somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমরাস্ত্রে শক্তিশালী মিয়ানমার ঢাকায়ও আঘাত হানতে পারে: ড. কলমিউল্লাহ

০২ রা অক্টোবর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সমুদ্রে তেলগ্যাস উত্তোলন নিয়ে যুদ্ধ বাধলে প্রথম দিনই বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন দখল করে নেবে মিয়ানমার। তাদের যে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র রয়েছে তা দিয়ে শুধু টেকনাফ কক্সবাজার বা চট্টগ্রাম নয়, ঢাকায়ও আঘাত হানতে পারবে তারা। সে তুলনায় মিয়ানমারকে মোকাবিলায় ভৌগলিক দিক থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান খুবই দুর্বল। এহেন পরিস্থিতি এড়াতে সরকারকে দ্রুত কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদারের কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ম্রোচেট-এর সাবেক সভাপতি ও উপদেষ্টা প্রফেসর ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।

গতকাল আমাদের সময়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, বিশ্বের প্রায় সকল দেশ থেকেই বিচ্ছিন্ন একটি দেশ মিয়ানমার। এই বিচ্ছিন্নতার কারণে তারা এক ধরনের আত্মনির্ভরশীলতা গড়ে তুলেছে। সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে অস্ত্রশস্ত্র গোলাবারুদের জন্য কোনো দেশের ওপর নির্ভর করতে হয় না। তাদের নিজস্ব ১৩টি সমরাস্ত্র কারখানা রয়েছে।

কলিমউল্লাহ জানান, বর্তমানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৩ লাখ। ২০১০ সালের মধ্যে তারা সৈন্য সংখ্যা ৫ লাখে উন্নীত করার চিন্তা-ভাবনা করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তের সঙ্গে মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশ। সীমান্তে (টেকনাফের উল্টো দিক) নাফ নদীর ওপারেড় মন্ডু শহরের কাদিরাবাদে তাদের একটি এয়ারপোর্ট রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি তৈরি করা হয়েছিল। অনেকটা পরিত্যাক্ত এই বিমানবন্দর আরো আধুনিকায়ন করে বিমান চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে।

আরাকানের রাজধানী আকিয়াবের বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য ছিল ৪ হাজার ৮শ’ ফিট। ১৯৯১ সালে তা বাড়িয়ে ৫২শ ফিট করেছিল। বর্তমানে তা ৭ হাজার ফিট পর্যন্ত বাড়িয়েছে। মিয়ানমারের বিমানবাহিনীর মিগ-২১, মিগ-২৯ ও এফ-৭ রয়েছে। এসব অনায়াসেই আকিয়াব থেকে উড়তে পারবে।

কলিমউল্লাহ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এফ-৭ এর রেঞ্জের মধ্যে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রয়েছে। আর মিগ-২৯ ইচ্ছা করলে ঢাকায় হিট করতে পারবে। তাছাড়া নিজস্ব প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে তাদের ফ্রিগেড তৈরি সক্ষমতা রয়েছে।

তিনি বলেন, আনবিক ক্ষমতাধর শক্তিশালী রাষ্ট্র উত্তর কোরিয়া এবং ইসরাইলের সঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক সহযোগিতার ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে- যা যথেষ্ট ভাববার বিষয়। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ইসরাইল আমাদেরকে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিও প্রদান করেছে।

কলিমউল্লাহ বলেন, ভৌগলিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা সমতল ভূমি আর মিয়ানমার পার্বত্য এলাকা। তারা পার্বত্য এলাকায় যুদ্ধ বিদ্রোহে অভ্যস্ত। অপরদিকে সমরাস্ত্রের দিক থেকে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকায় স্থল বা জল যে কোনো যুদ্ধে তাদের মোকাবিলা করা আমাদের সেনাবাহিনীর পক্ষে যথেষ্ট কষ্টকর হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত খুবই ছোট থাকার কারণে প্রতিরক্ষা নীতিতে মিয়ানমারকে কখনো বিবেচনায় নেয়া হয়নি। আমরা সবসময় ভারত নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি। এখন এই পরিস্থিতিতে আমাদেরকে ভারতেরই দারস্থ হতে হবে।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, মিয়ানমারের পাশ্ববর্তী দেশ হিসেবে চীনের সহযোগিতা তারা পেতে পারে। সেক্ষেত্রে এখনই চীনের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক যোগাযোগ বাড়ানো দরকার। বন্ধুরাষ্ট্র চীনের গঠনমূলক কূটনীতির কল্যাণে গত নির্বাচন পূর্বকালীন সৃষ্ট পরিস্থিতি থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি।

কলিমউল্লাহ বলেন, স্থল হোক আর জল হোক, দখলে কার সেটা মূল কথা। সেক্ষেত্রে সমুদ্রে তেলগ্যাস উত্তোলন করতে গেলেই বাধা সৃষ্টি করবে মিয়ানমার। তিনি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অম্লমধুর। সেখানে নার্গিস আঘাতের পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীই প্রথম সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। মিয়ানমারও সেটা গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, অনাগত পরিস্থিতি কূটনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করতে হবে। দ্রুত ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে মিয়ানমারের সঙ্গে যে সব বিষয়ে সমঝোতা হয়েছিল তা কার্যকরে অগ্রাধিকার দেয়া যেতে পারে। এখন থেকেই পারস্পারিক সহযোগিতার প্রচেষ্টা চালানো যেতে পারে। সার্কের পাশাপাশি আমাদেরকে আশিয়ানের সদস্য হওয়ার চেষ্টা চালাতে হবে। মিয়ানমার যেহেতু আশিয়ানভুক্ত দেশ- সেক্ষেত্রে এটা হতে পারে আমাদের জন্য কমন প্লাটফর্ম।
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×