Waiting is painful. Forgetting is painful. But not knowing which to do is the worse kind of suffering.
----------Paulo Coelho
**__--**__--**__--**__--**__--**__--
হে ঈশ্বর দয়া কর, সে যেন এখন আমায় ফোন করে ৷ প্রিয় প্রভু, তাকে বল এখনই আমায় ফোন করতে ৷ তোমার কাছে আর কিছু চাইবার নেই আমার ৷ সত্যি বলছি এটুকু কি বেশী চাওয়া ! তোমার কাছে এ তো অতি ছোট চাওয়া ৷ অতি ক্ষুদ্র নগণ্য চাওয়া ! শুধু বল তাকে, বল ফোন করতে ৷ দয়া কর প্রভূ, দয়া কর, দয়া ৷
যদি নাই ভাবতাম এ নিয়ে তবে হয়ত ফোনটা বেঁজে উঠতো ৷ মাঝে মাঝে এরকম হয় ৷ যদি আমি অন্য কিছু ভাবতে পারতাম ৷ ভিন্ন কিছু যদি ভাবতাম ৷ গুনতে পারতাম পাঁচ থেকে পাঁচশত পর্যন্ত হয়ত এরইমধ্যে বেঁজে উঠতো ফোনটা ৷ গুনতাম ধীরে ধীরে কোন ফাঁকি না দিয়ে ৷ যদি তিন’শ গুনার পর বেঁজে উঠতো ফোন আর আমি ধরতে পারতাম না পাঁচশত পর্যন্ত না গণনা করে ৷ পাঁচ-দশ-পনের-বিশ-পচিঁশ-ত্রিশ-পয়ত্রিশ-চল্লিশ-পয়ঁতাল্লিশ-পঞ্চা...., ওহ প্লিজ বেঁজে উঠুক প্লিজ ৷
এই শেষ বারের মতন আমি ঘড়ির দিকে তাকাবো ৷ আর কখনই ফিরে দেখব না ৷ এখন সাতটা বেঁজে পাঁচ মিনিট ৷ সে বলেছিল পাঁচটায় ফোন করবে ৷ ‘প্রিয়া, ঠিক পাঁচটায় ফোন করব’ ৷ আমি নিশ্চিত সে আমায় তখন প্রিয়া বলেই সম্ভাষণ করেছিল ৷ এও জানি সে দু-দু’বার প্রিয়া বলে ডেকেছিল আমায় ৷ আবার যাবার সময়ও বলেছিল ‘বিদায় প্রিয়া’ ৷ সে খুব ব্যস্ত ছিল অফিসে বেশী কিছু বলতে পারে নাই তবুও বলেছিল ‘বিদায় প্রিয়া’ ৷ দু’দুইবার ৷ সে হয়ত ভুলে গেছে আমাকে ফোন করার কথা ৷ আমি এও জানি, তুমি তাদেরকে কখনই ফোন করবে না-তারাও এটা পছন্দ করবে না ৷ যখন তুমি তা জানবে তুমি তাদের কথা ভাবছো ও তাদেরকে চাইছো এবং এটাই তাদেরকে তোমার প্রতি ঘৃণার উদ্দেক করবে ৷ কিন্তু আমি গত তিনদিন যাবত তার সাথে কথাও বলেনি শুধু এ তিনদিনই নয় ৷ আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছি সে কেমন আছে যা আর সবার মত তার সাথে কুশল আলাপ ৷ এতে সে কখনই বিরক্ত হয়নি ৷ যা তাকে বিরক্তবোধটুকুও জাগ্রত করেনি ৷ সে বলেছিল ‘এটা এমন কিছু নয়’ তারপর বলেছিল সে আমায় ফোন করবে ৷ সে বোধ হয় কিছু বলেনি এমনটা ৷ সত্যি হল আমি তাকে জিজ্ঞাসাও করেনি ৷ নিশ্চিত আমি করেনি ৷ আমি চিন্তাও করেনি সে আমাকে টেলিফোন করবে কিনা বলেছিল ৷ তাহলে সে তা করবে না ৷ দয়া করে তাকে এমনটা করতে দিওনা ৷ ‘ঈশ্বর দিওনা’ ৷
‘প্রিয় আমি তোমাকে ঠিক পাঁচটায় ফোন করব বিদায় প্রিয়া’ ৷ সে খুবই তাড়ার ছলে ব্যস্ততায় আর আশেপাশে লোকজনের ভিড়ও অনেক ছিল ৷ তবু সে আমাকে দু’বার ‘প্রিয়া’ বলেছিল ৷ আমকেই তো বলেছিল ৷ মনে হয়েছিল আর কখনও যদি তাকে না দেখি ৷ হায়, এত টুকু ৷ বেশি নয়তো ৷ যথেষ্ট ছিল না যদি তাকে আর না দেখি ৷ প্লিজ আবার তাকে দেখতে চাই ৷ ঈশ্বর দয়া কর ৷ তাকে খুব করে দেখতে চাই ৷ খুব চাই ৷ ভাল হব আমি প্রভু ৷ চেষ্টা করব খুব ভাল হতে ৷ যদি তুমি আমায় তাকে আবার দেখাও ৷ যদি তুমি তাকে আমায় ফোন করতে উদ্বেলিত কর ৷ ওহ, সে যদি এখন আমায় ফোন করত ৷
আর প্রার্থনাকে ছোট করে দেখনা, প্লিজ ঈশ্বর ৷ তুমি তো বসে আছ সেখানে ৷ ধ্রব সাদা রঙের আর বয়ষ্ক তুমি সাথে আছে দেবদূতেরা পাশে শুয়ে আছে তারারা ৷ আমি তোমার কাছে প্রার্থনায় চেয়েছিলাম শুধু একটি ফোন কল ৷ আহ, হেসো না ঈশ্বর ৷ তুমি তো জানো না কি রকম লাগে ৷ তুমি তোমার সিংহাসনে কতই না নিরাপদ যেথায় নীলাভ আভা ছড়ায় চারিদিকে ৷ কেউ তোমাকে স্পর্শও করতে পারে না, আবার কেউ তোমার হৃদয় তার হাতে নিয়ে নাড়াচাড়াও করতে পারে না ৷ এতো যাতনা, শুধু কষ্ট, ভীষণ যাতনা ৷ তুমি কি সাহায্য করতে পারনা ? তোমার প্রিয় পুত্রের দোহাই লাগে আমায় সাহায্য কর ৷ তুমি তো বলেছো তার নামে কিছু চাইলে তুমি তা মঞ্জুর কর ৷ তোমার প্রিয় পুত্র কঙ্কটধারী যিশুর নামে প্রার্থনা যে, হে ঈশ্বর তাকে এখনই টেলিফোন করতে বল ৷
আমাকে অবশ্যই এইরূপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে ৷ এমনও তো হতে কোন যুবক কোন যুবতীকে ফোন করবে বলেছিল কিন্তু পারল না হয়ত কোন কারণে ৷ অতিব বেদনার ৷ কারণ ঠিক এই মুহূর্তে পৃথিবীতে কত কিছুই না ঘটছে ৷ কিন্তু আমার তাতে কি পৃথিবীতে কিনা হচ্ছে তাতে ? টেলিফোনটা বাজছে না কেন ? কেন না ? কেন না ? ফোন কর ? দয়া করে ফোন কর ? তুমি পচাঁ জগন্য ! তোমার কি ফোন করতে কষ্ট হচ্ছে ? খুব কষ্ট ? মনে হয় তাই হচ্ছে ! পচাঁ তুমি ৷ আমি তোমার নিখাদ শিকড় দেয়াল থেকে তুলে ফেলব ! আমি তোমার কদাকার মুখকে থেতলে দেব ! নরকে যাও !
না না আমাকে অবশ্যই থামতে হবে ৷ আমাকে অন্য কিছু নিয়ে ভাবতে হবে ৷ এটাই আমাকে করতে হবে ৷ ঘড়িটাকে অন্য কামরায় রেখে আসি ৷ তাহলে আর তাকাতে পারব না সেটার দিকে ৷ যদি এটার দিকে না তাকাই তাহলে শোবার কামরায় যাব কিছু একটা করতে ৷ আবার ঘড়ির দিকে তাকানোর আগেই হয়ত সে আমায় ফোন করবে ৷ খুব খুশি হব সে যদি ফোন করে ৷ যদি সে ফোনে আমায় বলে আজ রাতে দেখা হবে না ৷ তবে আমি বলব ‘ঠিক আছে প্রিয় সবকিছু ঠিক আছে’ ৷ আমি আবার তার সাথে প্রথম দেখার ঘটনার মতন হয়ে যাব ৷ তবে হয়ত সে আবার আমায় পছন্দ করবে ৷ আমি খুব মিষ্টি ছিলাম ৷ প্রথম কাউকে ভালবাসলে মানুষের প্রতি সদয় হতে হয় ৷
আমার মনে হয় সে আমায় খানিকটা ভাল বাসে ৷ সে ‘প্রিয়া’ বলে বলতেই পারে না আজ দিনে দু’বার ৷ সে এখনও হয়ত অল্প ভালবাসে ৷ ছোট একটু ভালবাসলেও সব কিছু হারিয়ে যায় না ৷ ঈশ্বর সে যদি আমায় ফোন করে তবে আর বেশী কিছু চাইনা ৷ আমি অনেক ভাল হবো তার প্রতি ৷ প্রীত হবো ৷ আগের মতন তবে হয়ত সে আবার আমায় ভালবাসবে ৷ এবং তাহলেই তোমার কাছে আর কিছু চাই না ৷ তুমি দেখে নিও প্রভু ! তুমি কি তাকে ফোন করতে বলবে ? পার না, প্লিজ ! প্লিজ ! প্লিজ !
তুমি কি আমায় শস্তি দিচ্ছো, হে ঈশ্বর আমি হয়ত খারাপ ! তুমি কি রাগ করেছো সেই কাজের জন্য আমার প্রতি ? ওহ প্রভু কত কত খারাপ মানুষ আছে - তাদের ছেড়ে শুধু আমায় কষ্ট দিও না ৷ শুধু ব্যাথাই দেও- তা আরো কষ্টকর ৷ প্রভু আমরা তো কাউকে আঘাত করেনি ৷ কাউকে কষ্ট দিলই তো তাকে শাস্তি দেওয়া হয় ৷ তুমি তো জান, আমরা কোন আত্মাকে কষ্ট দেইনি ৷ তুমি তো জান, এটা কষ্টকর, জানো তো ? তাই, তুমি কি পার না, তাকে এখন ফোন করাতে ?
যদি সে আমায় ফোন না করে তবে আমি জানি ঈশ্বর আমার উপর রাগ করবে ৷ পাঁচ থেকে পাঁচশ পর্যন্ত গুনবো তবে যদি সে আমায় ফোন করে ৷ আমি জানি প্রভু আমাকে আর সাহায্য করবেন না ৷ এটাই হবে তার সংকেত ৷ পাঁচ-দশ-পনের-বিশ-পচিঁশ-ত্রিশ-পয়ত্রিশ-চল্লিশ-পয়ঁতাল্লিশ-পঞ্চাশ….খারাপ ৷ জানি সেটা খারাপ ৷ ঠিক আছে প্রভু আমাকে নরকে পাঠিয়ে দেও ৷ তুমি ভেবেছ তোমার নরকের ভয় দেখাবে ৷ নরক, তুমি তাই ভেবেছ ? তোমার নরকের চেয়েও মন্দ আমি ৷
এটা আমার করা উচিত না ৷ কখনই এরকম আমার করা উচিত না ৷ তার হয়ত খানিকটা দেরি হবে ফোন করতে ৷ এতে পাগলামি করার কিছুই নাই ৷ সে হয়ত ফোন না করে সরাসরি এখানে চলে আসবে ৷ সে চলে যেতে পারে আমাকে কাঁদতে দেখলে ৷ তারা কাউকে কান্নারত দেখতে চায় না ৷ সে কখনও কাঁদে না ৷ প্রভুর কাছে চাই, আমি তাকে কাঁদাতে ৷ ইচ্ছা আমার সে কাঁদুক ৷ মেঝের দিকে তাকিয়ে থাকবে আর অনুভব করবে ভারাক্রান্ত হৃদয় ও দোষী ভাববে নিজেকে ৷ আমার ইচ্ছা আমি তাকে নরকের মত কষ্ট দিতে পারব ৷
আমার সম্পর্কে তার বোধ হয় এমন ইচ্ছা নেই ৷ আমার মনে হয় সে বোধ হয় জানেই না আমি কি অনুভব করি তার সম্পর্কে ৷ আমার প্রত্যাশা, সে জানবে আমি না বললেও ৷ তারা পছন্দ করে না তাদের কারণে এইভাবে তোমার কান্না দেখতে ৷ যদি এরূপ কর তবে তারা ভাববে, তুমি অধিকার ও কর্তৃত্ব দেখাচ্ছো ৷ তারপর তারা তোমাকে ঘৃণা করবে ৷ তখনই ঘৃণা করবে যখন তুমি আসল ভাবনা বলে ফেলবে ৷ তোমাকে সর্বদা একটা ছোট খেলা খেলতে হবে ৷ ওহ ভেবেছিলাম আমরা এমনটা করব না ৷ আরো ভেবেছিলাম সময় এতো বড় যে আমি যা খুশি বলতে পারব ৷ মনে হয় তুমি তা কখনই পারবে না ৷ মনে হয় কিছুই বড় না তা বুঝানোর জন্য ৷ আহ সে যদি ফোন করত আমিও তাকে বলতে পারতাম না কতটা দুঃখী আমি ৷ তারা তো এধরণের মানুষদেরকে ঘৃণা করে ৷ আমি অনেক আনন্দিত হতাম সে হয়ত সাহায্য না করলেও আমায় পছন্দ করত ৷ ইশ সে যদি ফোন করত ৷ একবার ফোন করত ৷
মনে হয় তাই করবে সে ৷ সম্ভবত সে আমাকে না জানিয়ে চলে আসবে এখানে ৷ মনে হয় সে এখন রাস্তায় ৷ কোন অঘটন কি হল তার ? না, খারাপ কিছুই হবে না তার ৷ তার কিছু হবে ভাবতেই পারি না আমি ৷ চলে যাবে সে ভাবতেই পারি না ৷ চিন্তাতেও আসে না তার নিথর প্রাণহীন দীর্ঘকায় দেহটির কথা ৷ আমি চেয়েছিলাম তার মৃত্যু ৷ কি ভয়ংকর ইচ্ছে ? মনোমুগ্ধকর ইচ্ছে ? যদি তার মৃত্যু হয় তবে সে আমারই রবে ৷ যদি তার মৃত্যু হয় তবে আজ ও বিগত সপ্তাহ নিয়ে ভাবনায় থাকব আমি ৷ শুধু ভাববো ফেলে আসা মুগ্ধ ক্ষণগুলোকে ৷ সব ছিল সৌন্দর্যে ভরপুর ৷ কল্পনা করি তার মৃত্যু ৷ আমার ইচ্ছায় তার মৃত্যু ৷ সে মৃত ৷ মৃত ৷
এটা শিশুসুলভ ৷ আসলেই শিশুসুলভ চিন্তা ৷ কারণ তোমাকে কেউ ফোন করল না আর তাতে তুমি তার মৃত্যু কামনা করলে ৷ যেখানে শেষ মুহূর্তে সে ফোন করবে বলেছিল ৷ মনে হয় ঘড়িটি দ্রুত চলছে ৷ জানি না কোনটা সঠিক ৷ মনে হয় সে অনেক দেরি করছে ৷ যেকোন কিছু তাকে হয়ত কিছুটা দেরি করে দিয়েছে ৷ সম্ভবত তাকে অফিসে থাকতে হয়েছে ৷ মনে হয় সে বাসায় চলে গেছে ও সেখান থেকে আমাকে ফোন করবে ৷ এমনও হতে পারে কেউ হয়ত চলে এসেছে আর তার সামনে আমাকে ফোন করতে বিব্রতবোধ করছে ৷ মনে হয় সে চিন্তিত খানিকটা, কিছুটা, অল্প আমাকে অপেক্ষায় রাখার জন্য ৷ এমনও হতে পারে সে আশায় আছে আমার ফোনের অপেক্ষায় ৷ আমাকেই ফোন করা উচিৎ ৷ আমার করা উচিৎ ৷ আমায় তাকে ফোন করা উচিৎ ৷
অবশ্যই না ৷ কখনই না ৷ অবশ্যই না ৷ ওহ, ঈশ্বর আমাকে ফোন করতে দিতে পারনা তুমি ৷ দয়া করে এটা হতে বিরত রাখ ৷ আমি জানি, তুমিও আমার মত জান, সে যদি আমায় নিয়ে চিন্তায় থাকে তবে সে যেখানেই থাকুক আর যত লোকেদের দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকুক না কেন অবশ্যই আমাকে ফোন করবেই ৷ ঈশ্বর আমাকে বুঝতে দেও দয়া করে ৷ তোমাকে অনুরোধও করি না সহজ করে দেও সবটা ৷ তুমি পারও না যেমন সহজে পৃথিবীটা সৃষ্টি করে ফেলেছো ৷ আমাকে বুঝতে দিও প্রভু ৷ আমাকে আশান্বিত হতে দিও না ৷ আমাতে কোন স্বান্তনাবোধ তৈরী হতে দিও না ৷ আশায় জাগ্রত রেখ না আমাকে, প্রভু ৷ প্রিয় ঈশ্বর ৷ দয়া করে, দিও না ৷
আমি তাকে ফোন করব না ৷ কখনই ফোন করব না যতদিন বেঁচে থাকি ৷ আমার ফোন করার আগেই সে নরকে যাবে ৷ তুমি আমায় শক্তি দিও না প্রভু ৷ আমি নিজেই অর্জন করব সেটি ৷ যদি সে আমাকে চায় তবে আমাকে পাবে ৷ সে আমার সবটা জানে ৷ জানে কোথায় আমি অপেক্ষা করছি ৷ সে নিশ্চিত আমাকে জানে, নিশ্চিত ৷ আমি অবাক হই কিভাবে তোমাকে তারা ঘৃণা করে যখন তারা তোমার অস্তিত্বে সুনিশ্চিত ৷ আমায় এই নিশ্চিয়তাতে মুগ্ধ হওয়া উচিত ৷ এতে হয়ত তাকে ফোন করা সহজ হবে ৷ তারপরও আমি জানি ৷ মনে হয়না সেটা করা বোকামি হবে ৷ সেও কিছু মনে নিবে না ৷ সম্ভবত সে পছন্দও করবে ৷ মনে হয় সে আমাকে পেতে চেষ্টা করবে ৷ কখনও কখনও মানুষেরা তাকে পাওয়ার জন্য ফোন করে এবং বলে নাম্বারটি উত্তর দিচ্ছে না ৷ আমি তো আসলে এমনটা চাচ্ছি না, যা ঘটেছিল ৷ তুমি জান কি ঘটেছিল, প্রভু ৷ হে ঈশ্বর, আমাকে ঐ টেলিফোন থেকে দূরে রাখ ৷ দূরে রাখ ৷ আমাকে ছোট্ট একটু অহঙ্কার ধরে রাখতে দিও, প্রভু ৷ আমার খুব দরকার এটার ৷ এইতো আমার একমাত্র সম্বল ৷
ওহ, অহঙ্কারে এমন কি এসে যায় ? যখন তার সাথে কথাই বলব না তখন এর উপর দাড়াতে পারব ? অহঙ্কার হল খুবই তুচ্ছ, নগণ্য ব্যাপার ৷ বিশাল অহঙ্কারে আসলে কিছুই থাকে না ৷ আমি আসলে বলতে চাই না, শুধু তাকে ফোন করব বলে ৷ এমনটা নই আমি ৷ সত্যি বলতে আমি জানি, এটাই সত্যি ৷ আমি অনেক বিশাল ৷ দাড়িয়ে আছি ছোট অহঙ্কারগুলোর পিছনে ৷
ঈশ্বর দয়া করে আমাকে তাকে ফোন করতে বিরত রাখ ৷
আমি দেখতে চাই না অহঙ্কার কি করে এতে ৷ আমার কাছে অহঙ্কার কিছু আনে না কিছু অনুভবে হানেও না ৷ আমি সম্ভবত তাকে ভুল বুঝেছি ৷ সে হয়ত বলেছিল আমাকে ফোন করতে পাঁচটায় ৷ “পাঁচটায় ফোন কর, প্রিয়”৷ সঠিক ভাবেই সে এটা বলেছিল ৷ খুব সম্ভব আমিই ঠিক মতো শুনতে পারি নাই ৷ আমি প্রায়ই শুদ্ধ যে এটাই সে বলেছিল ৷ প্রভু, আমি যেন নিজেকে বুঝতে পারি ৷ আমাকে জানতে হবে, দয়া কর জানতে ৷
আমার ভাবা উচিত ভিন্নরকমের কিছু ৷ চুপচাপ বসে থাকা উচিত আমার ৷ আমি যদি স্থির বসতে পারতাম, স্থির হয়ে বসতে ৷ কিছু একটা পড়তে পারি আমি ৷ ওহ, সব বইয়ে তো ভালবাসার কথা, মিষ্টি করে সত্যিরূপে ৷ তারা কেনইবা এমন করে লিখে ! তারা কি জানে না এটি সত্যি নয় ৷ এমনটি তো নিখাদ মিথ্যা ৷ কিভাবে তারা এটাকে বলে যখন তারা জানে কিভাবে আঘাত করে সে ৷ নচ্ছার তারা, নচ্ছার ৷
এমনটা করা উচিৎ নয় আমার ৷ চুপ থাকা দরকার ৷ এ নিয়ে উত্তেজিত হওয়ার কিছু নেই ৷ তার হয়ত কেউ আছে জানি না আমি ৷ হয়ত কোন মেয়ে বন্ধু ৷ তাহলে টেলিফোনে আমার বলা উচিত-‘ ঈশ্বেরের দোহাই কি হয়েছে তোমার ?’ এমনটাই করা উচিৎ আমার আর অন্যরকম ভাবাই ঠিক না ৷ আমি কেন স্বাভাবিক ও সরল হতে পারি না ৷ তাকে ভালবাসি বলে ৷ আমাকে পারতে হবে ৷ আমি তাকে ফোন করব সহজ ও সুন্দরভাবেই ৷ ঈশ্বর দেখে নিও যদি এমনটা আমি না পারি ! ওহ তাকে ফোন করতে বাধ্য কর না আমায় ৷ দিও না, দিও না, দিও না !
প্রভু তুমি কি চাচ্ছো আমি তাকে ফোন করি ৷ ঠিক তো ? তুমি আবার একটু ভেবে দেখবে ? পার কি ? আমি তোমাকে বলব না যে সে এখন আমায় ফোন করুক ৷ ঈশ্বর কিছু সময়ের জন্য ফোন করতে বল ৷ আমি পাঁচ পাঁচ করে পাঁচশত পর্যন্ত গুনছি ৷ আমি গুনব খুব ধীরে আর সতর্কতার সহিত ৷ যদি সে ফোন না করে তবে আমিই ফোন করব ৷ আমিই করব ৷ ওহ প্রভু, আমার প্রিয় ঈশ্বর এটার করার আগেই তাকে ফোন করতে বল ৷ প্লিজ প্রভু, প্লিজ ৷
পাঁচ-দশ-পনের-বিশ-পচিঁশ-ত্রিশ-পয়ত্রিশ-চল্লিশ-পয়ঁতাল্লিশ-পঞ্চাশ.......
---*#*---*#*---*#*---*#*---*#*---*#*---*#*
ডরোথি পার্কার (২২ শে আগস্ট ১৮৯৩-৭ই জুন ১৯৬৭) আমেরিকান ছোটগল্পকার, কবি, সমালোচক ৷ মূলত উনার লেখায় উইট আর হিউমারের সংমিশ্রণে বিংশ শতাব্দীর শহুরে জীবনযাত্রার রূপকীয় উপকথার প্রকাশ পায় ৷ কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল