ছোটবেলায় প্রথম কোন সিনেমা দেখেছি মনে নেই।
শুনেছি বেদের মেয়ের জোসনা সিনেমা যখন হলে চলে তখন চল্লিশ দিনের ছেলেরে নিয়ে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলো আমার মা।
সে হিশেবে বলতেই পারি জীবনের প্রথম সিনেমা দেখা বেদের মেয়ে জোসনা।
লোকজনের ভীড়ে সেদিন নাকি হাতের উপরে তুলে সবার মাথার উপর দিয়ে দিয়ে এগোতে হয়েছে।
প্রথম দেখা সিনেমা মনে করতে করলে, যা এখন মনে আছে বলতে পারি, প্রেমের সমাধি। তখনকার সময়ে বই দেখা।
মা বোন ফুঁফুদের সাথে প্রেমের সমাধি দেখাই আমার প্রথম বই দেখা যা এখনো মনে আছে।
মনের ভিতরে এখনো জায়গা করে নিয়ে আছে বাপ্পারাজ। প্রেমের সমাধি ছেড়ে মনের শিকল ছেড়ে পাখি যায় উড়ে যায়। নদীর পাড়ের উপর দিয়ে বাপ্পারাজ দৌড়ে যাচ্ছিলো আর গান হচ্ছিলো।
কি জেনে না জেনেই খুব কষ্ট হয়েছিলো বাপ্পারাজ এর জন্যে। সবার কাঁদা দেখে আমিও আর থেমে থাকতে পারিনি। এখনো মাঝে মাঝে প্রেমের সমাধির কথা মনে হয়। ভাবতে থাকি, পুরোনো বই দেখার ঘটনা। টারজান কবে দেখছি জানিনা, মনে আছে কোনদিন চিড়িয়াখানায় যাইনি বাঘ ভাল্লুক কিছুই দেখিনি। মফস্বল এলাকার ছেলে হিশেবে দেখা সম্ভবও ছিলো না। আব্বা পশু পাখি, মানে চিড়িয়াখানা দেখার সাধ মিটানোর জন্য আমি আমার বড় ভাইকে টারজান সিনেমা দেখাতে নিয়ে যায়। সিনেমায় নায়িকার ছোটখাটো পোশাকের জন্য অবশ্য পরে বের হয়ে আসতে হয়েছিলো। আব্বা দেখতে দেইনি।
রিকশা করে সিনেমার প্রচারণায় মাইকিং করা দেখে বাঁশের চোঙা দিয়ে পাড়ায় পাড়ায় মাইকিং করে বেড়াইতাম, আসিতেছে .... আসিতেছে।
দূরে সিনেমার মাইকিং কানে পরলেই দে দৌড়। পোস্টার দেখতে দেখতে রিকশার পিছন পিছন যাইতাম।
একবার তো হারিয়েই গেছিলাম, রিকশার পিছন পিছন যেতে যেতে। এই গ্রাম সেই গ্রাম করে অনেকদূর চলে গেলাম। সন্ধ্যা হয়ে গেছিলো কান্নাকাটি শুরু করছিলাম। এলাকার এক চাচা পরে কাঁদতে দেখে নিয়ে আসছিলো।
সালমান শাহ'র কথা মনে পরলেই খারাপ লাগে,প্রথম স্বপ্নের নায়িকা বলতে গেলে শাবনূর। তখন মনে হতো মেয়েটা এতো সুন্দর! পৃথিবীতে এর চেয়ে বড় সুন্দর কিছু নাই। ততোদিনে স্বপ্নের পৃথিবী সিনেমা হলে চলতে শুরু করেছে। .......................