এথানে বলে রাখা ভাল আমি অনেক খুটিনাটি বিষয় আলোচনা করব যেটা হজ্ব সংক্রান্ত কোন বই পুস্তকে পাওয়া যাবেনা। যারা এবার বা পরে কখনো হজ্বে যাবেন তারা যেন সামান্য উপকার পান সেটাই আমার চাওযা। অনেক দিন থেকেই এই কাজটা করবো করবো বলে করা হচ্ছেনা। কাল রাত থেকে জ্বর, অফিসে যেতে পারিনি। শুয়ে বসে সময় কাটছে, ভাবলাম ভাল কিছু করি.....
কি কি নেবেন সাথে
অনেকে লাগেজ বোঝাই করে জিনিস পত্র নিয়ে যায়। কিন্তু নিত্য ব্যবহারের জিনিস পত্র ছাড়া (যেমন ব্রাশ, কাপড় চোপড় ইত্যাদি) অন্য কিছু নেয়া উচিত নয়। ওষুধ ছাড়া সব কিছুই ওখানে সুলভে পাবেন। মনে রাখবেন, আপনার এই লাগেজ নিয়ে অনেক পথ আপনাকে পাড়ি দিতে হবে (২ বিমান বন্দরে, হোটেলে উঠার আগে ইত্যাদি)। তবে একটা ক্যামেরা নিতে পারেন কারণ হজ্ব মাত্র ৭ দিনের, এর পর প্রায় ২০-২৫ দিন আপনি অনেকটা ট্যুরিষ্টের মত। তবে যারা উৎসাহী নন, তাদের কথা আলাদা। আমি ক্যামেরা নেই নি, কারণ কাবার ভেতর ছবি তোলা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি কিন্তু পরে আরো অনেক জায়গায় গিয়েছি যেখানে ফটো তুলতে খুব ইচ্ছা করছিল।
বিমান বন্দরে
আমি বিমান বন্দর পৌছাই ৮ টার দিকে আমার ফুফাত ভাইয়ের গাড়িতে। সাথে ছিল বাবা, মা, ছোট বোন, ছোট ভাই আর এক খালাত বোন। আমার এজেন্সির নাম ছিল এয়ার পীস ইন্টার ন্যাশনাল। ওরা টাকা নিয়েছিল ১ লাখ ৮৫ হাজার। এজেন্সির ব্যাপারে পরে আরো বিস্তারিত বলব। আপাতত এটুকু বলি ওরা এক এক জনের কাছে এক এক রকম টাকা নেয়।
আমাদের এজেন্সীর মাধ্যমে হজ্বে যাচ্ছিল প্রায় ৮০ জন মানুষ। এদেরকে মোটামুটি ৩ ভাগে ভাগ করা যায়- প্রথমত ঢাকার ওয়ারী এলাকার কিছু মানুষ যাদের অনেকেই ফ্যামিলি নিয়ে যাচ্ছিলেন, এদের মধ্যে ২/৩ জন তরুণ ছিলেন আমার বয়সী। তাদের মধ্যে আবার একজন ছিল লম্বা চুলের তৌফিক যে পরের একটি মাসে হয়ে উঠেছিল আমার খুব কাছের একজন। দ্বিতীয়ত: খুলনা, সাতখিরা, বাগেরহাট এলাকার কিছু মানুষ যাদের বেশীর ভাগই ৫০ এর কাছাকাছি বয়সের এবং গ্রাম্য সাদাসিধা মানুষ। সবশেষ গ্রুপে ছিলেন চাঁদপুরের কিছু মানুষ, সংখ্যায় তারা খুব কম ছিলেন। তো এরাই ছিলেন আমার সফর সংগী, পরবর্তী একটি মাস জুড়ে এরাই আমার সাথে ছিলেন। আমার পরের লেখা গুলোতে এদের অনেকের কথাই ঘুরে ফিরে আসবে।
বিমান বন্দরে অনেকের সাথেই পরিচয় হচ্ছিল, তৌফিকের সাথে ওখানেই পরিচয়। বিভিন্ন চেকিং ১২ টার মধ্যে শেষ, কিন্তু বিমানের কোন খবর নেই। এর মধ্যে লাগল ক্ষুধা। ভেতরে খাবারের অনেক দাম, তাই বাবা আর ছোট ভাইকে দিয়ে বাইরে থেকে খাবার আনালাম। যোহরের নামাজ পড়লাম টার্মিনালের ভেতরে। দুপুর গড়িয়ে যায় তারপরও বিমানের খবর নেই। জিকির, কোরআন তেলাওয়াত আর গল্প গুজব করে সময় কাটছিল। অবশেষে আমাদের জানানো হলো খুব শিঘ্রী বিমান আসার কোন সম্ভাবনা নেই তাই আমাদের উত্তরার একটা গেষ্ট হাউসে পাঠানো হল।
এই গেষ্ট হাউসের কথা পরের পর্বে লিখব।