বিল্লালের চাকুরির বয়স দীর্ঘ পাঁচ বছর ।আর এ পাঁচ বছরের ভিতরে সকলের খাটায়
কম বেশি লাল সাইন পড়লেও বিল্লালের কোন লাল সাইন নাই । সেখানে আজ প্রায় তিন ঘন্টা অফিস টাইম লেট ।
একদিকে বিল্লালের হাতে এমনেই সময় কম অন্যদিকে রাতে ঝড়ের কারনে জায়গায় জায়গায় রাস্তার উপর মানুষের বাড়ির বিভিন্ন অংশ এসে পড়ে থাকাতে গাড়ি ঠিকমত চলাচল করতে পারছিল না । আর সে কারনেই অফিসের এ দীর্ঘ সময়টা লেট । মূলত তার সততার জন্যই বিল্লালকে অফিসের সবাই যেমন বিশ্বাস করে তেমন ভালো বাসে ।বিল্লালও অফিসের সকলের মাঝে বিশ্বাস অর্জন করেছে আর তার এ বিশ্বাস অর্জনের জন্যই অফিসের কয়েকজন সারা সবাই তাকে বেশ ভালো বাসে ।
বিশ্বাস গড়ে তিলে তিলে
যদিও শেষ হয় একটু ভুলে
হকার মালেকের লাইন দুটিই যেন বিল্লাল তার মনের ভিতর গেঁথে নিয়েছে ।
বিল্লালকে অফিসের লিটন পারবেজ আর মোকবুল ছাড়া সবাই খুব আদরও করে । ছেলেটা গরিব আর অফিসের সকলের প্রিয় বলে লিটন, পারবেজ, আর মোকবুল,এরা তিনজন বিল্লালকে দেখতে পারেন না । তারা সব সময় বিল্লালের পিঁছনে লেগে থাকেন আর ভাবেন কি করে বিল্লালের ক্ষতি করা যায় ।
বিল্লাল আর্থিক দিয়ে গরিব হলেও মনের দিক দিয়ে শতকোটি সম্পদের মালিকদের চেয়ে বিল্লালের মন অনেক বড় ।
এমনিতেই আজ কয়েক দিন ধরে অফিসে সকলের অনিয়মগুলো প্রধাণ সাহেবের চোখে ধরা পড়েছে । আর সে কারনে অফিসের প্রধান সাহেব সকলকে ডেকে সেদিন খুব কড়া কথা শুনিয়ে বলে দিয়েছেন এর পরে কারো অনিয়ম বা অফিসে লেট করে আসলে তার চাকুরি চলে যাবে ।
ফের যদি অফিসে কেহ ক্রমাগত এরকম লেট করে আসে তাহলে তার বিরুদ্ধে অফিস রোল অনিয়ম করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
প্রধাণ সাহেব হলেন বিল্লালদের অফিসের বস ।আর অফিসের সকলে তাকে প্রধান সাহেব বলেই ডাকে । লোকটি ভিষন ভালো মানুষ ।
বিল্লালের এখন এ চাকুরিটাই এক মাত্র সম্বল যা দিয়ে অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা ও ছোট বোনের লেখাপড়ার খরচ সহ তিনজনের সংসার খুব কষ্টে চলে যাচ্ছে । আর আজ যদি অফিস সময় দেরি হওয়ার জন্য চাকুরিতা আজ চলে যায় তাহলে মা বোনকে সঙ্গে নিয়ে কাল হতে পথে নামতে হবে ।
চিন্তিত চেহারা নিয়ে আস্তে আস্তে অফিসের ভিতরে ঢুকলো বিল্লাল ।অফিসে ঢুকেই অবাক হল কারন সেদিন মেঘ বৃষ্টি আর ঝড়তুফানের জন্য রাস্তায় কাঁদা পানি জমে যাওয়ার কারনে অনেকেই অফিসে আসতে পারেনি ।সেদিন অফিসে বিল্লাল আর অফিসের প্রধাণ সাহেবই এঁসেছিলেন ।
বেশ কিছু দিন পর একদিন অফিসের প্রধাণ সাহেব কি একটি মিটিং এর জন্য যেন তারাহুরা করে অফিস বন্ধ হওয়ার ঘন্টা দুই আগে অফিস থেকে বেরিয়ে যান ।যাওয়ার সময় একটি পঞ্চাশ হাজার টাকার বান্ডিল প্রধাণ সাহেবের টেবিলে ফেলে রেখে যান ।পরদিন অফিসে এসে প্রধাণ সাহেব টাকার বান্ডিলটা টেবিলের উপরে পেলেন না । প্রধান সাহেব প্রথমত ভেবেছিলেন টাকার বান্ডিলটা হয়ত বিল্লাল পেয়ে সরিয়ে রাখছে ।তাই অফিসের অন্য কাউকে তিনি টাকার কথাটা জিজ্ঞাসা করলেন না । বিল্লাল তার মায়ের অসুখ বেড়ে যাওয়ায় দুদিন অফিসে না আসায় ঘটনার তৃত্বীয় দিন প্রধান সাহেব বিল্লালের অনুউপস্থিতে অফিসের বাকি সকলদের ডেকে টাকার কথা জিজ্ঞাসা করলে কেহ টাকার বিষয়টা স্বীকার করেননি ।
এক পর্যায় বেশি চাপ দেয়াতে কয়েকজন প্রধান সাহেবকে বলেছেন নিশ্চয় টাকাগুলো বিল্লাল নিয়েগেছে । আর সে কারনেই বিল্লাল অফিসে আসছে না ।কারন বিল্লালের মায়ের শরীর প্রচন্ত অসুস্থ আর সে জন্যয়ই টাকাগুলো ওর প্রয়োজন ওই নিয়েছে ।কিন্তু প্রধান সাহেব সকলকে বললেন বিল্লালকে তিনি দীর্ঘ পাঁচ বছর থেকে চিনেন আর বিল্লাল ওধরনের ছেলেও না ।তবু অনেকে মানতে চাইল না ।তখন প্রধান সাহেব সকলকে বললেন ঠিক আছে বিল্লাল যে টাকাগুলো নিয়েছে তার কোন প্রমান কারো কাছে নাই । কিন্তু সে যে একজন ভালো ছেলে তা আমি তোমাদের সকলের সামনে প্রমান করে দেব । আর সে যে টাকাগুলো চুরি বা নেয়নি তারও প্রমান করে আমি সকলকে দেখিয়ে দিবো । আর বিল্লাল যে নিরঅপরাধ তার প্রমান সকলে পাবে ।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:৩৪