জীবন চলার প্রতিটা ক্ষেত্রে আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টি ভাবতে হয়। কাজের ক্ষেত্র থেকে শুরু করে অফিস আদালত, এমনকি আপনি যখন খেতে বসেন অথবা ঘুমাতে যান তখনও কিছু নিরাপত্তা প্রণালী রয়েছে। অবজ্ঞা করলে যে কোন সময় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। আমরা এখানে ধারাবাহিক ভাবে সেই সমস্ত নিরাপত্তা প্রণালী নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলো কম বেশী সবারই কিছু না কিছু জানা দরকার। আপনাদের কোন উপদেশ পরামর্শ বা অভিজ্ঞতা থাকলে তাও শেয়ার করতে পারেন এখানে। ফেসবুকের মত শুধু লাইক নয়, আমরা আলোচনা-সমালোচনা-প্রতিউত্তর কামনা করছি।
********************************************************************************************
আমাদের আজকের টুলবক্স মিটিঙয়ের বিষয় "সেফটি স্যূ" বা নিরাপত্তা জুতা।
এটি কর্মক্ষেত্রে আপনার পা কে সুরক্ষিত রাখবে। কয়লা খনি থেকে শুরু করে কনশট্রাকশন সাইট পর্যন্ত যে কোন কর্মক্ষেত্রে এটি একটি অতি প্রয়োজনীয় সেফটি ইকুইপমেন্ট।
প্রথম শ্রেণীর চামড়াজাত উপকরণ দিয়ে তৈরি বলে সাধারন ঘাত প্রতিঘাত থেকে এ আপনার পা কে স্বাভাবিক সুরক্ষা দিবে। আর বিশেষ রাবার সোলের জন্য ভেজা, স্যাঁতস্যাঁতে অথবা তৈলাক্ত সারফেসে আপনাকে পিছলে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করবে।
এর ভেতরে থাকা ষ্টীলের পাত ঊর্ধ্ব মুখী যে কোন ধারালো বস্তু (যেমনঃ মার্বেল বা কাঁচের টুকরা, ছুরি বা কাঠের তক্তায় গাঁথা পেরেক, তারকাটা বা গজাল ইত্যাদি) থেকে আপনার পা কে নিরাপদে রাখবে।
আর পায়ের পাতার উপরে সামনের দিকে থাকা অর্ধচন্দ্রাকৃতির বাঁকানো ষ্টীলের পাত আপনার পায়ের পাতার অগ্রভাগ অর্থাৎ আঙ্গুল গুলোকে রক্ষা করবে ভারী কোন কিছুর দ্বারা থেঁতলে যাওয়ার হাত থেকে। মোটামুটি তিন টন পর্যন্ত ওজনকে ঠেলে রাখতে সক্ষম এগুলো।
তার মানে দাঁড়ালো, সেফটি স্যূ পায়ে থাকা অবস্থায় অন্ততঃ পায়ের যখমের জন্য আপনাকে দূশ্চিন্তিত হতে হচ্ছে না। তবে...... এখানে একটা 'তবে' আছে- খামখেয়ালীপনা অথবা অনিয়মের কারনে অনেকেই পায়ে আঘাত পান, সেফটি স্যূ ব্যবহারের পরেও।
এর মাঝে সবচেয়ে বড় অনিয়ম হলো, স্লিপারের মত করে জুতা পায়ে দেয়া। বার বার ফিতা বাঁধার ঝামেলা এড়াতে লোকেরা জুতার পেছনের অংশের উপর দিয়ে পা টা ঠেলে জুতায় ঢুকিয়ে দেয়। দেখতে তখন এটাকে অনেকটা স্লিপারের মতই দেখায়। এতে করে কখনো হোঁচট খেলে দেখা যায় তিনি আছেন এক জায়গায় আর তিনার জুতা মুবারক আরেক জায়গায়।
অনেকে জুতার ফিতা বাঁধেন ইচ্ছে করেই ঢিলা ভাবে। যেন যখন তখন সহজে পা গলানো যায় আবার বের করা যায়। এ ধরনের অনিয়ম গুলো প্রায়ই বিপদের কারন হয়ে দাঁড়ায়।
আমার এক ওয়ার্কার একবার ঠাট্টার ছলে সুন্দর এক উদাহরণ দিয়েছিলেন। " আমাদের দেশের সরকারী নিয়ম কানুন গুলো আমাদের সেফটি স্যূ পায়ে দেয়ার মত। পায়ে দেয়া দরকার তাই দিলাম - যেনতেন ভাবে। সঠিক প্রয়োগ না হলে ক্ষতিটা যে আমারই এ ব্যাপারে কোন কেয়ার নেই।"
কথাটা ভাবার মত। সরকারী আইন, ব্যবসায়িক নিয়ম-ধারা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা বা সামাজিক করনীয় কর্তব্য যাই হোক, বাস্তবায়ন প্রয়োজন সঠিক এবং সুচারু রুপে। তা না হলে প্রকারান্তরে ভোগান্তি আমাদেরই।
৩য় পর্ব
২য় পর্ব
১ম পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০১৫ রাত ৮:৪৬