আমি নিয়মিত টিভি দেখি না, কিন্তু জি-বাংলার কমেডি-রিয়ালিটি-শো মিরাক্কেলটার প্রতি কিঞ্চিৎ দুর্বলতা আছে। রিয়েল কমেডি এমন এক মাধ্যম যা খুব সহজে নিরাপদ অবস্থান থেকে অনেক জটিল ও কঠিন বিষয়কে খুব স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেয়া যায়। আবার কেউ যদি এ'তে কোন কারনে ক্ষেপে যায় তো সহজেই বলে দেয়া যায় - ইহা কৌতুক মাত্র, গুরুত্বের সাথে নেয়ার দরকার নেই।
গত দু'দিন আগে এক পারফর্মার ব্যাংক-ডাকাতির উপর এক কৌতুক পরিবেশন করল। কোন এক ব্যাংক-শাখায় হুড়মুড় করে ভয়ঙ্কর দুই ডাকাত প্রবেশ করে সমস্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা বন্ধ করে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে পঞ্চাশ লাখ টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়।
ডাকাতরা কিছু টাকা কাউন্টার থেকে কিছু টাকা ম্যানেজার ও কাস্টডিয়ান এর মাধ্যমে ভল্ট থেকেও নিয়ে যায়। কিন্তু তাড়াহুড়ো'র কারনে ভল্টের সব টাকা নিতে পারেনি। কাউন্টার থেকে যা নিয়ে গেছে তা মোটামুটি সবাই জানলেও ভল্ট থেকে কত নিয়েছে তা ঐ দু'জন ছাড়া কেউ জানে না।
ডাকাত সহকারী তার নেতাকে বলল - গুনলে ভাল হয় না? নেতা বলল - কষ্ট করে গুনবি কেন? বিকালে ব্রেকিং-নিউজেই জেনে যাবি কত টাকা ডাকাতি করেছি। বিকালের খবরে তারা জানতে পারল ঐ ব্যাংকে দেড় কোটি টাকা ডাকাতি হয়েছে। ডাকাতরা অবাক হয়ে টাকাগুলোর পরিমান দেখে সন্দেহ হল এখানে দেড় কোটি হতে পারে না। তারা তখন গুনতে শুরু করল, দেখল - পঞ্চাশ লাখ, আবার গুনল, আবার........ পঞ্চাশ লাখই। তখন বুঝতে পারল - তারা জীবনের ঝুকি নিয়ে, কত বুদ্ধি করে পঞ্চাশ লাখ ডাকাতি করল, আর ম্যানেজার এসি রুমে বসে আরামসে এক কোটি মেরে দিল?!?!?!
আমরা শুনছি বা.ব্যা'এ চুরি হয়েছে ৮০০ কোটি, কিন্তু যদি কৌতুকের মত হয়, আসলে চুরি হয়েছে ২০০ কোটি বা তারো কম। বাকি ৬০০ কোটি চলে গেছে ঐ কৌতুকের ঐ ম্যানেজার ও কাস্টডিয়ানের মত কারো থলেতে যা চোরদের নাম বলে চালিয়ে দেয়া গেছে।
দেখুন, টাকা চুরি কিভাবে হল তা'ই বের করতে সবাই গলদ-ঘর্ম হচ্ছে, অথচ যেদিন টাকা-চুরির ঘটনা সবাই জানল - সেদিনই সবাই জেনে গেল সেই টাকা ক্যাসিনোতে খরচ হয়ে গেছে। কি অদ্ভুৎ, না?!
কিছু টাকা হয়ত উদ্ধার হবে, বাকি টাকা কৌতুকের মত সব সময়ই ধরা-ছোয়ার বাইরে থেকে যাবে না তো!!!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:০৫