কোথাও যেন পড়ছি, মানুষের স্বপ্ন মানুষটি থেকেও অনেক বড় বা এমন কিছু।
হ্যাঁ, আমাদের সকলের স্বপ্ন হওয়া উচিত আকাশের মত। আকাশের সমান। যার কোন শেষ নেই। যা কোনদিন ও পরিমাপ যোগ্য নয়।
আজ ফেসবুকের কল্যাণে দেখতে পাই অনেকেই রাস্তার ছেলে, গরীব কোন লোকের ছবি বা এমন কারো ছবি তুলে তা পোস্ট করে। আর সবাই করুণার দৃষ্টিতে দেখে ঐ ছবিটিকে। অনেকের হয়তো দরদ উঠে, সত্যিকারে তা ফেসবুকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
আমার ধারণা এমন ছবি আজীবন পোস্ট করলে ঐ ছবির সাবজেক্টের কোন দিনও উন্নতি হবে না। যেটা দিয়ে ঐ সাবজেক্টের উন্নতি হবে তা হচ্ছে এক টুকরো স্বপ্ন। হ্যা, স্বপ্ন।
রাস্তা থেকে বিলিওনিয়ার বা সফল হয়েছে এমন ১০০০ গল্প আমি যেমন বলতে পারব, তেমনি আপনিও এমন অনেক গুলো গল্প জানেন। তারা সফল হতে ফেরেছে কারণ তারা হতে চেয়েছে। কয়েক দিন আগে একটা নাটক দেখেছি, “এক হাজার টাকা” নাম । ঐ গল্পটিতে একটি কথা ভালো লেগেছে, তা হচ্ছে “চাইলেই হয়, চাইতে হয়”।
সত্যি, চাইলেই হয়। চাইতে হয়। না চেয়ে কেউ কোন দিন কিছু পেয়েছে এমন কোন উদাহরণ কি কোথাও রয়েছে? আচ্ছা, আর চাওয়াটাই কি স্বপ্ন নয়?
রাস্তার ছেলেদের কথা বলছিলাম। যদি তাদের মধ্যে এক টুকরো স্বপ্ন দিয়ে আসা যেতো, তারা হয়তো বড় হয়ে ঐ এক টুকরো স্বপ্নটাকে বড়ো করে “দিন এনে দিন খাই” এর গলি থেকে বের হয়ে আসতে পারত।
সবাই নিজের ভালো বুঝে। তবে ঐ ভালোটা নির্ভর করে তার জ্ঞানের উপর। তার জ্ঞান যেটাকে ভালো মনে করে, তাই সে ভালো মনে করবে। ঐ ভালোর সংজ্ঞাটার উপর নির্ভর করে সব কিছু।
কাল সন্ধ্যায় একটি ন্যানো গল্প শেয়ার করছিলামঃ
“ভাইজান, দুইটা টেকা দেন, ভাত খামু।
নিলয় বলল, দুই টেকা দিয়ে কি ভাত পাওয়া যাায়? চল স্টারে গিয়ে নান রুটি আর ভাজি খাওয়াই।
বাচ্চাটি এমন ভাবে তাকাল যেন নিলয় বিরাট অপরাধ করে ফেলছে। যে অপরাধের কোন ক্ষমা নেই। হয়তো ভাবছে নিলয় একটা পাগল, এর কাছে টাকা চেয়ে ভুল করে ফেলল নাকি!
বাচ্চাটি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকার কারণে আবার বলল, চল যাই।
বাচ্চাটি আর কোন কথা না বলেই দিল দৌড়...”
গল্পটা সত্যি। কিভাবে সত্যি বলি। আমি আর মামা দাঁড়িয়ে কথা বলছি স্টার কাবাবের সামনে। ছোট্ট একটা ছেলে এসে মামার কাছে টাকা চাইলো। মামা টাকা দেওয়ার পরিবর্তে জিজ্ঞেস করল যাবি আমার সাথে? তোকে খাওয়াবো, কাজ শিখাবো, তোর যা যা লাগে সব করব। মামা ফান করে বলে নি। সত্যিকারেই জিজ্ঞেস করেছে। ছেলেটি মনে করছে ফাইজলামি করে। কথা না বাড়িয়ে ও ওর নিজের ধান্ধায় চলে গেলো।।
কারণ ওর কাছে কাজ শিখে বড় হওয়ার চেয়েও দুই এক টাকাই বেশি। নগদ পাওয়া যায়।
এর পর আমি মাঝে মাঝেই এসব নিয়ে চিন্তা করতাম। আমি যা বুঝতে পারলাম, তারা চিন্তা করে নগদ টাকার। কাজ শেখা বা পড়ালেখা করা এমন কোন চিন্তা তারা করে না। ঐ রকম চিন্তা করার পরিবেশ নেই তাদের। আর তাদের সাথে বড় হওয়ার গল্প বলার মত মানুষ ও নেই।
অথচ ফ্রীতে পড়ালেখার করানোর মত হাজার ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখন দরকার ঐ রাস্তার বাচ্ছাদেরকে ঐসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মুখী করার। তাদের মাঝে দুই একটা স্বপ্ন ছড়ানোর। তাদেরকে দুই একটা সফলতার গল্প বলার। যে গল্প গুলো শুনে তারা ভাবতে শিখবে। ঐ পিচ্ছি কালে, তাদের বয়সে রাতে ঘুমানোর সময় আমার আপনার যেমনি অনেক গুলো প্রশ্ন ঘুরপাক খেতো, আস্তে আস্তে ঐ প্রশ্ন গুলো তাদের মাথাও আসবে, ঐ প্রশ্ন গুলোর উত্তর তারাও খুঁজবে। খুজেতে গিয়ে স্বপ্ন পূরণের স্বপ্নে নিজেরাই আসবে ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বা নিজ যায়গা থেকে, নিজ পরিবেশ থেকেই শিখে নিবে বড় হওয়ার নিয়ম, সফল হওয়ার নিয়ম গুলো। কারণ স্বপ্নই মানুষকে বড় করে।।