somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবারো এসে গেলো স্বাধীনতা দিবস; চলেন ঝাপিয়ে পড়ি নিজেকে দেশপ্রেমিক প্রমাণের মিছিলে...

২৫ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ১০:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আবারো এসে গেলো ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। এ দিবসকে সামনে রেখে সকলের মতো আমিও ঝাপিয়ে পড়লাম নিজেকে দেশপ্রেমিক প্রমাণের মিছিলে। আমাদের 'সিজনাল' দেশপ্রেম আমাদেরকে মহান করে। আমরা বিশেষ দিনে দেশপ্রেম প্রদর্শন করে একটা তৃপ্তির ঢেকুর তুলি। যা আমাদের পরের পুরো এক বছর নিশ্চিন্ত রাখে। যাক, এ বছর আর দেশপ্রেম না দেখালেও চলবে।
অদ্ভুত এক জাতি আমরা।
আমাদের দেশপ্রেমও দেখার মতো। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেশপ্রেম দেখে আতকে উঠতে হয়। আমাদের দেশপ্রেমের সঠিক দিক নির্দেশনা সঠিক ধারনা না থাকায় আমরা বিশেষ করে তরুণ সমাজ একটা অস্বচ্ছ দেশপ্রেমের ধারণা নিয়ে বড় হচ্ছি। যেখানে দাঁড়িয়ে বিনীতভাবে বলতে হয়, আজ এই সময়ে দেশপ্রেম বৃদ্ধির চেয়ে দেশপ্রেম কমিয়ে আনা অত্যন্ত জরুরী। আমরা বুঝে না বুঝেই যা করে চলছি তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। সাধারণভাবে চোখ মেললেই অনেক দৃশ্য চোখে পড়ে। যেমন, এখন আমরা অতিরিক্ত আবেগে, অতিরিক্ত দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদের মোবাইলে ব্যবহার করে চলেছি আমাদের জাতীয় সঙীতের সুর। যে সুরে দাঁড়িয়ে সন্মাণ জানানোর নিয়ম থাকলেও তা হচ্ছে উপেক্ষিত। তাই বাস, রিকশা, অফিস-আদালতে এমনকি টয়লেটেও বিরামহীন বেজে চলছে আমাদের জাতীয় সঙীত।
হায় দেশপ্রেম!
আরেকটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, আনন্দের কিছু হলে অথবা পাকিস্তান-টাকিস্তানসহ বড় দেশের বিরুদ্ধে ক্রিকেটে জিতলে বলে দেই স্বাধীনতার পর এতো আনন্দ আর পাইনি। অথবা একটা ভয়াবহ কিছু ঘটলে বলে দেই, ওটা একাত্তুরের মতো ভয়াবহ সময় ছিল।
যা আমার আছে একই সঙ্গে হাস্যকর এবং গর্হিত কাজ বলে মনে হয়। আমাদের স্বাধীনতা বা আমাদেরও মুক্তিযুদ্ধ কোনো ওয়ান ডে ম্যাচ ছিল না। ওটা সুদীর্ঘ বছরের অত্যাচারের আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক কঠিনতম বিস্ফোরণ। যার সাথে অন্য আর কোনো কিছুরই তুলনা চলেনা।
বলতে হয়, এই সময়ে আমাদের নজর দেয়া প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের মতো এই স্পর্শকাতর বিষয়ে। আজ টিভিতে যে ধরণের মুক্তিযুদ্ধের নাটক দেখানো হয় তাতে কি মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য প্রতিফলিত হয়? বিষয়টা ভেবে দেখা প্রয়োজন। অধিকাংশ নাটকে থাকেনা কোনো গল্প। কয়েকটি যুদ্ধের দৃশ্য দেখিয়েই মনে হয় মুক্তিযুদ্ধকে দেখিয়ে দিচ্ছেন নাট্যকার, পরিচালক মহোদয়। যার ফলে নতুন প্রজন্ম বিশেষ করে ছোটরা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ধারণা পায়না। অন্যভাবেও যে মুক্তিযুদ্ধকে তুলে আনা যায় সে বিষয়টা মনে হয় জানা-ই নেই তাদের। কারন এমন এক বহুমাত্রিক অর্জন আমাদের তা ব্যাখা করার প্রয়োজন নেই।
আগুনের পরশমনি, শ্যামল ছায়া, জয়যাত্রার মতো ভালো চলচিত্র থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে সে ধরণের নাটক নেই। তবে স্পার্টাকাস'৭১ একটি অসাধারণ ভিডিও ফিকশন।
কথায় কথায় বাড়ে। ইদানিংকালের দেশাত্মবোধক গান নিয়েও কথা থেকে যায়। সে গানগুলো কানে কেমন যেন শোনায়। অথচ বিশাল এক সমৃদ্ধ বাংলা গানের ভান্ডার আমাদের।
দুয়েকটা যা গানও হয় সেগুলেতেও বৈচিত্র কম। বেশির ভাগ গানেই থাকে গতানুগতিক সহজ কথাবার্তা, আগামীর সম্ভাবনা আর বিভেদ ভুলে যাওয়ার বাণী।
আমার অজ্ঞতা কিনা জানিনা, আমি বুঝতে পারিনা দেশ স্বাধীনের এই ৩৮ বছর পরও স্বপ্ন দেখানোর কি আছে? আর কতদিনই বা এই স্বপ্ন দেখাদেখি? এখন স্বপ্ন বাস্তবায়ন এবং বাস্তবায়িত স্বপ্নের কথা শোনানো প্রয়োজন। যেগুলোতে উদ্দীপ্ত হবে মানুষ। আর বিভেদ ভুলে যাওয়ার যে ডাক শোনানো হয় তাতেও একটু অবাক হতে হয় ভাবনায় পড়ে যেতে হয়। সন্মানীত গীতিকারকে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে, বলবেন কি আমাদের বিভেদটা কোথায়? যেখানে দ্বিধাহীনভাবে বলা যায়, আমাদের মধ্যে মতাদর্শগত বিভেদ ছাড়া অন্য কোনো বিভেদ নাই। যেমন নাই আঞ্চলিকতার বিভেদ, নাই ধর্মীয় বিভেদ। যা আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে প্রবল।
তাই সময় অনেক হয়েছে। আর সময়ক্ষেপন নয় নয়। ভেতরে বাইরে দ্রুত ঘটুক যাবতীয় মঙ্গলময় পরিবর্তন। মঙ্গলের পরিবর্তন।
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×