আগে যেমন ছেলে মেয়েরা ‘নিজেরা কিছু করতে চাই’ ‘অন্যের অধিনে চাকরি করব না’ টাইপের চিন্তা থেকে ছোট খাটো কোন ব্যাবসা শুরু করত। ছোট খাটো উদ্যোগ নিয়ে নিজেরাই দিয়ে বসে ছোট খাটো ফার্ম তৈরি করত। যে গুলোই এক দিন বড়ো হয়ে, হয়ে উঠে গুগল, মাইক্রোসফট, অ্যামাজন বা বাংলাদেশেরই আকিজ গ্রুপ, মুন্নু সিরামিক ইত্যাদি। তেমনি ছোট খাটো উদ্দ্যেগ অনেকেই এখনো নিচ্ছে। হয়ে উঠছে ছোট খাটো উদ্যোগতা। তবে গত দুই বছর থেকে এ পরিমানটা একটু বেড়েছে। চাকরি খুজব না চাকরি দিব স্লোগান দিয়ে গড়ে উঠা ফেসবুক গ্রুপের কল্যানে সত্যিই এ পরিমানটা বেড়েছে। অন্তত জানতে পারছি অনেকেই বসে নেই। নিজেরাই নিজেদের কর্মসংস্থান খুজে নিচ্ছে। তৈরি করছে নতুন কর্মসংস্থান।
অনেক বিশাল একটা প্যারা লিখে ফেলছি। আমি আসলে এসব বলতে লেখা শুরু করি নি। অনেক কাছ থেকে হোক বা জানা শোনার কারনেই হোক বুঝতে পারি এ ছোট খাটো উদ্যোগ গুলো কিভাবে নেওয়া হয়। কত রিক্স নিতে হয় তাদের। অর্থনৈতিক, পারিবারিক সহ অনেক গুলো ঝুঁকি নিতে তারা শুরু করে। তার সাথে রয়েছে পরিবেশের নাক কুচকানি। একশ এক জনের একশ এক মতামত উপেক্ষা করে কোন কিছু শুরু করা এক ধরনের ভয়াবহ ঝুঁকিই মনে হয় আমার কাছে। যেখানে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটি দাঁড়িয়ে রয়েছে করপোরেটদের চাকরি( চাকরি এর বিশ্লেষন তো জানেন, তাই না?) করার জন্য। সেখানে নিজে নিজে কিছু একটা শুরু করা ঝুঁকি নয় কি?
হয়তো জানেন যারা শুরু করে তারা তাদের সর্বোচ্চ ধন সম্পদ সব ব্যয় করেই শুরু করে। এ আশায় যে এ থেকে কিছু লাভ হবে। তাদের ছোট্ট ব্যবসাটাকে আরেকটু বড় করবে। লাভের অংশ দিয়ে পরিবারের ভরন পোষণ বহন করবে ইত্যাদি আরো অনেক কিছুই লেখা যায় বা বুঝে নেওয়া যায়।
এখন যারা এমন কিছু গত কয়েক মাসে শুরু করেছে, তারা এখনো ব্যবসা এর পেছনে বিনিয়োগ করেই যাচ্ছে। মুনাফার আশায়। তাদের এখন যদি এক মাসে ক্ষতি লাভের পরিবর্তে ক্ষতি আসে, তাদের জন্য তা কাটিয়ে উঠতে অনেক কষ্ট হয়ে যাবে। হয়তো এক মাসের ক্ষতিও কাটিয়ে উঠা যাবে, কিন্তু এর পরের মাসেও যদি ক্ষতি আসল তখন কি হবে?
অনেকেই ধার দেনা করে ব্যবসা শুরু করে, ব্যবসা করে টাকা দিবে বলে। যখন তাদের ব্যবসায় লাভের পরিবর্তে ক্ষতি আসে। তখন দেনাদার দের কিভাবে টাকা শোধ করবে? হ্যা, পারবে না শোধ করতে। তার উপর রয়েছে প্রতিদ্বন্ধি। প্রতিদ্বন্ধিদের সাথে না পেরে উঠে আস্তে আস্তে ব্যবসাটাকে গুটিয়ে নিতে হবে। উদ্যেগতা হওয়ার জন্য জত প্যাসনই থাকুন না কেন তাদের জন্য টিকিয়ে থাকা কষ্ট হয়ে যাবে। আর এভাবেই একটি সুন্দর উদ্যেগ মাঠে মারা যাবে। পথে বসতে হয়, হচ্ছে বা হবে উদ্যোগতাকে।
এত কিছু লেখার একটি কারন ছিল। তা হচ্ছে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতি। হ্যা, বাংলাদেশের জগন্য রাজনীতি। এটা কি আমাদের উদ্যোগতা উপযোগি? একটুও না। যেখানে অন্যান্য দেশে সরকারী ভাবে বা বড় বড় প্রতিষ্ঠান ছোট খাটো উদ্যোগতাকে স্বাগত জানিয়ে যত ধরনের সাহায্য লাগে তা করে, আর আমাদের এখানে সকল বাধা পেরিয়ে যারা নতুন কিছু করে তাদের জন্য আমাদের রাজনীতি কতটুকু ভয়ঙ্কর একটু চিন্তা করে দেখেছেন কখনো?
একদিন হরতাল হলেই যেখানে এসব ছোট খাটো উদ্যেগতাদের হিমশিম খেতে হয় যেখানে, তিন দিন বা ৪ দিন হরতাল তাদের জন্য কতটা ভয়ঙ্কর তা কি কখনো ভেবে দেখেছেন? বা যারা রাজনীতি করে, তারা কখনো কি তা ভেবেছে? হরতাল যেহেতু আমাদেরই ক্ষতি হয়, আমাদের সাধারন জনগনেরই ক্ষতি হয় তাহলে কি আমরা আওয়াজ তুলতে পারি না এটাকে নিষিদ্ধ্ব করার?
সরকার পাল্টায় প্রতি ৫ বছর পর পর। আজ যারা সরকারী দল, তারাই আগামীতে গিয়ে আবার বাংলাদেশের অর্থনীতি পঙ্গুকারী এই হরলাত দিবে। আবার হরতাল আসবে, আবার দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করা হবে। আর প্রতি হরতালেই দেশ সামনে যাওয়ার পরিবর্তে পেছনে এগুতে থাকবে।