সংবিধান কে বই হিসেবে ধরলে এই পোস্ট অবশ্যই প্রাসঙ্গিক। এবার মূল কথায় আসি।
অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম দেশের অনেক শিক্ষিত মানুষও জানেন না এই দেশের জন্মদিন কবে। অনেকে এ নিয়ে বিতর্কও করছে। কেউ ২৬ মার্চ আর কেউবা ১৬ ডিসেম্বর কে বাংলাদেশের জন্মদিন দাবি করছে। এখানে আমি কিছু মীমাংসিত বিষয় তুলে ধরছি।
১। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের শুরুতে যা লেখা আছে তা সরাসরি তুলে দিলাম,
"বিসমিল্লাহির-রহমানির রহিম
(দয়াময়, পরম দয়ালু, আল্লাহের নামে)
প্রস্তাবনা
আমরা, বাংলাদেশের জনগণ, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া জাতীয় স্বাধীনতার জন্য ঐতিহাসিক যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি।"
এখানে স্পষ্ট বলা আছে, ২৬ মার্চ দেশের প্রতিষ্ঠা করেছি। অতএব, সেদিনই আমাদের জন্মদিন
২। অনেকে বলেন, ২৬ মার্চ দেশের ভ্রুণ অবস্থা। ১৬ ডিসেম্বর এই ভ্রুণ সন্তান রূপে ভূমিষ্ঠ হয়। এখানে খেয়াল করা প্রয়োজন দেশ কোন ভ্রুণ ট্রুণ না। দেশ একটা বিমূর্ত কাঠামো। তাই মানুষের জন্মের সাথে দেশের জন্ম মিলালে চলবে না।
আর ভ্রুণ অবস্থা নিয়ে কথা যদি বলতেই হয় সেই ভ্রুণ অবস্থা হচ্ছে ১৯৪০ এর ২৩ মার্চ। লাহোর প্রস্তাবেই পূর্ব বাংলা কে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণার কথা ছিল।
৩। আন্তর্জাতিক প্রটোকলে একটা দেশের স্বাধীনতা দিবসই তাদের জন্মদিন। যেমনঃ যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন।
৪। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, "যদি ২৬ মার্চ দেশ জন্ম হয়েই গেল তবে যুদ্ধের কী প্রয়োজন?
উত্তর হল, ২৬ মার্চ দেশ ঠিকই জন্ম হয় এবং স্বাধীন হয়। সেই স্বাধীন দেশে অন্য দেশের (পাকিস্তান) সামরিক বাহিনীর আগ্রাসন ঠেকাতে যুদ্ধ হয়।
একটু গুগল করলেই বাংলাদেশের জন্মদিন কবে তা জানা যায়।
৫। ১৬ ডিসেম্বর কে বাংলাদেশের জন্মদিন ধরে নিলে, ২৬ মার্চ থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধ কে যুক্তিগত কারণে মুক্তিযুদ্ধ বলা যাবেনা। তখন বলতে হবে গৃহযুদ্ধ। যার ফলে দেশের যুদ্ধাপরাধীরা পার পেয়ে যাবে।
কিন্তু ১৯৭১ গৃহযুদ্ধ ছিল না। সেটা ছিল মুক্তিসংগ্রাম (liberation war) . আর মুক্তিযুদ্ধ-গৃহযুদ্ধ কখনোই এক না। তাই ২৬ মার্চই আমাদের দেশের জন্মদিন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫২