‘এই পথ যদি না শেষ হয়
তবে কেমন হত তুমি বল তো ?’
উত্তমের সেই মটর বাইক থেমেছে ঢের আগে। পথে ছিলেন সুচিত্রা। সেই পথও যেন আজ শেষ হল। ওই আকাশে, ওই দূর সীমা ছাড়িয়ে, খুব পরিচিত কোন গানের সুর যেন হাড়িয়ে গেলো আকাশের নীল নিস্তব্ধতায়। সুচিত্রা সেনের একটা বিষয় আমার বেশ লাগতো। প্রিন্ট মিডিয়া বলুন আর ইলেকট্রিক মিডিয়া, সব যায়গাতেই সুচিত্রার সেই হাসি মাখা তরুণ মুখ। একজন নায়িকা হিসেবে ৮৫ বছরের বয়সী কোন ছবি রেখে যাওয়া যে কোন কাজের কথা নয়, এটা তিনি বেশ বুঝতে পেরেছিলেন। মান্না দে প্রয়াণের কিছু আগে এসেও বাংলাদেশে স্টেজ শো করে গেছেন। ভাঙ্গা গলায়, বেসুরো তালে তার কিংবদন্তী গানগুলোর ওপর কি পরিমাণ অবিচার তিনি করেছিলেন, আমার মত মান্না দে ভক্তের কাছে তা সহজ অনুমেয় বিষয়। বাবা সহ টিভির পর্দায় ‘মান্না দে’ কে দেখে বার বার বলেছি, ‘এ বয়সে গান না গাইলেই কি নয় !!’ বাবা বলেছিল, ‘হয়তো, টাকার প্রয়জনে।’ মনে হচ্ছিল তিনি বোধ হয় নিজেকে শাস্তি দিচ্ছেন নিজেকে সস্তা করে দিয়ে। সেদিন টেনেছিলাম সুচিত্রার কথা। আপনি গ্রেট, ‘সুচিত্রা। জানি না কি কারণে আপনার এই অন্তর্ধান। তবে আমি মনে করি এ অন্তর্ধান মন্দ নয়। রবি ঠাকুরের কথায় বলতে হয়, ‘বিধাতার রাজ্যে ভালো জিনিস অল্প হয় বলেই তা ভালো। নইলে সে নিজেরই ভিড়ের ঠ্যালায় হয়ে যেত মাঝারী। তার পরও বলি, ‘কিছুক্ষণ আরও না হয় রহিতে পাশে...’
মান্না দের গান দিয়ে শেষ করি,
‘আমি যে আতর ওগো, আতরদানে ভরা
আমারই কাজ হলো গন্ধে খুশি করা।
কে কারে রাখে মনে ফুরালে হায় গন্ধ যে তার ?
আমি যে জলসা ঘরে...’
আপনাদের বিস্মৃত হওয়া সম্ভব না। ভালো থাকবেন মান্না দে। ভালো থাকবেন গ্ল্যামার কুইন ‘সুচিত্রা সেন’ আপনারা বেঁচে থাকবেন অনন্ত কাল ...