১
দেশে ধর্ষণের সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়ছে। এতই আশংকাজনক যে একটু নিরিবিলি এলাকাতে শহরের নারীরাও বের হতে অস্বস্তি বোধ করছে। ধর্ষণ আগেও হত। কিন্তু এখন এর প্রচারণার মাধ্যমও অনেক হয়ে গেছে। অনলাইন অফলাইন সবখানেই খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। মানুষের মাঝে আতংকও ছড়িয়ে পড়ছে তাঁর চেয়েও দ্রুত।
নীতিনির্ধারকরা কিছুতেই সমস্যা নিরসন করতে পারছেন না। আলোচনা সভা, নাটক নির্মাণ, স্কুলে কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক আলোচনাসভা সব হচ্ছে। নারী শুধু মাংসপিন্ড নয়। নারী মা, স্ত্রী, কন্যা এবং বন্ধুও। সবভাবেই বোঝানো হচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই ধর্ষণের সংখ্যাকে বাগে আনা যাচ্ছে না। এতদিন গন্ডগ্রামে হচ্ছিল। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন কর্মসূচী দিয়ে। উদ্দেশ্য- সচেতনতা বৃদ্ধি। কিন্তু আঘাত আসল একদমই অন্যদিক থেকে। নীতিনির্ধারকদের মধ্যে থেকেই একজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। চারপাশ পুরো এলোমেলো হয়ে গেল। সত্যি মিথ্যা কিছু বোঝা যাচ্ছে না। সত্যিই কি উনি এরকম কাজে লিপ্ত হতে পারেন!!! এতো অবিশ্বাস্য। উনিই তো সেই ব্যক্তি যিনি নারী স্বাধীনতা, নারী মুক্তির কথা বলতেন!!! উনার তো নারীদের কল্যাণে নিয়োজিত অনেক সংস্থা আছে। তাহলে!!! খাঁড়ার উপর মরার ঘা। স্বনামধন্য এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধেও উঠল ধর্ষণের অভিযোগ। যিনি শুধু অধ্যাপক নন। প্রখ্যাত নাট্যগুরু, নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক হাবিব আরাবি। এবার সাধারণ মানুষ পুরোই ভ্যাবাচ্যাকা। অভিযোগ উঠলেই মানুষ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আসামী বানিয়ে ফেলে। এটা বোধহয় মানুষের চিরাচরিত মনস্তত্ত্ব। তাই আসলেই সেই নারীদ্বয়ের করা অভিযোগ সত্যি না মিথ্যা তা আর কেউ খুব একটা যাচাই করার ইচ্ছাই প্রকাশ করল না।
এদিকে পত্র-পত্রিকা সয়লাব হয়ে যাচ্ছে নানা জল্পনা কল্পনা দিয়ে। নানা মানুষের মতামত দিয়ে। জরিপ দিয়ে। “১৮ এর নিচের মেয়ে শিশুরাও নিরাপদ নয় নগরীতে”। “শিক্ষকই যদি হয় ধর্ষক!!!” “মেয়েকে আর পড়াতে চান না বাবারা”। এরকম নানা হেডলাইনে হেড্যাক হয়ে যাচ্ছে তসলিমা আরার। নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বেই এতদিন নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি হয়ে আসছে। সব বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে তিনি বলেছেন এই বিষয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করতে। স্কুল কলেজে ক্যাম্পেইন করতে। সাধারণ মানুষের নৈতিকতাকে শানিয়ে দিতে। কিন্তু ফলাফল কি!!! ফক্কা!!! এই পুরুষ জাতটাকে কিছুতেই ঠিক করা গেল না!!! পুরুষ জাতটা প্রমাণ করেই ছাড়ছে যে শিক্ষা দীক্ষা সবকিছু দিয়ে হলেও পুরুষমানুষকে কখনো ‘মানুষ’ বানানো যায় না। এরা কিছু সময়ের জন্য ‘মানুষ’ নামক মুখোশ পড়তে পারে। কিন্তু মানুষ হতে পারে না।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী এই পুরো ব্যাপারটির দায়িত্ব তাঁর উপর দিয়ে রেখেছেন। গতরাতেও ফোন করেছিলেন। কোনভাবে তিনি পুনরায় আশ্বাস দিতে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু কিভাবে কি করবেন!!! কিছুই বুঝতে পারছেন না।
তসলিমা সকল মহিলা সমিতিদের প্রধানদের নিয়ে একটি জরুরী সভা ডাকলেন। এই সমস্যা নারীর। নারীরাই একে গুরুত্ব দেবে। পুরুষরা মুখে এক রকম। কোমরের নিচে আরেক নাচ দেখাবে। তসলিমার মতে পুরুষদের “মানুষ’ উপাধি না দিয়ে “জন্তু” উপাধিতে রাখা ভাল।
জরুরী সভা শুরু। প্রথমেই তিনি পুরুষদের ইচ্ছামত গাল দিয়ে নিলেন। সভার বাকি নারীরা তসলিমার এই পুরুষবিদ্বেষ সম্পর্কে অবগত। তাঁরা তাঁর প্রত্যেক গালমন্দে একমত পোষণ করে গেলেন। কিন্তু তসলিমা রেগে বললেন
- আমার কথার সাথে মাথা নেড়ে গেলে তো হবে না। আমাকে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী গতরাতেও আমাকে ফোন দিয়েছেন। আমি কি উত্তর দিচ্ছি তা আমিই জানি। জন্তুগুলা একটার পর একটা রেপ করে যাবে আর আমাকে এর বিহিত করতে হবে!!! সবগুলা ব্যাটাকে ধরে চিড়িয়াখানায় রেখে দিলে তবে এই সমস্যার সমাধান হবে।
সবাই চুপ করে রইল। এরকম মেজাজে তসলিমা কি বললে খুশি হবে তা বলা মুশকিল। একজন একটু ভয়ে ভয়ে বলল-
- ম্যাডাম!!!
তসলিমা তাঁর দিকে তাকালেন। কিছু বললেন না। বক্তা বুঝতে পারছেন না যে সে কি কথা বলবে কি বলবে না!! তসলিমা খেঁকিয়ে উঠল—
- ম্যাডাম ম্যাডাম করছেন কেন!!! বাকি কথা কে বলবে!!!
সে হড়বড় করে বলল-
“মানে......।।ম্যাডাম!!! মানে আমি বলতে চাইছিলাম যে......উহুহম...। যে অভিযুক্তদের সরাসরি ফাঁসি দিয়ে দিলে হয় না?
আবার খেঁকিয়ে উঠল তসলিমা-
- কয়জনকে ফাঁসি দেবেন!!! দেখেন না সব রাঘব বোয়ালরা ধরা পড়ছে। এদেরকে কখনো ফাঁসি দেয়া যাবে!!! নামকরা উকিলদের গন্ডা গন্ডা টাকা দিয়ে ঠিকই বেকসুর খালাস পেয়ে যাবে এরা। আমি আবারো আপনাদের বলছি। আপনারা ভুল্ভাবে চিন্তা করছেন। যে সমস্যার মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি তাঁর নামই হল ‘পুরুষ’। যেদিন আমরা সমষ্টিগতভাবে এটাকে সমস্যা হিসেবে দেখতে পারব। সেদিন এই সমস্যার সমাধান হবে। তাঁর আগে না।
সবাই আবারো একমত হয়ে মাথা নাড়ল। আবার তসলিমা ক্ষেপে উঠলেন-
- আবার মাথা নাড়ে!!!!! সমাধান দেন। সমাধান।
কিছুক্ষণ সবাই চুপচাপ। নারী ডাক্তার সমিতি থেকে আসা প্রধান যিনি এখানে বয়সে সবচেয়ে ছোট তিনি হাত তুললেন। তসলিমা সম্মতি দিলেন ইশারায়।
- ম্যাডাম!!! আমি আপনার কথার সাথে পুরোপুরি একমত। আমিও মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যে সমস্যার নামটা ‘পুরুষ’। কিন্তু অত্যন্ত আক্ষেপের বিষয় হচ্ছে যে আমরা ব্যাপারটাকে সারা দেশের কাছে এভাবে তুলে ধরতে পারব না। আমাদেরকে ব্যাপারটা ‘সামাজিক সমস্যা’র মোড়কেই সকলের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। এমনকি পুরুষকে আমরা হাজার চাইলেও চিড়িয়াখানায় আটকে রাখতে পারব না। ওঁদেরকে আমাদের সাথে নিয়েই চলতে হবে। কিন্তু আমরা যদি সমস্যার গোঁড়াটাই ধসিয়ে দিতে পারি!!!
তসলিমা বললেন-
- আপনি অনেক ঘুরিয়ে কথা বলছেন। জলদি আসল কথায় আসুন।
- আমি দুঃখিত ম্যাডাম। কিন্তু আমি যে সমাধানে যাচ্ছি তাঁর জন্য আমার একটু সময় লাগবেই। আমি আবারো দুঃখিত। যা বলছিলাম......।। পুরুষবাদিরা মনে করে যে পুরুষের যৌন উত্তেজনা খুব অল্পতেই হয়ে থাকে। তাঁরা বলে এটা নাকি প্রাকৃতিকভাবেই হয়। নারীর মৃদু স্পর্শ বা কিছু কিছু সময় নারীর উপস্থিতিই পুরুষের যৌন উত্তেজনার কারণ হয়ে থাকে।
তসলিমা বললেন-
- জন্তুর জাত একটা। থুঃ!!!
ডাক্তার আবার শুরু করলেন-
- তর্কের খাতিরে আমরা এখনকার জন্য মেনে নিই ওঁদের কথা। ‘পুরুষের যৌন উত্তেজনা’-ই যদি মূল সমস্যা হয় তাহলে এর সমাধান খুব সহজ।
তসলিমা অধৈর্য হয়ে বললেন-
- আপনি কিন্তু অনেকক্ষণ ধরে খেলাচ্ছেন কথার খেলা।
ডাক্তার বললেন-
- আর অল্প বাকি ম্যাডাম। পুরুষের যৌন উত্তেজনার নিয়ন্ত্রন যদি আমাদের মানে নারীর হাতে চলে আসে!!!
তসলিমা বললেন- মানে???
ডাক্তার বললেন- এটা নিয়ে আমি অনেকদিন ধরে কাজ করছি ম্যাডাম। আমরা যদি আমাদের দেশের সকল পুরুষের যৌন উত্তেজনাকে একটা চিপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি!!! যেই চিপের নিয়ন্ত্রণ থাকবে যার যার স্ত্রীর কাছে। স্ত্রীরা চাইলেই শুধু পুরুষ যৌন উত্তেজনা উপভোগ করতে পারবে।
পুরো রুমে গুজগুজ ফিস ফিস শুরু হয়ে গেল। তসলিমা শুধু ডাক্তারের দিকে তাকিয়ে আছেন। কিছু বলছেন না।
ডাক্তার আবারো বলতে থাকলেন-
- এতে করে বিবাহিত নারীরাও নিজেদের স্বামীর হাতে বন্দি থাকবে না। নারীরা চাইলেই শুধু সঙ্গম হবে। নয়তো না। এখানে আমরা সবাই জানি যে বিয়ে করা বউদেরও স্বামীরা ইচ্ছার বিরুদ্ধে রেপ করে থাকে। আমরা এই সমাধান দিয়ে একই সাথে দুই পাখি মারতে পারব।
তসলিমা স্বরে কিছুটা দ্বিধা-
- কিন্তু এটা আমরা বাস্তবায়ন করব কিভাবে!!!
ডাক্তার বললেন-
- সেটা নিয়ে আপনি বিন্দুমাত্র চিন্তা করবেন না। এই চিপের ব্যবহার আমি আমার নিজের স্বামীর উপরই প্রথম করেছি। এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। স্বামীও পুরোপুরি আমার নিয়ন্ত্রণে। চিন্তা করে দেখুন ম্যাডাম। পুরো দেশের পুরুষ যার যার স্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে থাকবে। দেশে কোন রেপ বলে কিছু থাকবে না।
তসলিমার স্বরে এখনো দ্বিধা-
- কিন্তু ...কিন্তু ...পুরুষরা তো এই চিপ নিতে কখনো রাজি হবে না।
ডাক্তার আত্মবিশ্বাস নিয়ে বললেন-
- তা তাঁরা হবে না। কিন্তু সরকারকে এ ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নিতে হবে। অতীতেও আমরা ভারতে দেখেছি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ১৯৭০ সালে ঢালাওভাবে পুরুষকে তাঁরা জোরপূর্বক ‘বন্ধ্যা’ করে দিয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে তা খুবই নিন্দিত হয়। কিন্তু ম্যাডাম একটা সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করতে গেলে তো নিন্দার ভয় করলে চলে না। আপনার এই প্রজেক্টের যাবতীয় যা যা পেপার ওয়ার্ক আমি করে দিব। আপনি নির্দ্বিধায় এগোতে পারেন।
তসলিমা দ্বিধা আর অস্বস্তি নিয়ে বসে রইলেন। সভা শেষ হয়ে গেল অনেক গুজ গুজ ফুস ফুসের মধ্য দিয়ে।
২
তসলিমা একদিন সময় চাইলেন প্রধানমন্ত্রীর। প্রধানমন্ত্রী সময় দিলেন। ডাক্তার তসলিমাকে পুরো পেপার রেডি করে দিয়েছিল। কার্যকারিতা থেকে শুরু করে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীনতা থেকে সব। প্রধানমন্ত্রী হাস্যমুখে তাঁর সাথে দেখা করলেন। তসলিমার সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। কিন্তু শেষে তিনি বললেন-
- দেখো!!! আমি এ বিষয়গুলো কম বুঝি। আর এ বিষয়গুলোর সাথে আরো অনেক বিষয় জড়িয়ে থাকে। সেগুলোও আমি খুব ভালো বুঝি না। আর তুমি তো জানো যে প্রতিদিন আমাকে কত মানুষের সাথে দেখা করতে হয়। তাঁর চেয়ে তুমি বরং সাখাওয়াতের সাথে একবার কথা বল। ও আমাকে পরে ব্রিফ করে দেবে। ঠিক আছে??? ও এই দিক গুলায় আমাকে সাহায্য করে। আমি ওঁকে ফোনে বলে দিচ্ছি।
তসলিমা একটু দমে গেল। প্রথমত সাখাওয়াত একজন পুরুষ মানুষ। দ্বিতীয়ত রাজনীতির শুরুর দিক থেকেই সাখাওয়াতের সাথে তাঁর ভালো সম্পর্ক ছিল না। এখন সে সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের প্রধান। অনেকদিন সাখাওয়াতের সাথে তাঁর মুখোমুখি দেখাও হয়নি, কথাও হয়নি। প্রধানমন্ত্রীই বা কেন ওঁর সাথে কথা বলতে বললেন তিনি বুঝলেন না।
ক্ষমতা মানুষের উপর দুই রকম প্রভাব ফেলে। হয় মানুষকে সে খুব সংকীর্ণ করে ফেলে নয়তো খুবই উদার করে দেয়। সাখাওয়াতের বেলায় বোধহয় দ্বিতীয়টা ঘটেছে। যতটা আপ্যায়ণ সাখাওয়াত তসলিমাকে করল, তাঁর জন্য তসলিমা প্রস্তুত ছিল না। তাঁর কথা, ভদ্রতা সবকিছু তসলিমাকে মুগ্ধ করল।
অবশেষে আসল কথা। সাখাওয়াত সব শুনল। বিপরীতে থামাল না। কিছু জিজ্ঞেসও করল না। হঠাৎ উঠে পাশের রুম থেকে একটা ম্যাগাজিন নিয়ে আসল। ম্যাগাজিনের কভারটা তসলিমার দিকে ফিরিয়ে দেখাল আর বলল-
- ম্যাডাম!!! এই ম্যাগাজিনের কভার পেজটা আপনার কেমন লাগছে?
কভার পেজটাতে এক নারী মডেল দুই হাত উঁচু করে পাশ ফিরে মোহনীয় ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে।
তসলিমা বিরক্তি গোপন করে বলল-
- একজন পুরুষের জন্য দারুণ ভঙ্গি।
সাখাওয়াত কথাটা যেন লুফে নিল, বলল- এগজ্যাক্টলি।
তসলিমা বলল- মানে???
সাখাওয়াত ব্যাখ্যার সুরে বললেন-
- দেখুন ম্যাডাম!! আমরা দুই জনই বহুদিন ধরে রাজনীতিতে আছি। আপনার সাথে আমি খোলাখুলি কথা বলব। রাজনীতিবিদদের মত করে নয়। আপনি যে সমাধানের পথ নিয়ে এসেছেন তা হয়তো ‘রেপ’ সমস্যার সমাধান করবে। কিন্তু এটা প্রয়োগ করলে আমার আপনার কারোরই আর রাজনীতি করা হবে না। বুঝিয়ে বলছি। এই যে ম্যাগাজিন কভারটা দেখলেন। এই ম্যাগাজিন মাসে ৫ লাখ কপি বিক্রি হয়। এর ভিতরে লেখা কম। শুধু ছবি। এর পাঠক মূলত পুরুষ। কিছু নারী পাঠকও আছে। তাঁরা হাল ফ্যাশনের কাপড় চোপড় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে চায়। এখন আপনার সমাধান অনুযায়ী পুরুষ যদি স্ত্রী ছাড়া আর কোথাও উত্তেজিতই না হয়। তাহলে এই ম্যাগাজিন চলবে না। সিনেমা চলবে না। আইটেম সং চলবে না। কারণ পুরুষের যৌন উত্তেজনাই হল এইসব প্রোডাক্টের মেইন মার্কেট। অর্থ উপার্জনের সবচেয়ে সহজ উপায়। আর সেই অর্থ ব্যবসায়ীরা ঢালে আমাদের উপর। দেশের উন্নয়নের উপর। আমি কি আপনাকে বোঝাতে পারছি?
তসলিমা থ হয়ে বসে রইলেন। বললেন-
- মানে...। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই আমরা রেপ থামাব না???
সাখাওয়াত আহত হয়ে বললেন-
- আহা!!! ব্যাপারটা আপনি ভুল্ভাবে দেখছেন। আমরা তো কাউকে রেপ করতে বলছি না। মানুষ শিক্ষিত হবে। বিচার বিবেচনা থাকবে। ভালো মন্দ বুঝতে শিখবে। তাহলেই তো রেপ হবে না। আমি কি রেপ করছি!!! খসরু সাহেব কি রেপ করছেন?? একজন নৈতিক পুরুষ কখনো রেপ করতে পারে না।
তসলিমা আর সাখাওয়াতের সাথে কোন কথা বললেন না। রুম থেকে বের হয়ে গেলেন।
৩
তসলিমার অফিসে কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবকদের নেত্রী বসে আছেন।
- ম্যাডাম আবেদিন কলেজে ছাত্রী হেনস্তা হয়েছে। আমাদের অবশ্যই প্রটেস্ট করা উচিৎ।
তসলিমা কাগজ কলম এগিয়ে দিলেন, বললেন
- স্লোগান লিখো। আমি বলছি।
“DON’T TELL ME HOW TO DRESS, TELL YOUR SON NOT TO RAPE”
“GIVE DEATH TO RAPIST”
“STOP VIOLENCE AGAINST WOMEN”
“THONGS CANT TALK”
স্বেচ্ছাসেবকরা এক মনে লিখে নিচ্ছে।