somewhere in... blog

হুমায়ূন আহমেদ, দেবদূত, পিস্তল মজিদ, আনিস, নীতু আর বইমেলা ২০১৩

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্যার মন খারাপ ক্যান?
: এমনি।
- হিমুদের তো মন খারাপ করতে নেই স্যার।
: আমি হিমু না। হিমু ছিলামও না। আমি পাঠকের হুমায়ূন ছিলাম। মায়ের কাজল ছিলাম। আমার মন খারাপ হয়।
- কেনো স্যার?
: পৃথিবীতে বইমেলা শুরু হচ্ছে।
- আপনার বই আসবে?
: বলতে পারছিনা। মাজাহার জানে।
- অপ্রকাশিত কিছু ছিলনা?
: অনেকগুলো ছিল। অল্প অল্প করে লিখেছিলাম।
- স্যার সকাল সকাল মন খারাপ করলে চলবে?
: মন তো মাজেদা খালার মতো না যে তাকে চেঞ্জ করে যায়।
-স্যার, আমার না আপনার বই পড়তে ইচ্ছে হয়।
: তুমি বই কী পড়বা? তুমি দেবদূত মানুষ।
-না স্যার। আপনি এখানে চলে আসার সময় আমি কান্না দেখেছি পৃথিবীর মানুষের।
: হুমম।
- স্যার আপনার বই পড়তে চাই। একটা গল্প শোনান। ধরেন যেটা এই বেঁচে থাকলে এই মেলায় লিখতেন।
হুমায়ূন আহমেদ বলতে শুরু করলেন।

:::: পিস্তল মজিদের চশমা ::::

মজিদ সকালে উঠেই চশমা মুছে নিল। সব ক্লীয়ার দেখতে হবে। মানুষকে বুঝতে দেয়া যাবেনা তার চোখে সমস্যা। মানুষ তাহলে ভয় পাবেনা।
দেশের পরিস্থিতি ভালো না। পিস্তল, চশমা, সাহস সব এক সাথে ধুয়ে মুছে ঠিক রাখতে হয়। ব্যাবহারের উপযোগি রাখতে হয়।
চশমা মুছতে মুছতে মজিদের ফোন এলো। রমনা থানার হাবিলদারের ফোন।
মজিদ বিরক্ত হয়। সে নিজেকে যত বড় ভাবে এখনো তেমন কিছু হতে পারেনি। শালার হাবিলদারের ফোনই রিসিভ করতে হয়।
কবে যে ওসি সাহেব একটু ফোন দেবে। বলবে, মজিদ ভাই। শরীরটা ভালো?
মজিদ বিদ্বিগ আনন্দ নিয়ে বলবে, ভালো ভাইজান।
- আপনি কিরুম? আমার নামে নতুন কোনো মামলা আইলো?
: না ভাই। আপনার পারমফর্মেন্স আগের মতো নাই। আসেন একদিন, চা খাইয়া যাইয়েন।
- অবশ্যই ভাইজান। অবশ্যই।
মজিদ কল্পনা শেষ করে একটু হাসলো। অল্প হাসি।
আজ বেশি হাসার টাইম নাই। কাজ আছে। সে পিস্তল কোমরে গুজে বের হয়ে গেল।
কোমরে ব্যাথা পাচ্ছে সে। বয়স হয়ে যাচ্ছে। কোমর আগের মতো শক্ত নেই মজিদের। পিস্তলের এতোদিনের আবাসস্থল বিদ্রোহ করছে।

মজিদ জায়গা মতো দাঁড়িয়ে আছে, আনিস নামে একটা ছেলে আসছে। তারে ধরতে হবে। কম টাকার কাজ। গুলি করা যাবেনা। একটা চড় দিতে হবে।
আনিসেরই প্রেমিকা নীতুর কাজ। রেগে প্রথমে বলেছিল গুলি। পড়ে শাস্তি কমাতে কমাতে চড়ে এসে ঠেকেছে।
আনিস আসছে। মজিদ তাকালো, চশমা পড়া বোকা টাইপ মাল। সে কিঞ্চিত ভয়ে আছে। ন্যাকা টাইপের ছেলে চড় দিলে কেঁদে দিতে পারে।
মজিদ ছেলেটার সামনে গিয়ে চড় মারতে যাবে। অমনি উত্তেজিত হয়ে তার প্রেমিকা নীতুর আবার ফোন, শোনেন শোনেন, আপনি কী তাকে চড় মেরে দিয়েছেন?
: জ্বি না।
- থাক চড় মারতে হবেনা। একটা ধমক দিয়ে দেন।
: না ধমক দিতে পারবো না। এতো খুচরো কাজ করতে পারবো না। টাকার জন্য এতো নিচে নামতে পারবো না।
- আরে ভাই, টাকা সমানই দেবো। প্লিজ ভাইয়া। প্লিজ মজিদ ভাইয়া। আপনার জং ধরা পিস্তলের দোহাই।
: ওকে। ওকে।
মজিদ আনিসের দিকে তাকালো। আনিস হাসি মুখে তাকিয়ে আছে, নীতুর ফোন?
মজিদ চমকে উঠলো।
ধমক দিতে বলেছে?
মজিদ ব্যাপক অবাক হলো। কয় কী? তার চশমা আবার একটু ঘোলা হয়ে গেল।

দেবদূত হাহাহা করে হেসে দিল। হুমায়ূন তোমাদের দেশে এমন পাগল টাইপ মানুষ আছে?
হুমায়ূন আহমেদ কিছু বললেনা। তার এই গল্পটা শেষ করতে ইচ্ছে করছে।
মেলার এই সময় পৃথিবীতে থাকলে তিনি এটা শেষ করতেন। এক ফর্মা করে লিখে লিখে মাজহারকে ফোন দিতেন, নেও ছাপো। তার খুব লিখতে ইচ্ছে করছে।
হুমায়ূন আহমেদ স্বর্গে এসে যা চান তাই পেয়েছেন। বলা মাত্রই।
এখনো একটা জিনিস চাইতে ইচ্ছে করছে তার। কিন্তু এই প্রথম তিনি শঙ্কায় আছেন। যদি না হয়। যদি না আসে?
তবুও তিনি চোখ বন্ধ করে মনে মনে বললেন, বলপয়েন্ট।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যদি এমন হতো.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:২৮

যদি এমন হতো....

বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা-দারিদ্র-মহামারী, যুদ্ধবিগ্রহের ধ্বংসযজ্ঞে মানুষে মানুষে, দেশে দেশে সকল বৈরীতা ভুলে একটা সুখী পরিবার গঠন করে দুনিটাকে সত্যিকার ভূস্বর্গ করতে...
শুরু হতো বাংলাদেশ থেকে। সব রাজনৈতিক দল মুক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

নির্বিকার ( কবি দাউদ হায়দার স্বরনে তারি লেখা কিছু কবিতা থেকে উৎসাহিত হয়ে)

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:০৫



জন্মেছি, এও এক ঘটনা মাত্র।
কারও ইচ্ছেতে নয়, কারও অনিচ্ছেতেও নয়।
রক্তের গন্ধে ভরা এক সকালে
আমি নেমে এসেছি, অপ্রত্যাশিত চিৎকারে ।

শহরের ধুলো, গলির বিক্রি হয়ে যাওয়া রোদ,
বাসের পাদানিতে ঝিমিয়ে পড়া শরীর,
সবকিছু দেখেছি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভূস্বর্গ ভয়ঙ্কর!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৪



ফের জঙ্গি হামলার সম্ভাবনা! পহেলগাঁও থেকে শিক্ষা নিয়ে আগেভাগেই ৪৮টি পর্যটনস্থল বন্ধ করে দিল কাশ্মীর সরকার


গত ২২ এপ্রিল অনন্তনাগের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারান ২৬ জন পর্যটক।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতের পাশে আমেরিকা-ইসরায়েল। পাকিস্তানের পাশে কারা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩


গত রাতে ইসরায়েল থেকে ভারতে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে গেছে একটি কার্গো বিমান। তাতে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির গাইডেড মিসাইল বিপুল পরিমাণে আছে। এই মিসাইলগুলো অতি নিখুঁতভাবে মেঘ, বৃষ্টি বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত ও পাকিস্তান উভয় সম্পূর্ণ কাশ্মিরের দখল পেতে মরিয়া

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৩



ভারত হয়ত এবার যুদ্ধকরেই পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। পাকিস্তানও হয়ত যুদ্ধকরেই ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। এমতাবস্থায় ভারতের পাশে ইসরাইল এবং পাকিস্তানের পাশে চীন থাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×