১৮ জুলাই (রেডিও তেহরান):
অকূটনৈতিকসূলভ আচরণের জন্য কাঠমান্ডুতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নিমচন্দ্র ভৌমিককে প্রত্যাহার করে নিতে নেপালের আহ্বান সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা, নিমচন্দ্র ভৌমিক নেপালে নারী কেলেঙ্কারি, স্কলারশিপ দিতে ঘুষ, ভারতের পতাকা নিয়ে গাড়িতে ভ্রমণের মতো ঘটনার জন্ম দিয়ে বিতর্কিত হয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগপন্থী নীল দলের শিক্ষক হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। ২০০৯ সালের শেষের দিকে তিনি নেপালে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং সে সময় থেকে কাঠমান্ডুর ভারতীয় দূতাবাসের মুখপাত্র এবং কাউন্সিলর অপূর্বা শ্রীবাস্তবাকে নানা ভাবে হয়রানি করেছেন।
ঢাকা থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেট আরো জানিয়েছে, নিমচন্দ্র ভৌমিকের অসংখ্য নারী কেলেঙ্কারির মধ্যে বলিউড তারকা মনীষা কৈরালার সঙ্গে অকূটনৈতিকসুলভ ও দৃষ্টিকটু এবং অভব্যভাবে সাক্ষাতের চেষ্টা করার কথা জানা গেছে। নিমচন্দ্র ভৌমিক পূর্ব কোনো ঘোষণা না দিয়ে মানীষার বাসভবনে গিয়ে হাজির হন। তবে তাকে বাসভবনে ঢুকতে দেয়া হয়নি এবং তিনি বাসভবনে ঢোকার জন্য আধাঘন্টা ধরে মরীয়া হয়ে প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ মিশনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা নেপালি মহিলাদের তিনি হেনস্তা করেছেন। কাঠমান্ডুর সাবেক ফার্স্ট সেক্রেটারি নাসরিন জাহান লিপি গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমনির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে নিমচন্দ্র ভৌমিকের কেলেঙ্কারির বিষয়টি অবহিত করেন। এ ছাড়া গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি চার বাংলাদেশী মেয়ের সঙ্গে কেলেঙ্কারির বিষয়টিও এ সময়ে দীপুমনিকে অবহিত করা হয়। অন্যদিকে দৃষ্টিকটু ভাবে স্থানীয় বেশ কয়েকজন নারীকে দূতাবাসেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় দিয়েছেন নিমচন্দ্র।
এ ছাড়া, কাঠমান্ডুতে ভারতের অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেএফআর জ্যাকবকে সঙ্গে নিয়ে কয়েকটি বৈঠকে নিমচন্দ্র নিজ গাড়িতে ভারতের পতাকা উড়িয়ে গিয়েছেন বলে স্বীকার করা হয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে । বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনী পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক ছিলেন জ্যাকব।
নারী কেলেংকারীর জন্য এরই মধ্যে টোকিওতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ক্যারিয়ার ডিপ্লোমেট মজিবর রহমানকে ঢাকায় ফেরৎ নেয়া হয়েছে। কিন্ত নিমচন্দ্রের ঘটনা টোকিও কেলেংকারীর আগে থেকেই পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ঢাকার এক বিশ্লেষক এ ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, এতে বোঝা যাচ্ছে নিমচন্দ্র ভৌমিকের খুঁটির জোর অনেক বেশি।