পর্ব ২
পর্ব ১
রাইট শেয়ার আর স্প্লীট শেয়ারের তেলেসমাতি
নতুন বিনিয়োগকারীদের ধরা খাওয়ার একটা বড় জায়গা হচ্ছে রাইট শেয়ার আর স্প্লীট শেয়ারের লোভ। এই দুই জায়গা থেকে অবশ্যই লাভের সুযোগ আছে কিন্তু না বুঝে লাফিয়ে পড়লে পরে পস্তাতে হয়।
সোজা ভাবে দেখলে রাইট শেয়ার মানে ডাবল লাভ (যদি ১:১ রাইট শেয়ার ইসু করে)। যেমন ইউসিবিএল রাইট ইসু করছে ১:১। শেয়ারের দাম এখন ২২০ টাকার মত। আপনি প্রতি শেয়ারের জন্য আরেকটা শেয়ার পাচ্ছেন। আপনার কেনা পড়বে ৫ টাকা প্রিমিয়াম সহ ১৫ টাকা কিন্তু আপনি বেচতে পারবেন ঐ ২২০ টাকাতেই। আচ্ছা, ধরলাম রাইট দেয়ার পর দাম কমবে। ঠিক আছে, ১৫০ টাকাও যদি হয় তাহলেও তো প্রতি শেয়ারে ১৩৫ টাকা লাভ
কিন্তু না, হিসাবটা এত সোজা না। ইউসিবিএল রাইটের ঘোষণা দিয়েছে এ বছরের অক্টোবরে। তারপর ইজিএম এ এটা এপ্রুভ হইছে। এরপর এসইসি এপ্রুভাল দিবে। তারপর কোম্পানী একটা রেকর্ড ডেট ঘোষণা করবে। তারও পরে রাইট শেয়ার আপনার একাউন্টে জমা হবে। পুরা জিনিসটা শেষ হতে ৬ মাস থেকে ১ বছরও লাগতে পারে। কাজেই আপনি যদি এর মাঝে কোন সময়ে শেয়ারটা কিনে চুপ করে বসে থাকেন সেটা আপনার অপরচ্যুনিটি কস্ট। কারণ এর মাঝে শেয়ারবাজারে আপনি বিভিন্ন খেলা খেলতে পারতেন। উদাহরণ হিসেবে ফুওয়াং ফুডের কথা বলি। ফুওয়াং ফুডের রাইটের ঘোষণা এসেছিলো ফেব্রুয়ারী ২০১০ এ। এসইসির এপ্রুভাল হইলো ডিসেম্বরে। রেকর্ড ডেট ১৯ জানুয়ারী ২০১১। আপনার একাউন্টে যাইতে যাইতে ফেব্রুয়ারী ২০১১, মানে পাক্কা ১ বছর। এখন গত ফেব্রুয়ারীতেই যারা ঘোষণা শুনে শেয়ার কিনে রাখছে তাদের কিন্তু পুরো ১ বছর এটা ধরে রাখতে হলো। অবশ্য এর কম সময়েও পুরো প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার রেকর্ড আছে।
তাহলে শেয়ার কিনবেন কখন? আমার মতে একেবারে প্রথম দিকে যখন ব্যাপারটা গুজবের পর্যায়ে থাকে কিংবা ঘোষণা আসার একেবারে সাথে সাথে। তারপর কিছুদিন পরে বেঁচে দিতে পারেন। তারপর রেকর্ড ডেটের কাছাকাছি সময় আবার কিনতে পারেন যদি ইন্টারেস্টেড থাকেন।
স্প্লীট শেয়ারের ব্যাপারটা আমার কাছে একটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছু মনে হয়না। স্প্লীটের ঘোষণা থাকলে শেয়ারের দাম বাড়ে কিন্তু এই দাম বাড়ার যৌক্তিক কোন কারণ নেই। তবে যেহেতু দাম বাড়ে তাই আপনি শেয়ার কিনতে পারেন। তবে সময় মত ছেড়ে দিতে হবে।
স্প্লীটের রেকর্ড ডেটের এক সপ্তাহ আগে কোন ভাবেই শেয়ার কেনা ঠিক হবেনা। এর আগে শেয়ার কিনে থাকলে রেকর্ড ডেটের ৪/৫ দিন আগে ছেড়ে দেবেন। কারণ রেকর্ড ডেটের আগের ২ দিন স্পট মার্কেটে লেনদেন হয়। আর স্পটে যাওয়ার আগের দিন শেয়ারের দাম পড়ে যায়। রিসেন্টলি ৩টি কোম্পানীর ক্ষেত্রে একই কাহিনী ঘটতে দেখলাম- ইউসিবিএল, উত্তরা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক।