বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরর রহমান নিয়ে প্রণব সাহার গবেষণা ও পরিচালনায় প্রামাণ্যচিত্র দেখলাম। অসাধারণ সব তথ্য আর ফুটেজ। অনেক অজানা অজানা তথ্য।
শেখ মুজিব চার্চিলের কথা বললেন, তাকে তার ভালো লাগতো।
ছোট বেলায় স্কুলে পড়ার সময় দুই বন্ধু মিলে ক্লাস ক্যাপ্টেন হতে চাওয়াতে স্কুল শিক্ষক দুজনকেই ক্যাপ্টেন বানিয়ে দিয়ে বলেন, এটাই গণতন্ত্র, সবার সমান অধিকার। শেখ মুজিব স্মৃতিচারণে এই ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, এখান থেকেই তার গণতন্ত্র পাকাপাকি ভাবে মাথায় গেঁথে যায়। শৈশবের বেড়ে উঠা,পূজা প্লাবন ইত্যাদি তার অসাম্প্রদায়িকতার চেতনাকে শানিত করে।
ছয় দফা দাবি, তাতকালীন সময়ের মানুষদের বঙ্গবন্ধু নিয়ে দেশ নিয়ে যে স্লোগান, তা এক কথায় শিহরন জাগানোর মত।
বারবার শিহরিত হইছি। রাজপথে নারীদের দেশ মুক্তির দাবিতে মিছিল।
মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে সবাইকে একাত্মা করার জন্য তোমার নেতা আমার নেতা শেখ মুজিব, শেখ মুজিব বলে যখন সমস্বরে স্লোগান দিচ্ছিলো, কি বলবো? তাদের জয় বাংলা, জয় বাংলা ধ্বনি, কি বলবো! না দেখা পর্যন্ত কোন উপলব্ধি বোঝানো যাবেনা। অস্থায়ী সরকার গঠনের সময়কার প্রামাণ্য ফুটেজ! পৃথিবীতে এমন বিরল সরকার ব্যবস্থার শপথ গ্রহন,যেখানে কুলি, মজুর কৃষক,সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী সবার উপস্থিতি!!! যখন সরকার থেকে সাধারণ জনগণের একই চাওয়া মুক্তি একাত্ম ঘোষনা হয়ে যায়, পৃথিবীর সেরা সরকার ব্যবস্থার অস্থায়ী সরকার শপথ নেয়।
অনেক ইফেক্টিভ ভাষণ, কোন দিন দেখাই হতোনা।
শেখ মুজিবুর রহমানের বিদেশী সাংবাদিকের কাছে দেয়া ইন্টারভিউ এর ফুটেজ। কথোপকথন, পাট আছে, শ্রম আছে, জমি আছে, মাছ আছে দেশ বিনির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয় তার বক্তব্যে ।
লোকজন সব পাগলের মত শেখ মুজিবকে ভালবেসেছে,রাস্তাঘাট, গ্রাম মহল্লা, লোকালয়, স্কুল সব যায়গা। একজন মানুষ ঘিরে সবার আকাংখা, মূর্ত প্রতীক হয়ে রাজনীতিক কবি তার কবিতায় মানুষ মুক্তির কথা বারবার ভাষণে ব্যক্ত করলেন।
প্রামাণ্য ফুটেজে যা না দেখে উপলব্ধি করা সম্ভব না।
অনেক কথাই থেকে যাচ্ছে।কর্নেল ফারুকের বিদেশী সাংবাদিকের সাথে ইন্টারভিউ যেখান মুজিব কে হত্যা করার কারণ, কেন ইত্যাদি স্পটতা চলে আসে। প্রামাণ্যচিত্রটি না দেখে কিছুই উপলব্ধি করা সম্ভব না।
শেখ মুজিব তার জীবনের শেষ ভাষণ টা বার বার মনে আসতেছে -
শেখ মুজিব বার বার পেশাজীবীদের দাম্ভিকতা নিয়ে কথা বলতেছিলেন, আইছি, আমি ডাক্তারি পাশ করে আইছি, আমি উকিল হইছি...
তিনি বলতেছিলেন, শ্রমিকদের শ্রমের কারণে আপনারা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল ইত্যাদি পাশ করছেন, শিক্ষিত হয়েছেন হবেন, আপনারা তাদের সেবায় নিয়োজিত, আপনাদের দাম্ভিকতার কিছু নেই। সকল কিছুর পিছনে শ্রমিকের হাত, শ্রমিকের মজুর....
অসাধারণ সব তথ্য ও প্রামাণ্য ফুটেজ না দেখা পর্যন্ত অনেক কিছুই অদেখা থেকে যায়, অনেক কিছুই
উপলব্ধি করা সম্ভব হয়ে উঠে না।