বিনয়বাবু, তোমার চাকা কি ফিরেছিল?
ডানাছাটা বাবলা গাছের ঘাড়ে ভর দিয়ে
যে রোদটুকু গড়িয়ে পড়েছিল ধুলোডোবা সড়কে
সেখানে মহিষের পায়ের ছাপ নকল করে
ক্যাঁচ ক্যাঁচ সুরে, একটা প্রায় পুরো বিকেল
নাস্তা নাবুদ করে, হেঁটে এসেছিল
কয়েকজন হতাশ দরিদ্র চাকা...
বিনয়বাবু, তোমার চাকা কি ওদের দলে ছিল?
চাকাকে ফেরাতে এতটা উতলা হচ্ছো কেন?
চাকা কি তোমার কৈশোর, বিনয়
চাকা কি বাবার সাথে বদলি হয়ে যাওয়া স্কুল-দোস্ত
চাকা কি চলনবিল দেখতে নিয়ে যাওয়া
বিশ্ববিদ্যালয় ফেরত ছোটকাকা?
হাহ, বিনয়, চাকাটাকে ফিরতেই হবে কেন, বলো?
না কি, পাঠশালার বেঞ্চে বসে ছাতিমতলায়
কাউকে হেঁটে যেতে দেখেছিল
নামের অভাবে যাকে তুমি চাকা বলে ডেকেছো?
ভনিতা সংক্ষেপ করে বলি, বিনয়
তুমি শুধু একা নও
এখনও সবাই দেখি চাকার অপেক্ষায় থাকে
কত বিচিত্র সব চাকা, ভাবতে পারবে না
গাড়ির চাকা, ট্রেনের, প্লেনের চাকা
পরীক্ষায় রসগোল্লার চাকা
জীবন ও জীবন হননের চাকা
টাকমাথা, চুলমাথা, গোবরসিদ্ধ রাজনীতিকের মাথা
সবাই কুম্ভমেলায় হারানো অতীত চাকার জন্য
হাত পা ছড়িয়ে ঘোরলাগা ভঙ্গিতে বসে আছে
জীবনের চাকা কি ফিরে আসে, বিনয়?
যৌবনের চাকা?
আমি অবশ্য আরেক চাকার প্রতীক্ষা দেখেছি
ইনটেনসিভ কেয়ারে, সাজঘরে, শবঘরে,
আমাদেরই পিতামহ, উত্তরপুরুষ, এমনকি পূর্ব-পশ্চিম-দক্ষিণ পুরুষ
অলৌকিক এক চাকার অপেক্ষায় ক্ষণ গুনছে
এই চাকা আসবেই, বিনয়
তুমি নিশ্চিত থাকো,
এই চাকা কাউকেই হতাশ করবে না...