সব কিছু নিয়ে হাঁপিয়ে যাওয়া বা পেরে না উঠার সম্ভূকগতির প্রতিযোগিতাকে ফেলে রেখে যথা বসবাস নিত্য খুঁজে ফেরা ৷ অবশেষে কাফকায় বিচ্ছিন্ন আবেগীয় অনুরণন আর ভুবন হারানোর দীর্ঘশ্বাস ৷ রইল কেবল...
একটি রাজকীয় বার্তা
তাহারা বললো, শুধু তোমারই জন্য মৃত্যুশয্যা হতে সরাসরি রাজা একখানা বার্তা পাঠিয়েছেন ৷ যার বিষয়বস্তু বড়ই বেদনাবিঁদূর ৷ পুঁচকে একটা ছায়া প্রত্যাখান করে দূরে সরে যাচ্ছে রাজকীয় সূর্যগোলক থেকে ৷ তিনি রাজঘোষককে বিছানার পাশে উপবিষ্ট হওয়ার আদেশ দিল এবং ফিসফিসিয়ে তার কানে বলল ৷ তিনি ধারণা করেছিলেন এটা এতই গুরুত্বপূর্ণ যে ঘোষককে বলল আবার পূণরাবৃত্তি করার জন্য ৷ মাথা নেড়ে নেড়ে তিনি সেটার যথার্থতা যাচাই করলেন ৷ আর সেটা হয়েছিল মৃত্যুশয্যায় উপস্থিত সকলের সম্মুখে ও তারপর প্রতিরোধের সব বাধাই ভেঙ্গে গেল ৷ সে সময় তাঁর রাজত্বের সব রাজণ্যেরা ঘিরে ছিল চারপাশ কেউ কেউ দাড়িয়েছিল বিছানায় উঠার সিঁড়িতে ৷ সকলের সামনেই তিনি রাজঘোষকে প্রেরণ করলেন ৷ প্রবল, ক্লান্তহীন ঘোষক তাৎক্ষণিকভাবেই যাত্রা শুরু করল ৷ হাত দিয়ে ঠেলে ঠেলে সে ভিড়ের মধ্য দিয়ে পথ করে নিল ৷ কেউ কেউ বাধা দিলেও সে বুকে রাজকীয় সূর্যের অঙ্কিত রাজচিহ্ন দেখাতে লাগল আর সবার চেয়েও দ্রুত পথ করে নিল ৷ কিন্তু ভিড় ক্রমাগতভাবেই বড় হচ্ছিল আর জমতে ছিল আরো ৷ যদি সে উন্মুক্ত খোলা মাঠে থাকত তবে সে উড়েও চলে আসতে পারত ৷ তাহলে হয়ত তুমি তার মুগ্ধ হাতের কড়াঁ নাড়া শুনতে পেতে তোমার দরজায় ৷ কিন্তু তার সকল চেষ্টা বিফলে পরিণত হল ৷ সে এখনও অভ্যন্তরস্থ সেই রাজকীয় প্যালেসে প্রচেষ্টায়রত ৷ হয়ত কখনই সে জয়ী হতে পারবে না ৷ যদিও সে সফল হয় তবু কখনও এতে কিছুই আর পাওয়া যাবে না ৷ তারপর সে হয়ত লম্বা লাফেই বিস্তৃত মেঠো প্রান্তর পার হয়ে যাবে তারপর দ্বিতীয় প্যালেসের মুখোমুখি হবে অতঃপর আবার সেই সিড়ি পার আবার মেঠো প্রান্তর তারপর আবার একটি প্যালাস আর এভাবেই হাজার বছর পার হয়ে যাবে ৷ কখনো সব বাধাঁ পেরিয়ে তোমার দরজায় আসতে পারে যদিও কখনই তা ঘটবে না ৷ সেই রাজকীয় রাজধানী শহর যা পৃথিবীর মধ্যমা আসলে তার সম্মুখে ৷ সেটি আবার অনেক উঁচুতে শক্ত পরতের উপর পরতের ভিতের উপর দন্ডায়মান আর তার চারপাশে পলির গভীর খাদ ৷ কেউ তাকে বাধ্য করেনি এপথে আসতে অবশ্য কোন মৃত ব্যাক্তির কোন গোপন বার্তাও তার কাছে নেই ৷ কিন্তু তুমি বসে আছ জানালার পাশে আর কল্পনায় ভাবছো কোন বিকেলে সেই বার্তাখানি আসবে ৷
গাছেরা
তুষার বরফে গাছের গুড়ির ন্যায় আমরা ৷ দেখতে অনেকটা গড়িয়ে পড়া নরম মসৃণ কেশের মতন যা ছোট একটু পরশেই আবার যথাস্থানে স্থাপিত হবে ৷ না এটা সম্ভব নয় কারণ তারা ভূতলের সাথে সুদৃঢ়ভাবে নিবেদিত ৷ কিন্তু সেটাও আসলে ধারণা করে নেয়া হয় ৷
উপকথা
ইঁদুর বলল,- হায় ! পুরো পৃথিবীটাই দিনে দিনে ছোট হয়ে যাচ্ছে ৷ প্রথমে তো এতই বড় ছিল যে আমার খুব ভয় করত ৷ আমি শুধু দৌঁড়াতাম আর দৌঁড়াতাম ৷ খুব খুশি হয়েছিলাম দূরে ডানে বায়ে দেয়ালগুলো দেখতে পেয়ে ৷ কিন্তু ঐ দেয়ালগুলো এত দ্রুতই ছোট হয়ে আসতে লাগল যে আমি এখন শেষ কামরায় আছি ৷ আর এই ফাঁদের শেষ কোণটির দিকে আমাকে দৌড়ে যেতেই হবে ৷দরকার ছিল তোমার দিকটি পরিবর্তন করার - বলেই বিড়াল ইঁদুরকে খেয়ে ফেলল ৷
**___**___**___**___**___**___**___**___**___**___
সাম্প্রতিক কালের জার্মানির কাফকা ব্যান্ডের কিছু গানের ভিডিও লিঙ্কঃ
উইন্টার
গ্রাব
হাউ ডগস্
১৯৯১ সালের স্টিভেন সডেনবার্গের পরিচালনায় কাফকার উপর ছবির লিঙ্ক View this link
কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল
********************************************************************