#ইচ্ছাকৃত_অগোচর_০২
আমরা বাংলাদেশীরা বোধহয় শুদ্ধ বাংলা ভাষার ব্যবহার রোধে উঠে পড়ে লেগেছি, নিজেরাই যেন গলা টিপে হত্যা করছি মায়ের ভাষা বাংলাকে। এই এক কথা অনেকে হয়ত বারবার বলছে এবং তরুণ প্রজন্ম বোধহয় এইসব বকবকানি শুনতে শুনতে প্রচণ্ড বিরক্ত। তারা নাকি "আজাইরা প্যারা" নিতে চায় না। "বেবি ডল" এর কোমর দুলানো, "পিংক লিপ্সের" লাস্যময়ী আবেদন কিংবা নিকি মিনাজের "অ্যানাকোন্ডা" দেখে যে অসুস্থ বিনোদন পাওয়া যায়, তারুণ্য এখন তাতে মশগুল। কে কার "গার্লফ্রেন্ড"কে নিয়ে কি কি করল কিংবা "বয়ফ্রেন্ড" থেকে কি কি উপহার পাওয়া গেলো এইসব নিয়ে ব্যস্ত থাকলে বস্তাপচা বাংলাকে নিয়ে ভাবার সময় কোথায়? এই কারণে আমরা ঘন ঘন ইংলিশ বলি, নাহলে আমার শিক্ষিত হয়ে লাভ কি? হিন্দি বলতে হবে না? নাহলে প্রমাণ করবো কিভাবে আমি স্মার্ট? আর "মাইরালচি", "খাইয়া দে", "জোস হইসে ইয়ার" এরকম বিকৃত বাংলা না বললে কি আর বন্ধু মহলে ঠাই পাওয়া যায়?
প্রজন্ম এখন হরতাল হলে প্রবলভাবে আনন্দিত হয়, কারণ হরতালের দিন ক্লাস নাই, পাওয়া গেলো ছুটি। তারা হরতালে দেশ ও দশের কি ক্ষতি হয় বা কোন কারণে হরতাল ডাকা হচ্ছে অত গভীরে যায় ই না। তাদের সকল চিন্তা চেতনা নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ বা বন্ধুদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। দেশের জন্য ভাবার জন্য তাহলে কার "ঠ্যাকা" পড়েছে? আমাদের ভাষায় "ডার্টি পলিটিক্স" করা লোকগুলোর? তাহলে কি আমাদের ট্র্যাফিক জ্যামে বসে থেকে "শিট!! দিস কান্ট্রি সাকস" এই কথা বলার অধিকার আছে? "আমি একা কিছুই বদলাতে পারবো না"- সবাই এই কথা বললে বদলাবে কে? আমরা কি আশা করছি শনিগ্রহ থেকে কোন "কিউট" এলিয়েন এসে আমাদের অবস্থা বদলিয়ে দিয়ে যাবে?
ফেসবুকে "আই হেট পলিটিক্স" লিখে দিলেই একজন তরুণ হিসেবে এই দেশ তোমার উপর মাতৃভূমি গড়ার যেই পবিত্র দায়িত্ব অর্পণ করেছে তা উদ্ধার করা যায় না। ফেসবুকে এই আমার মতন এরকম জ্বালাময়ী স্ট্যাটাস দিলেও দেশমাতৃকার প্রতি দায়িত্ব পালন হয়ে যায় না। আমাদের এখন দরকার কিছু "রিয়েল হিরোর", কেউ কি আছ?????