আমি এক মাদ্রাসায় সামান্য আর্থিক সহযোগিতা মাসিক ভিত্তিতে করি। ওখানকার অধ্যক্ষ ও মুফতি সাহেব যখন শুনলেন যে আমি একজন ব্লগার। তখন তিনি ইহার এক জোর প্রতিবাদ করে বললেন.........
- উনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, তাইলে ব্লগার কেমনে হন!
- উনি নবীর সুন্নত দাড়ি রাখেন, উনি আবার ব্লগার কেমনে হন!!
- উনি নিয়মিত মাদ্রাসায় অর্থ-সাহায্য করেন, ব্লগাররা কি মাদ্রাসায় দান করে!!!
যেহেতু শিক্ষিত মানুষ, পরে একটু ধাতস্ত হয়ে আমাকে ফোন করে ব্লগার সম্পর্কে জানতে চাইলেন। তার সাথে এ নিয়ে আমার অনেক কথা হয়। উল্লেখ্য, আমি ওনাকে এবং ওনার মাদ্রাসার ছাত্রদের থামাতে পেরেছিলাম সেইসময়ের "হেফাজতে'র সেই মহাসমাবেশ'এ এবং কোন অবরোধ আন্দোলনে যোগদানে।
যাহোক ব্লগ সম্পর্কে ওনাকে আমি মোটামুটি সব কথা বলি। উনি বুঝলেন ব্লগ দৈনিক / সাপ্তাহিক / মাসিক পত্রিকা বা কোন লেখকের বই বা কলামের মতই একটা মাধ্যম যেখানে লেখক তার নিজস্ব মতামত প্রকাশ করতে পারে। এই লেখকদের কেউ কবি, কেউ উপন্যাসিক, কেউ প্রাবন্ধিক, কেউ গল্পকার, কেউ কলামিস্ট, আবার কেউ ব্লগার। ব্লগারসহ এই সমস্ত লেখকগণ মুসলমান-হিন্দু-খৃষ্টান-বৌদ্ধ-আস্তিক-নাস্তিক-প্রকৃতিবাদী-মানবতাবাদী-মৌলবাদী-বস্তুবাদী-পূঁজীবাদী-সমাজতন্ত্রী-আওয়ামিলীগ-বিএনপি-জামাত-হেফাজত-সুশীল-কুশীল সব ধরনের মানুষই হতে পারেন।
পার্থক্য হল - পত্রিকায় লিখতে হলে সম্পাদকের অনুমতি লাগে, বই বের করতে হলে বেশ খরচাপাতি লাগে। ব্লগ লিখতে হলে একটা ইন্টারনেট সংযোগ আর যেকোন একটা কি-বোর্ড হলেই চলে।
তখন উনি বুঝলেন যে ব্লগার মানেই নাস্তিক নন।
এরপর ওনাকে প্রশ্ন করলাম -
- আমাকে একটা হত্যা-উদাহরণকে দেখাতে পারবেন যা কোন রাষ্ট্রীয় বিচার বহির্ভুত বা প্রকাশ্য-ঘোষিত যুদ্ধ ব্যতীত আমাদের নবী [সাঃ] অনুমতি দিয়েছেন বা আমাদের ইসলামী শরিয়ত সমর্থন করে?
- একটা হত্যা-উদাহরণ দেখাতে পারবেন যা নবীর জামানায় বা খলিফাদের জামানায় হয়েছিল কেবলমাত্র নবী [সাঃ]কে গালমন্দ করার জন্য?
তাহলে যারা নাস্তিক তাদের ইসলাম-বিরোধিতা তো স্বাভাবিক; আমি মুসলমান হয়ে নিজে কিভাবে শরিয়ত বা ইসলাম বিরোধী কাজ করি।
ইসলাম অর্থ শান্তি এবং মুসলমানের পরিচয় তার সহনশীলতার মাত্রার উপর নির্ভর করে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:২২