প্রতি বছর রোড এক্সিডেন্টে অনেক লোক মারা যায়, যার সংখ্যা ত্রিশ হাজার। গড় হিশেব করলে প্রতিদিন প্রায় দশ জন।
এইটা গণনার, গণনার বাহিরেও আরও অনেক থেকে যায়। আর আহতের সংখ্যা কত, এটা না বলাই ভালো। যারা শারীরিক ভাবে বেঁচে থাকে তাদের বেঁচে থাকা বা না থাকা সমতুল্য।
প্রতিদিনই অনেক লোকই তো রোড এক্সিডেন্টে মারা যায়, যাচ্ছে,নিরাপদ সড়ক নিয়ে জোরালো দাবী কোথায় আসছে? সেভাবে হয়তো আসেনা, মাঝে মাঝে হয়তো আমাদের টনক নড়ে যায়, আমার জোর দাবী জানাই। ১৩ই আগস্ট চলে আসলেই তারেক মাসুদ, মিশুক মনিরের কথা চলে আসে। আমরা নিরাপদ সড়কের জন্য জোর দাবী তুলি। সেবারও হয়েছে, সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী নিজে ঈদের মধ্যে নিরাপদ সড়কের জন্য তদারকি করেছেন । কারণ সেবার আমরা বুঝতে পেরেছি, আমরা কি হারালাম, কি ক্ষতি হয়ে গেলো।
মেধা বা ক্ষতির হিশেব করলে তারেক মাসুদ, মিশুক মনির কে হারিয়ে বাংলাদেশের অনেক অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। তাই হয়তো আমরা ১৩ই আগস্ট চলে আসলে নিরাপদ সড়কের জন্য মাথা ঘামাই। ঐ দিন তারেক মাসুদ, মিশুক মনিরের সাথে আরও লোক মারা যায়। তাদের কথা আমরা মনে আনিনা, মনে আসে না। তারা বাংলাদেশের প্রতিদিন রোড এক্সিডেন্টে মারা যাওয়া আরো দশটা লোকের মত।
তারেক মাসুদ, মিশুক মনিরের মত মানুষ মারা গেলেই আমাদের টনক নড়ে, আমরা নিরাপদ সড়কের জন্য মাথা ঘামাই।
তাই যদি হয়, বাংলাদেশে প্রতিদিনই দু এক জন করে তারেক মাসুদ, মিশুক মনির মানুষ মারা যাক। আমরা সামগ্রিক ক্ষতি বুঝতে পারতাম, টনক নড়তো।
গতকিছু দিন আগের ঘটনাই দেখুন, লঞ্চ ডুবে অনেক মানুষই মারা গেলো, যাদের সবাই সাধারণদের কাতারে।কিংবা আজকের কথাই ধরুন আজও ঝিনাইদহে চার জন মানুষ এক্সিডেন্টে মারা গেছে। তাদের নিয়ে কোন কথা হচ্ছে?
-হচ্ছেনা।
তারেক মাসুদ মিশুক মনিরের মত মানুষ মারা গেলেই আমরা ক্ষতিটা সামগ্রিক ভাবে বুঝতে পারি। আমাদের টনক নড়ে যায়।
আমরা ক্ষতি চাইনা,আরও তারেক মাসুদ, মিশুক মনির মারা যাক আমরা চাইনা। কোন সাধারণ মানুষ মারা যাক আমরা চাইনা। প্রত্যকের মানুষের জীবনই অমূল্য।