somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপামর ছাত্র-শ্রমিক-জনতার এই গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে এটাই একমাত্র মুখ্য বিষয়

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গণতন্ত্রের একটা অন্যতম মূল ব্যাপার হলো সরকার খারাপ কিছু করলে, বিরোধী দল সেটার গঠনমূলক সমালোচনা করবে।
যদিও বাংলাদেশে সরকার ভাল খারাপ যাই করুক গঠন-অগঠন দুই রকম সমালোচনাই হয়। শুধু যে রাজনৈতিক বিরোধী দল সমালোচনা করবে তা না।
রাজনৈতিক ভাবে সচেতন এবং মোরালিটি থাকা নাগরিকের দ্বায়িত্ব সরকারের সমালোচনা করে ভুল শোধরাতে সুযোগ দেয়া এবং বাধ্য করা।

আর এইজন্যই সরকারের যেকোন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনগণ প্রতিবাদ করলে, খুব স্বাভাবিক ভাবেই বিরোধীদল গুলো সেই সুযোগ নিবে এবং প্রতিবাদ বিক্ষোভ করবে। এটাই হওয়ার কথা এবং এটাই হয়। আর এটা যদি না হয় তাহলে বুঝতে হবে দেশে কোন বিরোধী দল নেই। আছে কেবল সরকার বনাম জনগণ, যেটা অসম্ভব।

পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিজম কায়েম করেছিল ডিভাইড অ্যান্ড রুল পলিসিতে। আর দুঃখজনক ভাবে বায়াজড, সেমি বায়াজড আর রাজনৈতিক অসচেতন নাগরিক বরাবরই স্বৈরাচারী সরকারের দেয়া এই টোপ গিলেছে।

দাবী যতই যৌক্তিক হোক না কেন বলা হতো এটা বিরোধী দল বিএনপি-জামাতের আন্দোলন। অথচ এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা গনতন্ত্রে।
আর আন্দোলন কারীরাও বলতো বিএনপি জামাত যাতে আন্দোলন নষ্ট না করে। তারা প্রয়োজনে সরকারের গনবিরোধী সিদ্ধান্ত মেনে নিবে কিন্তু আন্দোলনে বিএনপি জামাত অংশগ্রহণ করুক চাইতো না। বিএনপি জামাত শুরু করলে আন্দোলন শেষ পর্যন্ত টিকতো না, আন্দোলন কারীরাই দুই ভাগে ভাগ হয়ে যেতো।

এই একটা কার্যকর ন্যারেটিভ এস্টাবলিশমেন্ট করেছে পতিত স্বৈরাচার আর তার পালিত মিডিয়া। শহুরে মধ্যবিত্ত সমাজও সরকার বিরোধী না হইয়া সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার রাস্তা খুঁজত। এলিট শ্রেণি এসব গায়ে মাখতো না, কারণ তাদের এসবে যায় আসে না তেমন।

২০২৪ এর ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ অভ্যুত্থান সফল হয়েছে শুধুমাত্র স্বৈরাচারের এই ট্যাগিং ন্যারেটিভ ভাঙার মাধ্যমে। অনেক ডিভাইড অ্যান্ড রুল বিগত ১০ বছরের মত খেলা হয়েছে কিন্তু প্রত্যেকটাতেই ব্যর্থ হয়েছে।

এই আন্দোলনে ছাত্রদল আর শিবির ছিলো এবং থাকাটা খুবই স্বাভাবিক। স্বৈরাচারী সরকার থেকেও বারাবার বলা হচ্ছিল। ভাবটা এমন যে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দলোনও করবে একমাত্র ছাত্রলীগ।

যাইহোক, সৌভাগ্যক্রমে আন্দোলন কারীরা এই ডিভাইড অ্যান্ড রুলের ফাঁদে পা দেয় নি। যার কারণে আন্দোলন পেঁছানোর জায়াগায় যোজন যোজন ভাবে এগিয়েছে। সাধারণ মানুষও কোন রাজনৈতিক ব্যানার না পেয়ে তুমুল ভাবে সমর্থন এবং রাস্তায় নেমে এসেছে।

আন্দোলন সফল হওয়ার পরে এটা খুবই স্বাভাবিক ছিল যে এখান থেকে ধীরেধীরে ছাত্রদল-ছাত্রশিবির খোলশ ছেড়ে বেরিয়ে আসবে। বরঞ্চ এই ব্যাপারটা একটু দেরীতেই হয়েছে প্রতিবিপ্লবের ভয়ে।

ইনফ্যাক্ট, আন্দোলনের সমন্বয়করা এমন নির্যাতিত হলো, আবার তাদের অনুপস্থিতিতে নতুন সমন্বয়ক দাঁড়িয়ে গেলো। এটা দেখেতো তখনই সন্দেহ হচ্ছিলো যে সমন্বয়কদের কতজন জানি শিবির। আর শিবির হলেও অন্তত তখন যাতে ফাঁস না হয় বা নিজেরা নিজেদের এক্সপোজ না করে। তাহলে সব শেষ। সেই পুরনো বিভাজনের খেলা শুরু হয়া যাবে।

এতকিছুর পরে আপামর ছাত্র-শ্রমিক-জনতার এই গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে এটাই একমাত্র মুখ্য বিষয়। কে ছিলো, কে ছিলো না এইসব বিষয় গৌণ।

সাধারণ মানুষ ঘরে ফিরেছে। কিন্তু মাঠে রয়েছে ঘোষিত-অঘোষিত রাজনৈতিক ছাত্ররা। গণ অভ্যুত্থানের সুফল পেতে হলে যৌক্তিক এবং গঠনমূলক আলোচনা সমালোচনার মাধ্যেম একতা নিয়ে থাকতে হবে। তা না হলে গণহত্যা সমর্থন কারীরা ধীরেধীরে গর্ত থেকে বের হয়ে পুনর্বাসিত হওয়ার চেষ্টা চালাবে। আবার কেউ কেউ মাঠে থাকা দল-শিবির-সমন্বয়কের ভীড়ে ঢুকে যাবে, পুনর্বাসিত হবে তারপর আন্দোলনকারীদেরই বারোটা বাজানোর চেষ্টা করবে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:০৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×