বিয়ার গ্রিলস নিজের টিকে থাকার ক্ষমতা নিয়ে সারাদিন গর্ব করে বেড়ায় ডিস্কোভারী চ্যানেলে ম্যান ভারসাস ওয়াইল্ড অনুষ্ঠানে। তার এমন আত্মপ্রশংসা শুনে বাংলাদেশের একজন পরিবেশবাদী বলেই বসলেন, আপনি যতই হই কই কাউ মাউ করেন না কেন, আপনার পক্ষে বাংলাদেশে টিকে থাকা সম্ভব না; বিশেষ করে ঢাকা শহরে। এরকম একটা কথা ছিল বিয়ারের জন্য অপমান জনক। তাই বিয়ার গ্রিলস ঐ পরিবেশবাদীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মেরে বাংলাদেশের ঢাকা শহরে চলে আসলেন। এমন কি এখানে আছে যে বিয়ার গ্রিলস টিকে থাকতে পারবে না!
প্রথমে বিয়ার গ্রিলস গেলেন কাওরন বাজার এলাকায়। সারাদিন সেখানে ঘুরে বেড়ালেন। তারপর সন্ধ্যা হতে হতে তার প্রচন্ড ক্ষুধা পেল। তাই তিনি তার বক্তৃতা শুরু করলেন, এই মূহুর্তে কিভাবে টিকে থাকতে হয়। বিয়ার গ্রিলস বলতে শুরু করলেন, দেখুন ঢাকা শহরে টিকে থাকা কোন ব্যাপারই না আমার জন্য। এখন আমার খুব ক্ষুধা পেয়েছে। তাই আমি এখন চটপটি কিনে খাব। এখান কার চটপটি খুব সস্তা, তাই সহজেই টিকে থাকতে পারা যাবে। বিয়ার গ্রিলস এক মামার কাছ থেকে দশ টাকার চটপটি কিনে খেতে শুরু করল। আমি আফ্রিকান জংগলে সুপ জাতীয় অনেক খাবার খেয়েছি। কিন্তু এই চটপটিরর স্বাধটাই আলাদা। চটপটি খাওয়ার কারনে বিয়ার গ্রিলসের হল ডায়েরিয়া। তাই তাকে প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে হবে। আমি আফ্রিকার জংগলে থাকতে এখানে সেখানে প্রাকৃতিক কাজ সারতাম। কিন্তু ঢাকা শহর জনবহুল। তাই এখানে টয়লেট খুজে বের করতে হবে। টয়লেট খুজতে খুজতে বিয়ার গ্রিলস গাবতলি চলে আসল লোকাল বাসে। কিন্তু তাকে তার মধ্যেই বেশ কয়েকবার পথে পথে ড্রেনে ড্রেনে প্রাকৃতিক কাজ সারতে হয়েছে। ভাগ্যিস কেউ খেয়াল করেনি। টিকে থাকতে হলে যেকোন কিছু করা যেতে পারে। গাবতলি এসে একটি টয়লেট ভারা করলেন বিয়ার গ্রিলস। প্রতিবার পাঁচ টাকা। টয়লেটের পেছনে টাকা খরচ করতে করতে পকেট ফাঁকা হয়ে গেল প্রায়। বিয়ার গ্রিলস দুর্বল হয়ে পড়ল। কিন্তু টিকে থাকতে হবেই তাকে। তাই একটা হোটেলে গিয়ে একটা খাবার স্যালাইন কিনে পানি দিয়ে গোলাতে শুরু করল। কিন্তু একি অবস্থা। পানি যে ঘোলাটে! যাক কোন ব্যাপার না। এতে ভিটামিন রয়েছে। যা আমাকে চাংগা করে তুলবে। বিয়ার গ্রিলস হোটেলের স্যালাইন পানি খাওয়ার পরে সে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ল। পরে সেটা গড়িয়ে গেল কলেরার মধ্যে। বিয়ার গ্রিলস দুই দিন হল ঢাকা শহরে এসেছে। তার ভিতর সে রোগে আক্রান্ত হয়ে দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের মত কংকাল হয়ে গিয়েছে। তাকে পাওয়া গেল একটা ড্রেনের পাশে। আধা মরা অবস্থায়। ডিসকোভারী চ্যানেলের লোকজন অনেক কষ্টে তাকে খুজে বের করল। দেশে নিয়ে চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হল বিয়ার গ্রিলস। সাক্ষাতকারে তিনি ঢাকা শহরে টিকে থাকার অনুভূতি নিয়ে বললেন, আফ্রিকার জংগলে এত সাপ বিচ্ছু খেলাম, কিছুই হল না, অথচ ঢাকার শহরে দশ টাকার চটপটি খেয়ে আমার এই অবস্থা ।। „..
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:০৩