এই বর্ষায় নদী মাতৃক বাংলার রূপ উপভোগ করতে চাইলে বর্ষায় প্যাডেল স্টিমারে চেপে বসতে পারেন। দু'চোখ ভরে দেখে নেওয়া যাবে বাংলার সৌন্দর্য। কোথাও জেলেদের মাছধরা, কোথাও আবার রঙিন পাল তুলে নৌকার সারি, কোথাও আবার নদীর দুপাশজুড়ে সবুজের গালিচা বিছানো বিস্তৃত ধানক্ষেত। কোথাও দেখা মিলবে নদীর বুকে সন্ধ্যা নামার মনকাড়া দৃশ্য।
এগুলো বয়সে বেশ প্রবীণ, ব্রিটিশদের তৈরি। এককালে স্টিমারগুলো চলত কয়লার ইঞ্জিনে, এখন চলছে ডিজেলে।এর প্রথম শ্রেণীর কেবিনগুলো দোতলায়, সামনে বড় খোলা জায়গায় পুরোনো আদলে বসার আসন, ভেতরে পরিপাটি বিছানা, আছে তাপনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাও। প্রতিটি কেবিনের সঙ্গেই আছে বারান্দা।১ম শ্রেনীর কেবিন গুলো সাধারন লঞ্চ গুলোর চেয়েও অনেক সুন্দর পরিপাটী। আর বিশেষ পোশাকে সার্বক্ষণিক সেবাকর্মী পাওয়া যাবে দোরগোড়ায়।
১৯৪৭ সনে দেশ বিভাগের পর বৃটিশ সরকারের রেখে যাওয়া ইন্ডিয়ান জেনারেল নেভিগেশন এন্ড রিভার ষ্টীম নেভিগেশন কোম্পানীর সকল দায়-দেনা সহ গঠন করা হয় পাকিস্তান ষ্টীমার্স সার্ভিস।বৃটিশদের রেখে যাওয়া এই সংস্থার অধীনে পিএস গাজী, পিএস অস্ট্রীচ, পিএস টার্ন, পিএস কিউই, পিএস শেলা, পিএস লালী, পিএস সান্দ্রা, পিএস মেঘলা, পিএস মাসউদ, পিএস লেপচা নামক ১০ টি ষ্টীমার নিয়ে চালু হয় পাকিস্তান ষ্টীমার্স সার্ভিস। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সনে গঠিত হয় বাংলাদেশ ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ জলপরিবহন সংস্থা)।এই জাহাজগুলোর বৈশিস্ট হলো জাহাজগুলো সবই প্যাডেল হুইল চালিত এবং কয়লায় চালিত। পরবর্তীতে কয়েকটি জাহাজ কয়লা থেকে ডিজেলে চালানোর জন্য রুপান্তরিত হয়েছিল।প্রায় শতবর্ষী এই জাহাজগুলোর নির্মাতা #ডেনমার্ক শিপিয়ার্ড। ইঞ্জিনও প্রস্তুত করেছে ডেনমার্ক।চুক্তি মোতাবেক বিভিন্ন সময় জাহাজের ইঞ্জিন ওভারহলিং করেছে ডেনমার্ক সরকার।
এই সংস্থার পিএস গাজী, কিউই এবং অস্ট্রীচ নামক জাহাজ তিনটির সুখ্যাতি অবিভক্ত বাংলা এবং বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশ জুড়ে। অনেক অনেক দেশের রাস্ট্র নায়ক থেকে শুরু করে বেশীর ভাগ রাস্ট্রীয় অতিথিদের মুগ্ধ করেছে এই তিনটি জাহাজ। বর্তমানে পিএস #গাজী শুধুই স্মৃতি,৯০’র দশকে অগ্নিকান্ডে পুড়ে যায় গাজী। লেপচা, অস্ট্রীচ, মাসউদের অবস্থাও তথোইবচঃ! এইসব জাহাজের খাবারের মান, পরিবেশনের মান ছিল ভোজন রশিকদের প্রধান আকর্ষন।এখন তা শুধুই ইতিহাস!
গাজী শুধুই স্মৃতি,৯০’র দশকে অগ্নিকান্ডে পুড়ে যায় গাজী (উপরের স্টীমার টি)।
ঢাকা থেকে শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টায় ছেড়ে মোড়েলগঞ্জ পৌঁছায় পরদিন দুপুর নাগাদ।অনলাইন এ টিকেট পাবেন।
ঢাকা-চাঁদপুর-বরিশাল-ঝালকাঠি- কাউখালী-হুলারহাট- চরখালী -বড় মাছুয়া (মঠবাড়িয়া)-মোড়লগঞ্জ-সান্ন্যাসি-মংলা-খুলনা। বর্তমানে নাব্যতা সংকট এর কারনে, মোড়লগঞ্জ পর্যন্ত যায়।
ফোনঃ ০২-৯৫৫৯৭৭৯
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ Launch Lover - লঞ্চ ভালোবাসি (ঝালকাঠি গাবখান চ্যানেল থেকে তোলা।)
বাংলাদেশ এর নৌ রুটে চলাচল কারী সকল ধরনের জাহাজ/লঞ্চ নিয়ে ভারচুয়াল জগতে, আমরা এই Launch Vessel Finder's Bangladeshপেজ এ টিউন করে থাকি, এগুলোতে যাতায়াত এর ভালো মন্দ, সময়, যাত্রী সচেতনতা সব কিছু। শুধু মাত্র নৌযান এর প্রতি ভালোবাসা থেকেই আমরা কিছু নৌযান পাগল ছেলে পেলে কাজ গুলো করি। আমাদের পেজ টা ঘুরে আসার আমন্ত্রন রইল। আর হ্যাঁ ছবি গুলো আমাদের পেজ এর ভাই ব্রাদার লঞ্চ লাভার রাই তুলেছে। আর কোন ইনফো দরকার হলে আমাকে আমার ফেবু তে নক করতে পারেন।
আমাদের পেজঃ https://www.facebook.com/vesselfinderbd/
সব শেষ এ আমাদের ইউটিউব চ্যানেল থেকে দিনে ও রাতে লঞ্চ ভ্রমণের দুটি ভিডিও দেখুনঃ
ভিডিও ২
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুনঃ Click This Link
আমার ফেসবুক লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/zahidibnejahan
আমার লঞ্চ বিষয়ক আগের পোস্ট গুলোঃ
১৪ জুলাই নদীতে ভাসবে এমভি মধুমতি (BIWTC এর নতুন জাহাজ)
সুরভী ৯ বরিশাল রুটের সবচেয়ে বড় জাহাজ
BIWTC জাহাজ এম ভি বাঙালি এর রিভিও
নিঝুম দ্বীপ এ লঞ্চ ভ্রমণের সব তথ্য
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:০০