ঝিলমিল,
তোমার বৃদ্ধকাল কেটে যাবে অনায়াসেই-
আমার যৌবন বিনাশ করে তোমার জন্য লিখে যাচ্ছি সহস্র সঞ্জীবনী মহাকাব্য।
ঝিলমিল,
আমি বেঁচে থাকবো আমি জানি-
আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে তুমি তোমার নাভিমূলে;
নারীত্বের পবিত্র জলে ধুয়ে মুছে যতন করে -
আমাকে তুমি বাঁচিয়ে রাখবে ফি-মাসে।
আমি জানি, আমাকে তুমি দেবে না বিদায় -
দেব না আমিও;
বিদায়ের অনুমতি কেউই আমরা চাইতে পারি না সমস্বরে।
আগমন ও বিদায় মধ্যবর্তী সময়ের নামঃ জীবন-সংক্ষেপ;
আমার আত্মজীবনী আমি লিখে যাচ্ছি তোমার আঙ্গুলে-
অতি সংক্ষেপ- খুব ছোট ছোট শব্দে-
সাংকেতিক কিছু ভাষা- কিছু লেখাজোকা;
শিখে নিও, শিখে নিও তুমি নির্ভুল সাঁটলিপি।
ঝিলমিল,
আমাকে জানতে জানতে আর নিজেকে খুঁজতে খুঁজতে
তোমার যখন খুব ইচ্ছে হবে আমাকে একবার ছুঁয়ে দেখবার-
তোমার যখন খুব ইচ্ছে হবে আমাকে একবার স্বচক্ষে দেখবার;
দেখতে আমাকে পাবে না তুমি- চোখের তারায় আমি আর নেই।
আমাকে আরও আরও পড়বার নেশা তোমাকে যখন পেয়ে বসেছে
আবার যখন পড়তে যাবে আমাকে - পারবে না।
আমার সুন্দর মুখটি দেখতে না পেয়ে-
চোখের ত্রিসীমানায় আমাকে না পেয়ে-
ততদিনে তুমি খুইয়ে ফেলেছ চোখের জ্যোতি।
চোখে চুমু খেয়ে বলি, ভয় নেই ঝিলমিল-
এই পর্যায়ের ভিতর দিয়ে আমাকেও হয়েছে যেতে-
অন্ধ আমিও হয়েছি বহুবার;
আলোর দেখা আমিও পাইনি বহুবছর।
চোখ ছাড়াও আমাকে তুমি পড়তে পাবে।
ঝিলমিল,
এই পর্যায়ে তুমি শিখে গেছো একটি বিশেষ পদ্ধতি-
পর্যায়ের নাম অনোপসিয়া, পদ্ধতির নাম ব্রেইল।
তুমি শিখে গেছো সাঁটলিপি- তুমি শিখে গেছো ব্রেইল;
এসো প্রিয়, এবার পড়ো আমাকে,
এসো প্রিয়, এবার আমাকে তুমি অভ্যেস করে নাও।
এসো প্রিয়, এবার আমার বুকে এসে পড়ো তুমি,
তোমার বৃদ্ধকাল কেটে যাচ্ছে অনায়াসেই-
বিশ্বাস করো ঝিলমিল,
আমার যৌবনও হয়ত এতটা মসৃণ ছিল না।
@জাহিদ অনিক
(ছবিঃ গুগল)
(২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:০৬