জীবন চলার প্রতিটা ক্ষেত্রে আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টি ভাবতে হয়। কাজের ক্ষেত্র থেকে শুরু করে অফিস আদালত, এমনকি আপনি যখন খেতে বসেন অথবা ঘুমাতে যান তখনও কিছু নিরাপত্তা প্রণালী রয়েছে। অবজ্ঞা করলে যে কোন সময় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। আমরা এখানে ধারাবাহিক ভাবে সেই সমস্ত নিরাপত্তা প্রণালী নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলো কম বেশী সবারই কিছু না কিছু জানা দরকার। আপনাদের কোন উপদেশ পরামর্শ বা অভিজ্ঞতা থাকলে তাও শেয়ার করতে পারেন এখানে। ফেসবুকের মত শুধু লাইক নয়, আমরা আলোচনা-সমালোচনা-প্রতিউত্তর কামনা করছি।
*********************************************************************************************************
১ম পর্বে যেতে এখানে ক্লিক করুন
টুলবক্স মিটিঙয়ের আগে হাজিরায় সই করতে হয় সকলকে। যেখানে মূল আলোচ্য বিষয় সংক্ষেপে উল্লেখ করা থাকে।
এটা আমার একটা কৌশল বলতে পারেন গরহাজিরা ফেরাবার জন্য। তাছাড়া আগে ভাগেই সকলে একটা আভাস পেয়ে যায় কী বিষয়ে আলোচনা হতে পারে?
মিটিঙয়ের শুরুতেই এক ছেলে কেমন যেন উশখুশ করছিল। মনে হলো কিছু বলতে চায়। সুযোগ দিলাম। সে তার নিজের ঘটনা শেয়ার করলো সবার সাথে।
মায়ের মৃত্যু সংবাদে সাত দিনের জন্য দেশে গিয়েছিল। বাড়ি কুটিয়া। কিছু একটা কেনার জন্য নরসিংদী বাজারে যেতে হয়েছিল তাকে। চাচাতো বোন জানতে পেরে ফোন দিল
-” বাড়ি যাবার সময় আপনি আমাকে সাথে নিয়ে যাবেন। আমি ইনডেক্স প্লাজায় আছি।”
সহজ সরল বিষয়। তবে সহজ সরল আর রইল না একটু পরেই।
ফেরার পথে ইনডেক্স প্লাজার মোড়ে গিয়ে বোনকে নিয়ে সিএনজিতে উঠতেই দুপাশ থেকে আরো দুজন উঠে বসলো। একজনের হাতে পিস্তল!
-“অনেক দিন ধইরা খুঁজতাছি তরে। ……… আইজ পাইছি।"
-" আরে ভাই, কি কন! ......"
-"… এই মাইয়ার লগে তর অবৈধ সম্পর্ক! ….."
-" আরে ভাই কি যা তা কন? ইনি তো আমার …! "
-" … কোন কথা কবি না। অক্করে মাইরালামু। …………”
রাগ লজ্জ্বা ভয় তিনটাই একসাথে যেন আক্রমন করে বসলো তাকে।
আশেপাশে এত এত মানুষ রিক্সা চলাচল করছে! অথচ কাউকে কিছু বলতে পারলো না সে। জানের মায়া বড় মায়া।
ড্রাইভারকে হুমকি দিয়ে সিএনজি ঘুরিয়ে ওরা নিয়ে গেল নরসিংদী কলেজের পিছনে।
সেখানে নিয়ে মহিলার গলার চেইন, মোবাইল, ছেলের হাতের দামী (সিঙ্গাপুর থেকে নেয়া না? দামী তো হবেই) মোবাইল, টাকা পয়সা আর কিছু সিং ডলার সহ ওয়ালেট কেড়ে নিয়ে ওদের ছেড়ে দিল।
অনেক কাকুতি মিনতি করেও বাড়ি ফিরে যাবার ভাড়াটা পর্যন্ত ওদের কাছ থেকে চেয়ে নিতে পারেনি সে।
“এই যদি হয় অবস্থা! আমরা কিভাবে একজন আরেক জনের বিপদে এগিয়ে যাবো?”
বন্ধুরা! কিছু বুঝলেন?
আমাদের আজকের টুলবক্স মিটিঙয়ের বিষয় ছিল “Help each other in work place.”
যদিও ঐ ঘটনার সাথে আমাদের টপিকের তেমন কোন মিল ছিল না, তথাপি অমন ফ্রেশ (ছেলেটা মাত্রই দেশ থেকে আসা) একটা আলোচনার সুযোগ বাইরের কোলাহল থেকে সরিয়ে ওদের সকল মনোযোগ এই মিটিঙয়ে কেন্দ্রীভূত করতে সহযোগিতা করেছিল সেটা বলাই বাহুল্য।
পরবর্তীতে আমরা আমাদের মূল আলোচনায় প্রবেশ করি। রসকষহীন একটা আলোচনা। সে সব এখানে আর নাই বা লিখলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০১৫ রাত ৮:৫৬