কোনো ব্যক্তির মধ্যে যে দোষ নেই তাকে সে জন্য দোষী সাব্যস্ত করাকে অপবাদ বলা হয়। কারো নামে অপবাদ দেয়া কবিরা গোনাহ। কোরানে কারিমে কাউকে অপবাদ দেয়া থেকে বিরত থাকতে কঠোর নির্দেশ রয়েছে। যে অপবাদ দেবে তাকে কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে বলেও কোরানে উল্লেখ আছে। কারো নামে কুৎসা রটনা বড় মিথ্যাচার। এটা যদি ওই ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে করা হয় তাহলে তা গিবত হিসেবেও বিবেচিত হয়। গিবত করাও কবিরা গোনাহ। অপবাদ সামাজিক সুস্থতাকে বিনষ্ট করে। সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য হিসেবে তুলে ধরে। অপবাদ মানুষকে কোনো কারণ ছাড়াই অপরাধী হিসেবে তুলে ধরে এবং সম্মান ও ব্যক্তিত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। হজরত রাসূলুল্লাহ [সা.] এ সম্পর্কে বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুমিন নারী বা পুরুষকে অপবাদ দেবে তাকে পরকালে আগুনে নিক্ষেপ করা হবে।
কোরানে সূরা হুজরাতের ১২ নম্বর আয়াতে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, হে মুমিনগণ! তোমরা অনেক বিষয়ে সন্দেহ বা ধারণা করা থেকে বিরত থাক, কারণ কোনো কোনো ধারণা গোনাহ। কাজেই সন্দেহের বশে কারো বিরুদ্ধে কোনো দোষ চাপিয়ে দেয়া মারাÍক ধরনের অপরাধ। সূরা ইসরাঈলের ৩৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তার পেছনে যেও না। সন্দেহ অপূরণীয় ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, অনেকেই সন্দেহের বশবর্তী হয়ে নিজের স্বামী বা স্ত্রীকে হত্যা করেছে। পরে দেখা গেছে হত্যাকারী যে বিষয়ে সন্দেহ করেছিল তা সত্য নয়।
অপবাদের প্রতিকারে করণীয় সম্পর্কে পবিত্র কোরানে সূরা হুজরাতের ৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, হে মুমিনগণ! যদি কোনো পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোনো খবর আনে তাহলে তা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হও। অর্থাৎ আল্লাহর নির্দেশ হলো, আমরা যখন কারো ব্যাপারে কোনো কথা বা অপবাদ শুনব তখন আমাদের দায়িত্ব হলো প্রথমে তা পরীক্ষা করে এর সত্যতার বিষয়ে নিশ্চিত হব। কোনো বিষয়ে তাৎক্ষণিক এবং প্রমাণ ও তদন্তবিহীন মূল্যায়ন নিষিদ্ধ। এটাই ইসলামের পথনির্দেশ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৪