই হয় ক্ষণস্থায়ী। এর কারন যে কোন বিষয়ে আদান-প্রদানের কারনে হতে পারে। বা অন্য কারনেও হতে পারে। কোন আদান-প্রধান ছাড়াও বন্ধুত্ব হতে পারে। যেমন হতে পারে শুধু গল্প বলার মাধ্যমে। এবং এটা খুব গভীরও হতে পারে।
এই ধরনের একটি থিমকে নিয়ে ২০০৬ সালে তৈরি হয়েছে চমৎকার একটি মুভি। তবে পূর্বে ফ্রেন্ডশীপের উপর অনেক ভালো ভালো মুভিও তৈরি হয়েছে। যেমন সিনেমা পেরাডিসো, ডেড পয়েট সোসাইটি। এসবই খুব ভালো লাগার মুভি। যখনই আমরা ফ্রেন্ডশীপের উপর মুভি নিয়ে আলোচনা করি তখন এ মুভিগুলোর নাম সবার আগে চলে আসে। এবং মুভিগুলো দেখে অনেকে কান্নার কথাও বলেন।

তবে এ মুভিগুলোর সাথে দি ফল মুভিটির পার্থক্য আছে। সেগুলো ছিলো রিয়েলিস্টিক স্টোরি নির্ভর। কিন্তু দি ফল মুভিটি হলো মিথ নির্ভর। স্টোরি টেলার এবং শ্রোতা উভয়েই স্টোরির মধ্যে ঢুকে পরেন। পাচ বছরের মেয়ে আলেকজান্দ্রীয়া। কমলা গাছ থেকে পরে হাত ভেংগে হসপিটালে ভর্তি হয়। অন্যদিকে পাশেই আরেকটি রুমে পা ভেংগে একই হসপিটালে ভর্তি হয় রয় ওয়াকার। আলেকজান্দ্রীয়া প্রতিদিন রয়ের কাছে স্টোরি শুনতে যায়। এক পর্যায়ে সেই স্টোরিতে ঢুকে যায় হসপিটালের নার্স এভালিন, পাসের রোগী এবং তারা দুজন। স্টোরি চলতে থাকে। এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গিরা নিহত হতে থাকেন। একদম শেষ পর্যায়ে স্টোরি টেলার নিজিও মারা যাচ্ছিলেন। কিন্তু আলেকজান্দ্রীয়া কাদতে থাকে। সে রিকোয়েস্ট করে রয় যাতে মারা না যায়। পরে অবশ্য রয় আর মারা যায় নি। এখানে অনেকেরই ঔপনাসিক এবং নাট্যকার হুমায়ুন আহমেদের নাটক কেউ কোথাও নেই এর কথা মনে পড়বে। যারা তখন নাটকটি দেখেছেন তারা যানেন নাটকের একপর্যায়ে বাকের ভাইয়ের ফাসির রায় হয়। তখন নাটকটি এতোই জনপ্রিয় ছিলো যে বাকের ভাইয়ের ফাসি ঠেকানোর জন্য ঢাকায় রাজপথে মিছিল পর্যন্ত হয়েছিলো। আসলে কিছু কিছু নাটক বা মুভি মানুষকে এমনভাবে আচ্ছন্ন করে রাখে যে তারা আসলে কল্পনাকে রিয়ালিটির সাথে মিলিয়ে ফেলেন। এসবই বলতে গেলে একজন ডিরেক্টরের ক্যারিশমা। তবে দি ফল মুভিটিতে বাকের ভাইয়ের পরিনতি রয়কে গ্রহন করতে হয়নি।

মুভিটি এক নিশ্বাষে দেখে শেষ করা যাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। প্রতিটি সিকোয়েন্সই দর্শককে টানবে। মুভিটির বেশিরভাগ দৃশ্যই ইনডিয়ার জয়পুরে ধারন করা হয়েছে। ইনডিয়ার কথা মুভিটিতে এসেছে অনেকবার। বয়সের পার্থক্য থাকলেও দুজনের মধ্যে ফ্রেন্ডশীপের টান ছিলো খুবই গভীর।

মুভিটির লোকেশন ছিলো চমৎকার। লোকেশনগুলো মুগ্ধ করতে সক্ষম হবে। স্টোরির ধারাবাহিকতায় মিল ছিলো। তাই মুভি দেখতে গিয়ে কখনই খেই হারানোর সম্ভবনা নেই। মুভিটিতে ছোট মেয়ে আলেকজান্দ্রীয়ার পার্ফমেন্স ছিলো দূর্দান্ত। অন্যদের পারফর্মেন্সও ভালো ছিলো।

যারা স্টোরি শুনতে পছন্দ করেন তারা স্টোরি শুনার জন্য কি করতে পারেন তাও এই মুভিটিতে এসেছে চমৎকারভাবে। এই ঘঠনাগুলো অবশ্যই আনন্দ দিবে। তবে মুভিটিতে পূর্বের দাস প্রথাও মুভিতিতে এসেছে। এবং এদের যে কি করুন লাইফ ছিলো তা দেখানো হয়েছে। মুভিটি টরেন্টু ফিল্ম ফেস্টিভালে ৯ সেপ্টেম্বর ২০০৬-এ রিলিজ দেওয়া হয়। মুভিটি রিলিজ পাওয়ার পর এখনও আইএমডিবি-র রেটিং-এ স্কোর হলো ১০ এর মধ্যে ৮। মুভিটি এপর্যন্ত তিনটি পুরস্কার এবং দুইটি নমিনেশন পেয়েছে। অ্যাডভ্যানচার, ড্রামা, ফ্যানটাসি নির্ভর মুভিটির ডিরেক্টর তার্সেম সিং। এতে অভিনয় করেছেন ক্যাটিংকা আতারো, জাস্টিন ওয়াডেল, লী প্যাস।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×