মানুষের শরীরের বিভিন্ন প্রকার স্বাভাবিক ক্রিয়া কলাপ নির্ধারন করে হরমোন। এনজাইম পরিপাকে, বিপাকে, স্নায়ু উদ্দীপনা পরিবহনে সাহায্য করে। মানুষের দেহে নিয়মিত হাজার হাজার বিক্রিয়া সংঘটিঠ হচ্ছে এ সব বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রন করে এনজাইম, বাংলা তে এনজাইম মানে হল উৎসেচক। এ হরমন ও উৎসেচক আমাদের জন্য কত ধরকার তা একটু পরে জানতে পারবেন। তার আগে আমি কিছু জিনিশ সম্পর্কে আপনাদেরকে কিছু ধারনা দিয়ে নিচ্ছি। এগুলো ছাড়া কিছু কিছু জিনিস বুঝতে কষ্ট হতে পারে। যারা সাইন্স থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করছেন তারা এ অংশ না পড়লে ও চলবে । কিন্তু সবাই যেন সহজে বুঝতে পারে আমি তাই সব কিছু একটু ভেজ্ঞে বলছি। যারা এখন ও বিজ্ঞান বিভাগে নবম দশম অথবা ইন্টারমিডিয়েট পড়ছেন এ টিউনটি পড়লে আপনাদের জীব বিজ্ঞানের একাডেমিক অনেক কিছুই জানতে পারবেন।
এখানের অনেক কিছু লিখতে আমি ইন্টারমিডিয়েটের প্রাণি বিজ্ঞান বইটির সাহায্য নিয়েছি। তাই গাজী আজমল ও গাজী আসমত স্যারদের নিকট বিশেষ
মানব দেহের গ্রন্থি সম্পর্কে একটু বলা ধরকারঃ
যেসব কোষ বা কোষ গুচ্ছ দেহের বিভিন জৈবিক প্রক্রিয়ার প্রয়জনীয় রাসায়নকি পদার্থ ক্ষরন করে তাই হচ্ছে গ্রন্থি। ক্ষরন মানে হচ্ছে নিসঃরন করা। অনেক প্রকারে গ্রন্থি রয়েছে , আমি শুধু আমার যা প্রয়োজন তাই আলোচনা করছি। ক্ষরন এর উপর ভিত্তি করে গ্রন্থি দু প্রকার। বহিঃক্ষরা গন্থি ও অন্ত ক্ষরা গ্রন্থি।
বহিঃক্ষরা গ্রন্থিঃ
বহিঃক্ষরা গ্রন্থি যে সকল রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরন করে সে গুলো ক্ষরন কোষের আসে পাশেই কাজ করে। আর বহিঃক্ষরা গ্রন্থি থেকেই এনজাই নির্গত হয়। দুধ, ঘাম, সেপ বা লালা, এনজাইম ইত্যাদি বহিঃক্ষরা গ্রন্থি থেকেই নিঃসরিত হয়। এগুলো সব গুলো মানুষের জন্য অতি জরুরি। এদের একটির অভাব হলে অনেক সমস্যা দেখা দেবে। এগুলোর মধ্যে আমি শুধু এনজাইমের কয়েকটি কাজের কথা বলব।
অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিঃ
অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি গুলো নালীবিহীন। রক্ত বা লসিকার ( রক্তের মত বর্নহীন তরল) মাধ্যমে প্রয়জোনীয় অঙ্গে গিয়ে কাজ করে। অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে নিঃসারিত রাসায়নিক পদার্থ হচ্ছে হরমোন।
এনজাইমঃ
এনজাইম হচ্ছে প্রটিন ধর্মী দ্রবনীয় রাসায়নিক পদার্থ বা জৈব প্রবাবক যা সজীব কোষে উৎপন্ন হয়ে বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে এবং বিক্রিয়া শেষে নিজেরা অপরিবর্তিত থাকে। মানবদেহে প্রায় লক্ষ লক্ষ এনজাইম ক্রিয়াশীল। এই এনজাইম এর সৃষ্টি প্রোটিন থেকে। এরা সতন্ত্র ভাবে নিজেদের কাজ নিজেরা করে থাকে। এদের যে কোন একটির সামান্য সমস্যা হলেই দেখা দিবে বিভিন্ন উপসর্গ। যেমন পরিপাকের কথা ধরা যাক, মানুষের খাদ্যের শর্করা পরিপাক করে এমাইলেজ, ল্যাকটেজ, সুক্রজ, এসাইলটেজ প্রভৃতি এনজাইম। এদের কোনটির অভাব হলে শর্করা পরিপাকে ব্যগাত ঘটবে, দেখা দেবে বিভিন্ন রোগ।
আপনি নিয়মিত যে খাওয়া খান তাকে হজম করতে সাহায্য করে কে? যকৃত বা লিভার এ সকল এনজাইম নিঃসরন করে আপনার খাদ্যে হজম করতে সাহায্য করে আর আপনি শক্তি পান ও আপনার স্বাভাবিক কাজ করেন। অনেকেরই যকৃত বা লিভারে সমস্যা দেখা দেয়। তখন ডাক্তাররা তরল খাবার খেতে বলে। কারন তখন আপনার যকৃত ভালো ভাবে এনজাইম গুলো নিঃসরন করতে পারে না। তাই খাবার ও হজম হয় না। এ জন্য ই তরল খাবার খেতে দেওয়া হয়।
যদি কোন কোন এনজাইম আপনার শরীর আর সক্রিয় ভাবে তৈরি করতে না পারে তখন আপনাকে বিভিন্ন ঔষধ খেতে হয়।
হরমোনঃ
হরমোন হচ্ছে দেহের অন্তঃক্ষরা প্রন্থি থেকে নিঃসৃত জৈব রাসায়নিক পদার্থ যা রক্ত ও লসিকার মাধম্যে পরিবাহিত হয়ে দেহের দূরবর্তী স্থানে পৌছে নির্দিষ্ট শারীরিক কাজ সম্পর্ন করে। এরা এদের কাজ শেষ করে বিলীন হয়ে যায়।
হরমোন ভ্রুন থেকে একদম মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের শারিরীক এবং জৈবিক কাজ গুলো নিয়ন্ত্রন করে। মানুষের জীবনের প্রটিতি ধাপে এক একটি হরমোন কাজ করে। এগুলোর মধ্যে একটির ও এদিক ও দিক হলে মানুষের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ ব্যহত হয়। দেখা দেয় অনেক অস্বাবিকত্ব। আমি কয়েকটি উদাহরন দিচ্ছি, একদম ছোট অবস্থায় বাচ্চাদের শরীর একটু বেশি বাড়ে। এ সময় কোন হরমোন যদি কাজ না করে তাহলে বাচ্চাটির শরীর স্বাভাবিক ভাবে আর বাড়বে না। বাচ্চাটি বিকলংগ হতে পারে, মানসিক ভাবে অসুস্থ হতে পারে , আবার বাচ্চাটি অটিস্টিক ও হতে পারে, বা এর চেয়ে আরো ভয়ংকর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
১-১২ বছর পর্যন্ত ছেলে মেয়ে সবাই সবাই প্রায় একই রকম আচরন করে। এদের মধ্যে তেমন কোন পার্থ্যক্য থাকে না। কিন্তু ১২ বছর পর ছেলে দের এন্ড্রোজেন নামক হরমনের কারনে ছেলেদের মধ্যে পুরুশের ভাব প্রকাশ পায় আর ইস্ট্রোজেন নামক হরমনের কারনে মেয়েদের মধ্যে মহিলাদের বৈশিষ্ট প্রকাশ পায়। এখন অনেক সময় দেখা যায় অনেকে এ ধরনের অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তা কিন্তু এ হরমনের কারনেই। এরকম অনেক গুলো উদাহরন দেওয়া যাবে।
আবার ইন্সুলিন, এর কাজ হচ্ছে রক্তে শর্করার পরিমান বেড়ে গেলে তাকে কমিয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমান নিয়ন্ত্রন করে, আবার কমে গেলে তাকে প্রয়জন মত বাড়ীয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমান থিক রাখা। আর রক্তে গ্লুকজের পরিমান বেড়ে গেলে হবে ডায়াবেটিক্স। তাই বুঝাই যায় যে ইন্সুলিন কত উপকারি একটা হরমন, এরকম সব হরমন ই উপকারী। একটার এদিক সেদিক হলেই হবে জটিল সব রোগ।
এবার আসি আমার নিজের কথায়:
হরমন হল স্টেরয়েড ধর্মী প্রোটিন বা ফেনল ধর্মী। তাই এসব এনজাইম বা হরমন রাসায়নিক গঠন বিশ্লেষন করে এগুলো কে ল্যাবরেটরির মধ্যে তৈরি করা হয়। যার ফলে মানুষের বিভিন্ন হরমনের অভাব হলেও রাসায়নিক ভাবে তৈরিকৃত এসব হরমন দিয়ে অভাব পূরন করে। যার জন্য যেতে হয় বিভিন্ন হাসপাতাল বা ঔষধের দোকানে। এনজাইমের সমস্যা হলে ভিবিন্ন ঔষধ খেয়ে তা পুরন করা হয়। আমরা সবাই যে গ্যাস্টিক এর ঔষধ খাই নিয়মিত এটা ও খাই কিন্তু এনজাইমের অভাবের বা সমস্যার কারবে।
আমাদের অসুখ হলেই হাসপাতালে দৌড়ে যায়, বা আগের ব্যবস্থা পত্র থাকলে ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনে নিয়ে আসি এবং খেয়ে রোগ থেকে মুক্তি পাই।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেউ যদি এমন অবস্থানে থাকে যে তার পক্ষে কোন হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব নয় অথবা সে এমন এলাকায় থাকে যে খানে কোণ হাস্পাতাল নেই তাহলে সে কিভাবে চিকিৎসা নিবে? সে কি চিকিৎসা নিতে পারবে না?
হাঁ পারবে, বিজ্ঞানের কল্যানে সবই সম্ভব ।আপনাদের কাছে একটু এ অংশটা বিদগুটে লাগলে ও এটাই আমার এ লেখার প্রধান অংশ। কেউ যদি কোন মহাকাশ যান, চন্দ্রে , মজ্ঞলে থাকে তাহলে সে ও চিকিৎসা নিতে পারবে। কিভাবে পারবে আমি তা ব্যাখ্যা করছি।
মানুষের দেহের বিভিন্ন ক্রিয়া বিক্রিয়া সৃষ্টি হয় ইলেক্ট্রন আধান প্রধানের মাধ্যমে। কোন বিক্রিয়া কতটুকু ইলেকট্রনের প্রবাহ ধরকার তা বিজ্ঞানিরা সহজেই বের করতে পারে বা পারবে। ইলেক্ট্রন কে তরঙ আকারে যেকোন স্থানে পাঠানো যায়।
হরমন আর এনজাইম তৈরি প্রোটীন দিয়ে যা আগেই বলছি, প্রোটীন তৈরি এমিনো এসিড দিয়ে, এমিনো এসিড তৈরি এমিন দিয়ে, আর এই এমইন তৈরি কার্বন ও হাইড্রোজেন দিয়ে। মানুষের শরীরে কার্বন ও হাইড্রোজেন ও হাইড্রজেন এর কোন অভাব নেই কারন পুরো দেহ তৈরি কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন দিয়ে। অভাব হচ্ছে এই হরমনের, তাই এ কার্বন ও হাইড্রোজেন দিয়ে নির্দিষ্ট হরমোণ তৈরি করা সম্ভব। বিক্রিয়া গুলো নিয়ন্ত্রন করে ইলেক্ট্রন প্রবাহ । ইলেক্ট্রনের প্রবাহ নিয়ন্ত্রন করে এ ভাবে হরমোন তৈরি করে খুব সহজেই সম্ভব।
এখন কেউ যদি চন্দ্রে থাকে এখন তার একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। তার কর্মক্ষমতা দিন দিন কমে যাচ্ছে এখন একটা যন্ত্র তার শরীর বিশ্লেষন করে দেখলযে তার থাইরক্সিন এর সমস্যা, তার শরীরে থাইরক্সিন হরমন কম আছে। এখন তার প্রয়োজন থাইরক্সিন। থাইরক্সিন হরমনের রাসায়নিক ঘঠন যেহেতু জানা আছে তাই তার শরীরের কার্বন ও হাইড্রোজেন কে এমনভাবে উদ্দিপিত করতে হবে যাতে নির্দিষ্ট পরিমান এমোনিয়া সৃষ্টি হবে, আবার ঐ এমোনিয়ে কে এমন ভাবে উদ্দিপিত করতে হবে যেন এমিনো এসিড এবং তা থেকে নির্দিষ্ট প্রোটিন তৈরি হয়ে ঐ থাইরক্সিনে অভাব কে প্রশমিত করে এভাবে আর ঔষধ নাখেয়ে ও কোন অপারেশন ছাড়া রোগ নিয়ন্তন সম্ভব। প্রয়োজন শুধু নির্দিষ্ট যন্তটা।
যেহেতু টিভি দেখার সাথে সাথে গন্ধ ও আমরা জানতে পরবো। টিবি অনুষ্টান টি যেখান থেকে সম্পসারিত হচ্ছে সেখানের পরিবেশের সাথে টিভি রুমের পরিবেশ একইরকম করার মত প্রযুক্তি তৈরি হয়ে গেছে, তাহলে এ ছোট্ট প্রযুক্তি ও তৈরি হবে আশা করতে পারি। যারা পারেন তারা একটু বিষয় টি ভেবে দেখবেন। ল্যাবরেটরির মধ্যে তৈরিকৃত হরমোনের দাম অনেক বেশি হয়। এখন যদি অসুখের সময় শরীরের মধ্যে এনজাইম এবং হরমোন তৈরি করা যায়, তাহলে রোগির যেমন উপকার হবে, চিকিৎসা করতে ও সুবিধা হবে। আর মানুষ ও অনেক জটিল রোগের হাত থেকে মুক্তি পাবে।
এ পোস্টটি পড়ে অনেকে আমাকে খারাপ জানতে পারেন। হয়তো ভাববেন এটা কোথায় থেকে কপি পেস্ট করে মেরে দিয়েছি। সে জন্য আমি বলে রাখি এটা একান্তই আমার। আমার নিজের গবেশনা। প্রায় এক বছর আগের। কেউ কেউ জানে আমি সাইন্স ফিকশন লিখি। একটি সাইন্স ফিকশন লিখতে গিয়ে আমার এরকম মনে হয়েছে। তার পর আরো কিছু পড়া লিখা করে এ লিখা টা লিখলাম। তাও এক বছর আগে, যখন আমি টেকটিউন্স কি বা ব্লগ কি তাও জানি না। আবার নেট ও ছিল না, বই পড়েই যা লিখার লিখছি। আমি তখনও কম্পিউটার সাইন্স এ ও ভর্তি হইনি। আমি লেখা টা প্রকাশ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে আমার এ স্বপ্ন যেন বাস্তবে পরিনত হয় তাই। টেকটিউন্সে অনেক ভিজিটর আসে তাদের মধ্যে কেউ যদি Biotechnology বা প্রানী বিজ্ঞান নিয়ে পড়া লেখা করে থাকে এরকম Student হয় তারা যেন এ বিষয় একটু চিন্তা করে।