আমার বই পড়া নিয়ে কথাবার্তা খুব বেশী লোক পড়ে না সেটা আমার জানা ছিলো। কিন্তু যারা পড়ে তারা যে কতটা আন্তরিকতা নিয়েই পড়ে সেটা জানা ছিলোনা। তাই ব্লগার কায়কোবাদের এই পোস্টটা পড়ে বেশ অবাক আর সেই সাথে কিছুটা শরমিন্দাও হলাম।
Click This Link
তাই অনেকদিন পর আবার লিখতে বসলাম বই পড়ার আপডেট। ব্লগার তায়েফ আহমাদ মাঝে মাঝে অনুযোগ করতেন বাংলা বই পড়িনা বলে। তাই এবার একটি বাংলা বইয়ের কথাও থাকছে আপডেটে।
প্রথম যে বই নিয়ে লিখবো সেটা একটা ছোট গল্পের সংকলন। 'দেশ এর গল্প' ২০০৫- ২০০৭। সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকায় ২০০৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত যাবতীয় ছোটগল্পের একটা বিশাল সংকলন। কিনেছিলাম নীলক্ষেত থেকে, সম্ভবত: ২ বছর আগে। তারপর থেকে পড়ছি তো পড়ছি। একটা গল্প শেষ করে ২/৩ দিন পর আরেকটা পড়ি। মাঝে মাঝে একটানা ৩/৪ টাও পড়া হয়। অবশেষে গত মাসের মাঝামাঝি পুরো সংকলন শেষ হলো।
পড়ার অনুভূতি অসাধারন। বেশীর ভাগ গল্পই অত্যন্ত ঠাস বুনোটে লেখা। বাহুল্য নেই বললেই চলে। প্রত্যেকটা গল্পেরই একটা পরিণতি (বা অপরিণতি) আছে, হুমায়ূন আহমেদের মত কলমের টানে লিখে যাওয়া নয়। পড়ার পর একটু হলেও মনটাকে ভাবায়। একটা গল্পের কাহিনী বলি। উল্লাস মল্লিকের 'মেজকাকার অসুখ'। ৫ বন্ধুর একজন অরুণাভ কিন্তু পড়ালেখায় বা অন্য সবকিছুতে সব থেকে পিছিয়ে পড়া। বন্ধুরা সবাই ভাল ভাল চাকরী নিয়ে, ভাল বিয়ে করে জীবনের পথে যখন তড়তড় করে এগুচ্ছে অরুণাভ কেবলি খাবি খায়। মাঝে মাঝে করুণ মুখে বন্ধুদের কাছে ধার কর্যও করে। একবার সবাই মিলে মাঝারি অংকের কিছু টাকা দিলো অরুণাভকে ব্যবসা করার জন্য। কিন্তু দুদিন পরে সেই ব্যবসায়ও লালবাতি। লজ্জায় আর মুখ দেখাতে পারেনা অরুণাভ। বন্ধুরাও হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। যাক, আর কোনদিন জ্বালাতে আসবেনা।
কিন্তু হঠাৎ একদিন খবর এলো অরুণাভ ফ্ল্যাট কিনেছে অভিজাত এলাকায়। সবার বুকেই জ্বলে উঠলে ঈর্ষার আগুন............
এরপরের বইটি ইংরেজী, ক্লাইভ কাসলারের লেটেস্ট বেস্ট সেলার 'লস্ট এম্পায়ার'।
মাত্রই শেষ করলাম কাল রাতে। ২ সপ্তাহ ধরে ৫/১০ পৃষ্ঠা করে পড়ছিলাম, কাল দিন-রাত মিলিয়ে একেবারে ১০০ পৃষ্ঠা থেকে শুরু করে ৩৩০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত শেষ করে ঘুমাতে গেলাম। কাসলারের সব বইতেই ঐতিহাসিক কিছু ব্যাপার স্যাপার থাকে। এই বইয়ের বিষয়বস্তু হচ্ছে মেক্সিকোর অ্যাজটেকদের পূর্ব পুরুষেরা কোথা থেকে এসেছিলো।
রহস্যের সমাধানে বইটি আমাদের নিয়ে যায় আফ্রিকার তানজানিয়া, মাদাগাস্কার এবং সবশেষে ইন্দোনেশিয়ায়। উনিশ শতকের সিক্রেট এক সার্ভিস এজেন্ট আর তার প্রাণপ্রিয় স্ত্রী ওফেলিয়া। সাথে ওফেলিয়া নামের এক রহস্যময় জাহাজ যেটায় করে সিক্রেট সার্ভিস এজেন্ট হেনরি এক যুগ ধরে খুঁজে বেরিয়েছেন এক অজানা গুপ্তধন। অন্যদিকে একই গুপ্তধনের খোঁজ করছে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের বিশ্বস্ত সৈনিক রিভেরা। পদে পদে অসংখ্য বিপদের মোকাবেলা করে ঠিকই লক্ষ্যে পৌছে ট্রেজার হান্টার দম্পতি স্যাম আর রেমি ফার্গো।