বিশ্ব উন্নয়নের সাথে সাথে কর্মস্থলে নারীর উপস্থিতি এখন পুরুষদের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। উন্নয়নের পাশাপাশি নারীরা যেমন এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তেমনি নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। হয়ত লজ্জা, চাকরি হারানোর ভয়, মান সম্মান হারানোর ভয়ে বিষয়গুলো বার বার এড়িয়ে যায়, এবং প্রতিনিয়ত এ সমস্যার সম্মুখীন হন। মেয়েদের জেনে রাখা উচিত, যৌন হয়রানি মুক্ত শিক্ষা ও কর্ম পরিবেশ বজায় রাখার জন্য মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত নীতিমালা রয়েছে।
এ নীতিমালার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ
ক) যৌন হয়রানি সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা।
খ) যৌন হয়রানির কুফল সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা।
গ) যৌন হয়রানি শাস্তি যোগ্য অপরাধ- এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
যৌন হয়রানি বলতে যা বুঝায়ঃ
ক) অনাকাঙ্ক্ষিত যৌন আবেদনমূলক আচরণ(সরাসরি অথবা ইঙ্গিতে) যেমনঃ শারীরিক স্পর্শ বা এ ধরণের প্রচেষ্টা।
খ) প্রাতিষ্ঠানিক বা পেশাগত ক্ষমতা ব্যবহার করে কার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করা।
গ) যৌন হয়রানি বা নিপীড়নমূলক কথা বলা।
ঘ) যৌন সুযোগ লাভের জন্য অবৈধ আবেদন।
ঙ) পর্ণগ্রাফি দেখানো।
চ) যৌন আবেদনমূলক ভঙ্গী।
ছ) অশালীন ভঙ্গী, যৌন নির্যাতনমূলক ভাষা বা মন্তব্যের মাধ্যমে উত্ত্যক্ত করা, কাউকে অনুসারন করা বা পিছন পিছন যাওয়া, যৌন ইঙ্গিতমূলক ভাষা ব্যবহার করে ঠাট্টা বা উপহাস করা।
ঞ) ব্লাক মেইল অথবা চরিত্র লঙ্ঘনের উদ্দেশ্যে স্থির বা চলমান চিত্র ধারণ করা।
ট) যৌন নিপীড়ন বা হয়রানির কারনে খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক, প্রাতিষ্ঠানিক এবং শিক্ষাগত কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হওয়া।
ঠ) প্রেম নিবেদনে করে প্রত্যাখ্যান হয়ে হুমকি দেয়া বা চাপ প্রয়োগ করা।
ড) ভয় দেখিয়ে বা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে যৌন সম্পর্ক স্থাপন বা স্থাপনে চেষ্টা করা।
১- ড ধারায় উল্লেখিত আচরণ সমূহ অপমানজনক এবং কর্মস্থল ও শিক্ষা প্রতিস্থান নারীর স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার জন্য হুমকি হয়ে দাড়াতে পারে।
যৌন হয়রানীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা কি?
সকল নিয়োগকর্তা এবং কর্ম ক্ষেত্রে দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যাক্তিগন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ যৌন প্রতিরোধের লক্ষ্যে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে, অন্যান্য পদক্ষেপ ছাড়াও তারা নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেঃ
ক) এ নির্দেশনায় উল্লেখিত ৪ ধারা অনুযায়ী যৌন হয়রানি বা নির্যাতনের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে তা কার্যকর ভাবে প্রচার করতে হবে।
খ) যৌন নির্যাতন বা হয়রানীর জন্য যে আইন/ শাস্তির উল্লেখ রয়েছে তা ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে।
যৌন হয়রানীর বিরুদ্ধে শাস্তি কি?
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ( ছাত্র ব্যতিরেকে) সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে পারে এবং ছাত্রদের ক্ষেত্রে, অভিযোগ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তাদেরকে ক্লাস করা থেকে বিরত রাখতে পারেন । অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করবে এবং সকল সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মক্ষেত্রের শৃঙ্খলা বিধি অনুসারে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, বা যদি উক্ত অভিযোগ কোন দণ্ড যোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট কোর্ট ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দিবে
এসো গল্প লিখি ফেসবুক পেজ
এই "এসো গল্প লিখি" পেজে_
ছোটগল্প, অনুগল্প, মুক্তগদ্য সহ সকল প্রকার সাহিত্য সমৃদ্ধ লেখা আপনি পাঠাতে পারেন আমাদের কাছে।
প্রতি মাসের সেরা দুইটি লেখা প্রকাশিত হবে aponjanala.com (আপন জানালা এর সাহিত্য পাতায়) ।